বেঙ্গালুরু, 1 মে : দীর্ঘমেয়াদি লকডাউন নিয়ে ইতিমধ্যেই আলোচনা শুরু হয়েছে অর্থনীতি বিশেষজ্ঞমহলে । ভারতের অর্থনীতিতে লকডাউনের প্রভাবের ফল সুদূরপ্রসারী তার ইঙ্গিত আগেই দিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা । যদিও প্রধানমন্ত্রী এবং কেন্দ্রের তরফে বারবার দাবি করা হয়েছে, অর্থনীতি স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে । অর্থনীতি সচল রাখছে কেন্দ্র । কিন্তু তাদের পদক্ষেপ সেই প্রমাণ দিচ্ছে না বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা । প্যানডেমিকের কারণে মৃত্যুর তুলনায় অনাহারে অনেক বেশি সংখ্যক মৃত্যুর সাক্ষী থাকবে ভারত বলে আজ জানান ইনফোসিস কর্ণধার । এনআর নারায়ণ মূর্তি গতকাল একটি ওয়েব সেমিনারে এই বিষয়ে আলোচনা করেন ।
ইনফোসিস কর্ণধার নারায়ণ মূর্তি গতকাল সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করার সময় বলেন, অসুস্থদের নিরাপদে রেখে সক্ষমদের কাজে আবার যোগ দেওয়ার ব্যবস্থা করা উচিত ।
গতকাল বিশিষ্ট শিল্পপতিদের সঙ্গে ওয়েব সেমিনারে (ইটি আনউয়ার্ড-রিমেনিং বিজ়নেস) আলোচনা হয় নারায়ণজির । তিনি ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে বলেন, “ভারতে এই পরিস্থিতি দীর্ঘদিন চলতে পারে না আমাদের সেই বিষয়ে বোঝা সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ । নয়তো একসময় গিয়ে দেখা যাবে, ভারতে কোরোনা আক্রান্তের মৃত্যুর সংখ্যার তুলনায় অনাহারে মৃত্যুর সংখ্যা বেশি দাঁড়াবে । উন্নত দেশগুলির তুলনায় ভারতের মৃত্যুর হার অনেক কম ।”
ভারতে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছে । কয়েকটি অঞ্চলে ভাইরাসের লকডাউনের কারণে ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে পেরেছে । 3 মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে লকডাউনের মেয়াদ । 30 জানুয়ারি ভারতে প্রথম কোরোনা আক্রান্ত হয় । এখনও পর্যন্ত 30 হাজারের বেশি কোরোনা আক্রান্ত এবং 1,008জনের মৃত্যু হয়েছে ।
প্রতিবছর ভারতে 90 লাখ মানুষের মৃত্যু হয় । বেশিরভাগেরই মৃত্যুর কারণ দূষণ । কারণ ভারত বিশ্বে সবথেকে বেশি দূষিত দেশগুলির মধ্যে একটি বলেও উল্লেখ করেন নারায়ণ মুরতি । তিনি বলেন, “প্রতিবছর 90 লাখ মানুষ এমনিই মারা যান । এবং গত দুমাসে কোরোনা আক্রান্ত হয়ে 1000জন মারা গিয়েছেন । আপনারা তুলনা করে দেখুন । অবশ্যই আমরা যতটা আতঙ্কিত হচ্ছি, ততটা হওয়ারও কোনও কারণ নেই ।”
1 কোটি 90 লাখের বেশি নাগরিক নয়তো ইনফর্ম্যাল সেক্টরের সঙ্গে যুক্ত নয়তো সেল্ফ-এমপ্লয়েড । যা প্রমাণ করে জনসংখ্যার একাংশের লকডাউনের কারণে উপার্জন বন্ধ । যদি এই লকডাউনের মেয়াদ বাড়ে আরও মানুষের জীবিকা বন্ধ হয়ে যাবে । ব্যবসাই 15 থেকে 20 শতাংশ রেভিনিউ হারিয়েছে । যা সরকারের কর-আদায় প্রক্রিয়ায় প্রভাব ফেলবে বলে উল্লেখ করেন নারায়ণ মূর্তি ।
দেশে বাড়াতে হবে টেস্টিং-র হার । নারায়ণ মূর্তি এই বিষয়ে বলেন "ভারতে এখনও টেস্টিং-র হার কম । সারা বিশ্বে যখন প্রতিষেধক আবিষ্কারের চেষ্টা চলছে, সেইক্ষেত্রে এই বিষয় এখনও স্পষ্ট নয় ভারতের নাগরিকরা ভাইরাসের বিরুদ্ধে জিনগত ভাবে লড়াইয়ের ক্ষমতা তৈরি করে ফেলেছেন কি না । কোরোনা ভাইরাসকে জীবনের সাধারণ অঙ্গ হিসেবেই ধরে এগোতে হবে ।"