পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / briefs

PSC-র সামনে বিক্ষোভ জুনিয়র ইঞ্জিনিয়রদের, কাল দ্বারস্থ হচ্ছেন হাইকোর্টের

গত 17 জুন PSC 2053 জনকে সিলেকশনের জন্য ডাকে । তার মধ্যে 120 জনকে রেকমেনডেশন দেওয়া হয় । আর এই কারণেই বিক্ষোভ জুনিয়র ইঞ্জিনিয়রদের ।

বিক্ষোভ জুনিয়র ইঞ্জিনিয়রদের

By

Published : Jun 25, 2019, 1:11 PM IST

Updated : Jun 26, 2019, 9:01 AM IST

কলকাতা, 25 জুন: জুনিয়র ইঞ্জিনিয়র ইলেকট্রিক‍্যাল ব্রাঞ্চে 120 জনকে নিয়োগ করার জন্য 2053 জনকে কেন ইন্টারভিউতে ডাকা হল? এই প্রশ্ন তুলে আজ পশ্চিমবঙ্গ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের(PSC) সামনে অবস্থান বিক্ষোভ করছেন জুনিয়র ইঞ্জিনিয়র চাকরিপ্রার্থীরা । আজ বেলা 12টা নাগাদ বিক্ষোভ দেখান তাঁরা । তাঁদের দাবি, চলতি বছর 17 জুন জুনিয়ার ইঞ্জিনিয়র ইলেকট্রিক্যাল ব্রাঞ্চে নিয়োগের জন্য প্রকাশিত সুপারিশ তালিকা বাতিল করতে হবে । লিখিত পরীক্ষায় সফল 2053 জনের উপর ভিত্তি করে 3:1 রেশিও মেনে নতুন প‍্যানেল প্রকাশ করতে হবে । ইতিমধ্যেই তাঁদের দাবিদাওয়া নিয়ে PSC-র চেয়ারপার্সনের কাছে গেছেন আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে চার সদস্যের প্রতিনিধি দল। দাবি না মানলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন তাঁরা ।

জুনিয়র ইঞ্জিনিয়রদের দাবি নিয়ে PSC দুর্নীতিমুক্ত মঞ্চের পক্ষ থেকে ইন্দ্রজিৎ ঘোষ বলেন, " PSC-র বিভিন্ন পরীক্ষায় অনিয়ম চলছে। WBCS থেকে PSC যে শেষ পরীক্ষা নিয়েছিল সব ক্ষেত্রেই‌ চিত্রটা এক । PSC পূর্ত দপ্তরে ইঞ্জিনিয়র নিয়োগের জন্য নোটিফিকেশন প্রকাশ করেছিল 2017 সালে। 2018 সালে পরীক্ষা হয় । লিখিত পরীক্ষার পরে ইন্টারভিউ হয় । ইন্টারভিউ চলেছে 2018 সালের ডিসেম্বর মাস থেকে 2019 সালের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত। ইন্টারভিউয়ের পরে 17 জুন একটি তালিকা প্রকাশ করে PSC । লিখিত পরীক্ষায় পাশ করার পরে PSC, 2053 জনের একটা তালিকা প্রকাশ করে । তাদের সবার ইন্টারভিউও নেওয়া হয় । তারপরে দেখা যাচ্ছে নিয়োগ করা হয়েছে 120 জনকে ।"

তিনি আরও বলেন, "এর আগে 3:1 অনুপাতে ডাকা হত ও ইন্টারভিউ নেওয়া হত । এখনও 2053 জনকে ইন্টারভিউ ডাকা হয়েছে । সেক্ষেত্রে বিভিন্ন ক‍্যাটাগরি অনুযায়ী লিস্ট প্রকাশ করলেও 700 থেকে 650 জনের চাকরি পাওয়ার কথা‌। সেখানে মাত্র 120 জন চাকরি পেয়েছেন। 120 জনকে চাকরি দিতে হলে 360 জনকে ডাকতে হত । তাহলে 2053 জনকে কেন ডাকা হয়েছিল? আসলে যে কারণে 2053 জনকে ডাকা হয়েছিল তা হল, ভ‍্যাকেন্সি ছিল । রাজ‍্য সরকারের সেই ভ‍্যাকেন্সি কোথায় গেল? কাটমানি হয়ে গেল কিনা তা বলতে পারছি না । বিষয়টা আমাদের কাছে স্পষ্ট। যে ভ‍্যাকেন্সি ঘোষণা করা হয়েছিল, পরীক্ষা হয়েছিল, ইন্টারভিউ হয়েছিল, সেই অনুযায়ী নিয়োগ করতে হবে । টোটাল প‍্যানেলটা PDF-এ প্রকাশ করতে হবে, উত্তর কী প্রকাশ করতে হবে ।" তাঁর বক্তব্য, "PSC দুর্নীতিমুক্ত মঞ্চের সঙ্গে ইঞ্জিনিয়রিং পাশ করা ছেলেরা আছে । একটাই দাবি, নির্দিষ্ট ভ্যাকেন্সিতে নিয়োগ করার জন্য আমাদের লড়াই চলবে । যদি আমরা সদুত্তর না পাই তাহলে আরও বৃহত্তর আন্দোলন হবে । শুধু রাস্তায় নয় দরকার হলে আদালতেও যাওয়া হবে । বেকার ছেলেদের কোনওভাবে বঞ্চিত করা যাবে না ।"

প্রকাশিত প্যানেল বাতিলের দাবি সহ মোট 9 দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি চেয়ারম্যানের কাছে পেশ করা হয়। এই দাবিগুলো হল, JEE, WBCS এবং অন্যান্য পরীক্ষার শূন্যপদের সংখ্যা গেজেটে প্রকাশ করতে হবে । প্রতিটি পরীক্ষার এক মাসের মধ্যে অ্যানসার কী প্রকাশ করতে হবে । পরীক্ষা প্রক্রিয়ার প্রতিটি স্তরের প্রতিটি পেপারের ইন্ডিভিজুয়াল নম্বর ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে । প্রতিটি পরীক্ষার প্রক্রিয়া এক বছরের মধ্যে সম্পূর্ণ করতে হবে । কী লজিকে 2053 জন চাকরিপ্রার্থীর ইন্টারভিউ নেওয়ার পর মাত্র 120 জনকে ফাইনাল রেকমেন্ডেশন দেওয়া হল? এই প্রশ্নের উত্তরও দাবি করছেন বিক্ষোভকারীরা। পাশাপাশি পাবলিক সার্ভিস কমিশনের চেয়ারপার্সন পদে IAS বা WBCS অফিসারদের নিয়োগ করতে হবে । এছাড়া, আরও বেশ কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর দাবি করছেন বিক্ষোভকারীরা ।

যদিও, দু'দফায় PSC-র চেয়ারপার্সনের সঙ্গে আলোচনা করে মেটেনি তাঁদের কোনও দাবি । উলটে "এখানে কিছু হবে না, তোমরা ফোরামের কাছে যেতে চাইলে যাও " এই কথা বলেন চেয়ারপার্সন । তারপর পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির উদ্দেশে মিছিল শুরু করে দেন আন্দোলনকারীরা । কিন্তু, পুলিশ মিছিল আটকে দিতে আজকের মত আন্দোলন কর্মসূচি শেষ করতে কার্যত বাধ্য হন তাঁরা ।

PSC দুর্নীতিমুক্ত মঞ্চের পক্ষ থেকে ইন্দ্রজিৎ ঘোষ বলেন, " আমরা এরাজ‍্যে দেখেছি মিছিল করতে গেলে অনেক সময় অনেকেই অনুমতি পান না । আজ পুলিশ আমাদের বলছে যে আমাদের অনুমতি নেই । আমাদের মিছিলটাকে বন্ধ করেছে । কিন্তু, এটা সত্যি যে রাজ্যের প্রশাসন যে অবস্থাতে আছে, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নিজে বলছেন কাটমানির কথা । আর আজকে আমরা দেখলাম সরাসরি PSC-তে দুর্নীতি হচ্ছে । ওনারা যদি মনে করেন আমাদের মিছিলটা রুখে দিয়ে সব জিনিস হয়ে যাবে, সেটা হবে না । আমরা বৃহস্পতিবার আদালতে কাছে যাব । আদালতের মাধ্যমেই বিচার চাইব । এরপরে বড় আন্দোলন করার জন্য অনুমতি নিয়েই রাজ্যপালের কাছে বা নবান্ন অভিযান করব । আজ মিছিলটা আটকেছে । এটা ঠিকই যে জোর করে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে আন্দোলন আমরা করতেই পারতাম । কিন্তু, আমরা মনে করি যে ইঞ্জিনিয়র ছেলে-মেয়েরা আছেন । কেন তাঁরা এই জায়গায় যাচ্ছে, কেন তাঁদের ব্যারিকেড ভাঙতে হবে, মুখ‍্যমন্ত্রীর কাছে এটুকু খবর আছে নিশ্চই । তাতে উনি ব্যবস্থা নিলেই ভালো । আজকের দিনে এই পর্যন্তই । ব্যারিকেড ভেঙে, রাস্তা অবরোধ করে ভাঙচুর করা, এটা কোনও সমাধান নয় । আমাদের ইঞ্জিনিয়ররা হিংসা বাধাতে চায় না । রাজ‍্য গড়তে চায় ।"

Last Updated : Jun 26, 2019, 9:01 AM IST

ABOUT THE AUTHOR

...view details