কলকাতা, 29 মার্চ : অস্ত্রোপচারের সময় হতে পারত মৃত্যু। মুখ বেঁকেও যেতে পারত। শেষ পর্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে অস্ত্রোপচারে রোগীর মস্তিষ্কের তলা থেকে পাখি মারার বন্দুকের একটি গুলি বের করলেন চিকিৎসকরা। জানা গেছে গুলিটি রোগীর উপরের ঠোঁট দিয়ে ঢুকে মুখের মাংসপেশি বরাবর গিয়ে কান এবং চোয়ালের মাঝখানে মস্তিষ্কের তলায় আটকে যায়। গতকাল সফল অস্ত্রোপচারটি হল NRS মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে।
শনিবার মালদার পাকুর থানার বাহিরগাছি গ্রামের বাসিন্দা বিভা মণ্ডল(30) আমবাগানে পাতা পরিষ্কার করছিলেন। সেই সময় সেখানে পাখি মারা হচ্ছিল। আচমকা পাখি মারার বন্দুকের গুলি তাঁর মুখে এসে লাগে। সোমবার NRS-এ সিটি স্ক্যান করে দেখা যায় গুলিটি আটকে রয়েছে মস্তিস্কের তলার অংশে। গতকাল সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে চলে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এই অস্ত্রোপচার।
কেন ঝুঁকিপূর্ণ ছিল এই অস্ত্রোপচার?
ENT বিভাগের চিকিৎসক মনোজ মুখোপাধ্যায় বলেন, "গুলিটি যেখানে আটকে ছিল, সেখানে মস্তিষ্কের ভেইন, আর্টারিগুলি রয়েছে। এগুলি অস্ত্রোপচারের সময় ক্ষতিগ্রস্ত হলে রোগীর মৃত্যু হতে পারত। গুলিটি যেখানে আটকে ছিল, সেখানে পৌঁছানো সহজ ছিল না। অস্ত্রোপচারে একটু এদিক-ওদিক হলে মৃত্যুর আশঙ্কা তো ছিলই, প্রাণে বেঁচে গেলেও রোগীর পঙ্গু হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও ছিল। এক্ষেত্রে রোগীর মুখও বেঁকে যেতে পারত।"
ভিডিয়োয় শুনুন রোগীর বক্তব্য এই অস্ত্রোপচার যাতে সফল হয় তার জন্য বিশেষ চিকিৎসাযন্ত্র অর্থাৎ সি-আর্ম মেশিনের প্রয়োজন ছিল। যা নেই NRS-এর ENT বিভাগের অপারেশন থিয়েটারে। অস্ত্রোপচারের সময় এই চিকিৎসাযন্ত্রের মাধ্যমে দেখে নেওয়া যায় অবস্থান। সেটি আনানোর জন্য আবেদন করা হলে শেষ পর্যন্ত ENT বিভাগের অপারেশন থিয়েটারের বদলে, অর্থপেডিক বিভাগের অধীনে থাকা ইমারজেন্সি সার্জারি অপারেশন থিয়েটারে গতকাল বিভা মণ্ডলের অস্ত্রোপচার হয়।
মনোজ মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে গতকাল এই অস্ত্রোপচারে চিকিৎসকদের দলে ছিলেন সিদ্ধার্থ দাস, অর্পিতা মহান্তি, শ্রেয়া ভার্মা, কেকা পাণ্ডে এবং সরোজিনী ডকাল।