পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / city

লক্ষ্মীপুজোর একদিন শুধু, বেনাগ্রামে আর ফিরবেন না বাসিন্দারা !

কুলটি থানার নিয়ামতপুর শহর থেকে মাত্র দু কিলোমিটার দূরে বেনাগ্রাম । নিয়ামতপুর নিউ রোড থেকে চিত্তরঞ্জন যাওয়ার রাস্তার পাশে পড়ে । শহরের কাছে, তবু উন্নয়নের আলো নেই ! 2005 সালে গ্রামবাসীরা গ্রাম ছেড়ে চলে যান ।

asansol-benagram-laxmi-puja
asansol-benagram-laxmi-puja

By

Published : Oct 30, 2020, 8:28 PM IST

Updated : Oct 30, 2020, 11:00 PM IST

30 অক্টোবর: পাকা বাড়ি, বাঁধানো পুকুরঘাট, গ্রামের মাঝে মন্দির । একদা সবকিছুই ছিল । ছিল ব্যস্ত জনপদ । কিন্তু 2005 সালে হঠাৎই গ্রামের লোকেরা গ্রাম ছেড়ে উধাও হয় । গুজব ছড়ায়, ভূতের ভয় গ্রাম ছেড়েছে বেনাগ্রামের মানুষ । যদিও গ্রামবাসীরা তা মানতে চাননি । তাদের দাবি, ছিল অনুন্নয়নের কারণেই তারা গ্রামছাড়া হয়েছিলেন । তবে, আজও বছরে একদিন ফিরে আসেন গ্রামে । কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর দিন । পুজো শেষ হলেই গ্রাম ছেড়ে চলে যান বাসিন্দারা ।

নিয়ামতপুর শহর থেকে দু কিলোমিটার দূরে বেনাগ্রাম ।

কুলটি থানার নিয়ামতপুর শহর থেকে মাত্র দু কিলোমিটার দূরে বেনাগ্রাম । নিয়ামতপুর নিউ রোড থেকে চিত্তরঞ্জন যাওয়ার রাস্তার পাশে পড়ে । শহরের কাছে, তবু উন্নয়নের আলো নেই ! 2005 সালে গ্রামবাসীরা গ্রাম ছেড়ে চলে যান । গ্রামবাসীদের দাবি, এলাকায় ছিল না রাস্তাঘাট, পানীয় জল, বিদ্যুৎ । তাছাড়া গ্রামের পাশ দিয়েই গেছে রেললাইন । তার জন্য রাতে ওয়াগন ব্রেকারদের দৌরাত্ম্য । অর্থাৎ, নিরাপত্তা ও উন্নয়নের অভাবে গ্রাম ছাড়েন গ্রামের বাসিন্দারা । নিজেদের বাস্তুভিটে ছেড়ে কুলটির বিভিন্ন এলাকায় বাসা বাঁধেন বেনাগ্রামের বাসিন্দারা ৷ গ্রাম হয়ে যায় জনশূন্য । গুজব ছড়ায়, ভূতের ভয়ে গ্রাম ছেড়েছে বেনাগ্রামের মানুষ ৷

বেনগ্রামে আর ফিরবেন না বাসিন্দারা !

বেনাগ্রামের পুরোনো বাসিন্দা সুবোধ মাঝি বলেন, "গ্রামে রাস্তা নেই, আলো নেই, জল নেই, কেউ অসুস্থ হলে চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই ৷ কেউ কি সাধ করে ভিটে ছাড়ে ৷ "

সঙ্গীতা মাঝি বলেন, "ভূতটুত বাজে কথা ৷ অনুন্নয়নের কারণেই গ্রাম ছেড়েছি আমারা ৷ শুধু লক্ষ্মীপুজোর দিন আসি ৷ আনন্দ করি ৷"

গ্রামের মাঝেই রয়েছে একটি লক্ষ্মী মন্দির । যেখানে বছরে একবার লক্ষ্মীপুজোর দিন গ্রামে ফেরে গ্রামের মানুষ ৷ সেদিন জেনারেটরে আলো জ্বলে । ভোগ রান্না হয় । গ্রামবাসীরা সারা দিন-রাত লক্ষ্মীপুজোর আনন্দে মাতেন । পরদিন সকালে ঠাকুর ভাসান দিয়ে আবার গ্রাম ছেড়ে চলে যান ৷ বিষয়টি জানাজানি হতে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন । গ্রামবাসীদের দাবি মতো তৈরি হয় রাস্তা । গ্রামে পানীয় জল ও আলোর ব্যবস্থার জন্য বিদ্যুতের খুঁটি বসে তৎকালীন বিধায়ক মানিকলাল আচার্যের উদ্যোগে ৷ যদিও গ্রামের মানুষ আর ফেরেনি । আসানসোলের প্রাক্তন মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারীও গ্রামে এসে কথা দিয়েছিলেন, গ্রামবাসীরা যদি ফিরতে চান তাহলে সমস্ত নাগরিক পরিষেবার ব্যবস্থা করা হবে । কিন্তু, গ্রামের মানুষরা আর ফিরতে চাননি ।

গ্রামবাসীরা জানান, অনেকেই অন্য এলাকায় বাড়ি করে ফেলেছেন ৷ তাঁদের পক্ষে ফেরা সম্ভব না । তবু তো শিকড়ের টান ! কেউ কেউ ফিরতেও চান ৷ কিন্তু কী এক রহস্যময় কারণে কিছুতেই ফেরা হয় না !

Last Updated : Oct 30, 2020, 11:00 PM IST

ABOUT THE AUTHOR

...view details