কলকাতা, 23 জানুয়ারি :নেতাজির অন্তর্ধান রহস্যের এখনও কোনও কিনারা হয়নি । গঠন হয়েছে একাধিক কমিশন । তারপরও রয়েছে একাধিক প্রশ্ন ৷আজ নেতাজির 123 তম জন্মজয়ন্তীতে সেইসব নিয়ে নতুন করে অভিযোগ করলেন নেতাজি গবেষক চন্দ্রচূড় ঘোষ ৷ গুমনামি বাবাই নেতাজি দাবি করে তিনি বলেন, গুমনামি বাবার DNA টেস্টে ফরেনসিক জালিয়াতি হয়েছিল ৷
নেতাজি এই গবেষক বলেন, গুমনামি বাবার ফৈজাবাদের আশ্রম থেকে পাওয়া গেছিল একটি চিঠি । সঙ্গে পাওয়া গেছিল সাতটি দাঁত । মুখার্জি কমিশন সেই চিঠি হ্যান্ড রাইটিং বিশেষজ্ঞ দিয়ে পরীক্ষা করিয়েছিল । আর হয়েছিল দাঁতের ফরেনসিক টেস্ট । সেই টেস্টে “ফরেনসিক ফ্রড" হয়েছিল বলে তিনি দাবি করলেন । তাঁর দাবি, ওই চিঠিটি একজন নিরপেক্ষ ভারতীয় হ্যান্ড রাইটিং বিশেষজ্ঞ এবং বিদেশের বিশেষজ্ঞকে দিয়ে পরীক্ষা করিয়েছিলেন তাঁরা । তাতে জানা যায়, গুমনামি বাবার হাতের লেখা এবং নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর হাতে লেখা এক ।
DNA টেস্টে ফরেনসিক জালিয়াতি হয়েছিল, দাবি নেতাজি গবেষকের নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর অন্তর্ধান রহস্যের কিনারায় গঠন হয়েছে একাধিক কমিশন । সেইসব কমিশনের কার্যকলাপ এবং তাদের বিভিন্ন জায়গায় যাওয়া নিয়ে তৈরি হয়েছে নানা প্রশ্ন । নেতাজি গবেষকদের অনেকের দাবি, বিচারপতি মুখার্জিকে তাইওয়ানে যেতে দেওয়া হয়নি । তাই সেখানে গিয়ে বিমান দুর্ঘটনার বিষয়টি নিয়ে কোনও তদন্ত করতে পারেনি কমিশন । অভিযোগ, তৎকালীন কেন্দ্রীয় সরকার মুখার্জি কমিশনকে তাইওয়ানে যাওয়ার অনুমতি দেয়নি । এরকম নানা ধরনের বিতর্ক রয়েছে । নেতাজি গবেষকদের একাংশের মত হল, উত্তরপ্রদেশের ফৈজাবাদের গুমনামি বাবাই নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু । যদিও বিষয়টিকে অস্বীকার করেছে নেতাজির পরিবার ।
গবেষক চন্দ্রচূড় ঘোষের দাবি, বিচারপতি মুখার্জি ফৈজাবাদের গুমনামি বাবার বিষয়টি নিয়েও তদন্ত করেন । আশ্রম থেকে পাওয়া চিঠি এবং দাঁতের ফরেনসিক টেস্ট হয় । বিচারপতি মুখার্জি চিঠির ক্ষেত্রে একজন নিরপেক্ষ হ্যান্ড রাইটিং বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়েছিলেন । তিনি খুব ভালো করে রিপোর্ট দেন । জানিয়ে দেন ওই হাতের লেখা নেতাজিরই । পরে সরকারিভাবে পরীক্ষা করা হয় । যদিও সেখানে একটা অন্য পরামর্শ এসেছিল । যেখানে কোনও বিস্তারিত বিবরণ ছিল না । কোনও সাক্ষ্য-প্রমাণের কথাও বলা হয়নি । সেটি একপ্রকার দায়সারা রিপোর্ট ছিল বলে নেতাজি এই গবেষকের দাবি। দাঁতগুলোর DNA টেস্ট করা হয়েছিল হায়দরাবাদের CDFD( সেন্টার ফর DNA ফিঙ্গারপ্রিন্টিং এন্ড ডায়াগনস্টিকস) থেকে । সেখানকার বিজ্ঞানীরা মুখার্জি কমিশনকে জানিয়েছিলেন, ওই দাঁতে যথেষ্ট পরিমাণ DNA পাওয়া যায়নি । তাই বলা যাচ্ছে না DNA নেতাজির কি না । তখন সেটি পাঠানো হয় কলকাতার সেন্ট্রাল ফরেনসিক ল্যাবরেটরিতে । নেতাজির আত্মীয়দের সঙ্গে DNA-র তুলনা করে ওই রিপোর্টেও বলা হয়, কোনও মিল পাওয়া যায়নি । সেই কারণেই বিচারপতি মুখার্জি তাঁর রিপোর্টে গুমনামি বাবাই যে নেতাজি তা লিখতে পারেননি ।
এই প্রসঙ্গে চন্দ্রচূড়বাবু অভিযোগ, ফরেনসিক পরীক্ষার সময় জালিয়াতি হয়েছিল ৷ বিচারপতি মুখার্জি সেটা জানতেন । তাই তিনি পরে অফ দা রেকর্ড অন ক্যামেরা বলেছিলেন, "আমি 100% নিশ্চিত যে গুমনামি বাবাই নেতাজি । কিন্তু রিপোর্টে তার উল্লেখ না থাকায় তা প্রমাণ করা যায়নি ।"