দিল্লি, 17 সেপ্টেম্বর : চলছে সংসদের বাদল অধিবেশন । আজ চতুর্থ দিন । এবারের বাদল অধিবেশনে সবমিলিয়ে মোট 45 টি বিল ও 2 টি অর্থকরী বিষয় নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা । দিনের শুরুটা ভালোই হয়েছিল কেন্দ্রের । প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন বলে কথা । দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসতে শুরু করেছিল শুভেচ্ছাবার্তা । কিন্তু বেলা গড়াতে না গড়াতেই হঠাৎ ছন্দপতন । কেন্দ্রের আনা কৃষি সংক্রান্ত বিলগুলি কৃষকদের স্বার্থের পরিপন্থী বলে বসলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীই । এই কৃষক বিরোধী বিলের কারণেই মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরসিমরত কউর বাদল । এত সবকিছুর মধ্যেই লোকসভায় ধ্বনিভোটের মাধ্যমে পাশ হল কৃষি বিল ।
কৃষি সংক্রান্ত বিলগুলি সবে ঘোষণা হয়েছে । বিলের পক্ষে-বিপক্ষে ভোটাভুটি শুরু হওয়ার মুহূর্তে । রাহুল গান্ধি ও অন্যান্য বিরোধী দলের নেতারা তখন বিলের বিরোধীতা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন । আর ঠিক সেই সময়েই কেন্দ্রের বিড়ম্বনা শতগুণে বাড়িয়ে এই বিলগুলিকে কৃষক স্বার্থের পরিপন্থী বলে বসলেন শিরোমণি আকালি দলের নেত্রী তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরসিমরত কউর বাদল ।
এ দিন সংসদে বিলগুলির ঘোষণা করার পরেই হরসিমরতের স্বামী এবং অকালি দলের প্রধান সুখবীর বাদল বলেন, " কৃষি ক্ষেত্রে পঞ্জাব সরকারের 50 বছরের অক্লান্ত পরিশ্রম এই প্রস্তাবিত বিল ধ্বংস করবে ৷" প্রসঙ্গত, বিগত প্রায় কয়েক সপ্তাহ ধরেই পঞ্জাব ও হরিয়াণায় "কৃষক বিরোধী" এই বিলগুলির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ চলছিল ।
BJP-র তরফে বলা হয়, বিলগুলি কৃষিক্ষেত্রে বড়-সড় আকারের সংস্কার নিয়ে আসবে । আকালি দল শুরুতে এই বিলের সমর্থনেই ছিল । কিন্তু পঞ্জাবে বাড়তে থাকা প্রতিবাদের জেরে বিলটি আপাতত স্থগিত রাখার জন্য কেন্দ্রকে আবেদন করেছিল আকালি দল । কিন্তু কেন্দ্র সংসদে এই বিলগুলি পেশ করার সিদ্ধান্ত থেকে পিছপা হয় না । এই কারণে নিজেদের সমর্থন তুলে নিতে বাধ্য হল আকালি দল । সুখবীর বাদল এই কৃষিসংক্রান্ত বিলগুলিকে কৃষক বিরোধী বলে আখ্যা দেন । তবে সরকার থেকে বেরিয়ে এলেও, আকালি দল বাইরে থেকে সরকারকে সমর্থন করে যাবে বলে জানান সুখবীর বাদল ।
আরও পড়ুন :কেন্দ্রের কৃষি বিলের বিরোধিতা, মন্ত্রীত্ব থেকে পদত্যাগ হরসিমরত কউরের
এদিকে পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং হরসিমরত কউর বাদলের এই পদত্যাগকে সেভাবে গুরুত্ব দিতে নারাজ ৷ তিনি এই পদত্যাগকে গিমিক বলে উল্লেখ করেছেন । বলেছেন, "পাঞ্জাবের কৃষকদের বোকা বানানোর কৌশল" ৷ অমরেন্দ্র সিংয়ের কথায়, "কৃষকদের প্রতি কোনও সমবেদনা থেকে এই পদত্যাগ করা হয়নি ৷ এর পিছনে নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির উদ্দেশ্য লুকিয়ে আছে ৷"
কংগ্রেস, তৃণমূল, আম আদমি পার্টি-সহ অন্যান্য বিরোধী দলগুলির এই কৃষি বিলের তীব্র বিরোধীতা করেছে । তাদের তরফে বারবার যেটা বলা হয়, সরকারের এই বিল মানলে খাদ্য সুরক্ষার শৃঙ্খল একেবারেই নষ্ট হয়ে যাবে, যা আদতে কৃষকদের ক্ষতি করবে । কৃষিজাত পণ্যের উপর থেকে কৃষকদের অধিকার হ্রাস পাবে বলে আশঙ্কা করেছে বিরোধীরা ।