কলকাতা, 14 জানুয়ারি : আগের অবস্থা ফিরিয়ে দেব ৷ বাগবাজারে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডে অসহায় মানুষকে সাহায্যের আশ্বাস মুখ্যমন্ত্রীর ৷ আজ বেলা 12টায় ঘটনাস্থানে গিয়ে সমস্ত কিছু পর্যবেক্ষণ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও শশী পাঁজা, পৌরবোর্ডের সদস্য অতীন ঘোষ ও পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা ৷ আপাতত ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের বাগবাজার মহিলা কলেজে থাকার ব্যবস্থা করা হবে বলেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ গতকাল ঘটনাস্থানে গিয়ে এলাকাবাসীর বিক্ষোভের মুখে পড়েন স্থানীয় কাউন্সিলর বাপী ঘোষ এবং রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা ৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আজ এবং শুক্রবার অগ্নিদগ্ধ এলাকা সাফসুতরো করা হবে। এরপর আবার সেখানে নতুনভাবে গৃহহীনদের জন্য বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হবে ৷ মুখ্যমন্ত্রী ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের সঙ্গে কথা বলার সঙ্গে উদ্বোধন কার্যালয়ের মহারাজদের সঙ্গেও কথা বলেন ৷
আগের অবস্থা ফিরিয়ে দেব, বাগবাজারে বললেন মুখ্যমন্ত্রী
বাগবাজারে ঘটনাস্থানে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ ক্ষতিগ্রস্তদের গৃহ নির্মাণের আশ্বাস দেন ৷ ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের আপাতত বাগবাজার মহিলা কলেজে থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করা হবে ৷
আগুনের তাণ্ডবে পুড়ে ছাই সাজানো সংসার ৷ আগুন নিভলে ছাই ঘাঁটছে মানুষ ৷ ইতিউতি ছড়িয়ে আছে ঘর-গেরস্থালির আধপোড়া টুকরো ৷ যেন সামনে পড়ে আছে বর্তমান-ইতিহাস ৷ ছাই, গরম ছাই জমা হয়েছে ৷ অনেকের আলমারিতে থাকা সোনা-রুপোর গয়নাও গ্রাস করেছে আগুন ৷ হাতড়ে হাতড়ে গলে যাওয়া সোনা-রুপোর দলা খুঁজে চলেছে অসহায় চোখগুলো ।চোখের সামনে এমন জতুগৃহ প্রত্যক্ষ করেনি এর আগে কেউ ৷
গতকাল বিধ্বংসী আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে বাগবাজার মহিলা কলেজ লাগোয়া বস্তির 135টি ঘর। সন্ধ্যা সাড়ে ছটা নাগাদ বাগবাজার মহিলা কলেজের সামনের ঝুপড়িতে ভয়াবহ আগুন লাগে ৷ প্রকট শব্দে পরপর পাঁচটি সিলিন্ডারে বিস্ফোরণ হয় ৷ সঙ্গে সঙ্গে আগুনের লেলিহান শিখা গ্রাস করে গোটা এলাকাকে ৷ ঘটনাস্থানে পৌঁছায় দমকলের 27টি ইঞ্জিন ৷ কিন্তু আগুন লাগার অনেক পরে দমকল আসে ৷ আর তাই ক্ষোভ বাড়ছে মানুষের মনে ৷ দমকল কর্মীদের উপর চড়াও হয় সাধারণ মানুষ ৷ বাসস্থান হারানো মানুষগুলি সকাল থেকেই মনে বিষাদ আর চোখে জল নিয়ে ছাই ও জলের মধ্যে খুঁজে চলেছে আগুনের হাত থেকে রেহাই পাওয়া জিনিসপত্র। কিন্তু, টিন, লোহা বাদ দিয়ে কিছুই প্রায় নেই তাঁদের। যাবতীয় আসবাবপত্র, গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র, সঞ্চিত টাকা, বইখাতা, জামাকাপড় সবই পুড়ে ছারখার হয়ে গিয়েছে। শুধুমাত্র পরনের জিনিসগুলিই রয়ে গিয়েছে একমাত্র সম্বল হিসেবে। বিষাদের সঙ্গে রয়েছে চরম ক্ষোভও। মাঝে মাঝেই ক্ষোভে ফেটে পড়ছেন তাঁরা। তাঁদের অভিযোগ, মায়ের বাড়ির অফিসেই প্রথম আগুন লাগে। সেখান থেকেই আগুন পড়ে বস্তিতে। আগুনের রোষানলে সর্বস্বান্ত হওয়ার পিছনে মহারাজদেরই দায়ি করছেন স্থানীয়রা। অভিযোগ, অন্যান্যবার আগুন লাগলে উপর থেকে মহারাজরা জল দেন। এবার প্রথমদিকে তা দেননি মহারাজরা।
আরও পড়ুন : মায়ের বাড়িতে তাপ, 27 ইঞ্জিনের চেষ্টায় শান্ত হল বাগবাজারের আগুন