কলকাতা, 1 ফেব্রুয়ারি : রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের বিরুদ্ধে ফের নালিশ জানাল তৃণমূল কংগ্রেস ৷ এবার তাদের তরফে নালিশ জানানো হল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে (tmc complaints against dhankar to pm modi) ৷ মঙ্গলবার সংসদে বাজেট অধিবেশন চলাকালীন এই নালিশের পালা চলে বলে জানিয়েছেন সাংসদ সৌগত রায় ৷
সোমবার সংসদে বাজেট অধিবেশন শুরু হয়েছে (Budget Session 2022 Begins in Parliament) ৷ প্রথমদিন প্রথামাফিক ভাষণ দেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ (President Ramnath Kovind) ৷ ভাষণের শেষে তিনি সাংসদদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন ৷ সেই সময় লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় রাষ্ট্রপতির কাছে ধনকড়কে অপসারণের নালিশ জানান ৷ পরে সে কথা সংবাদমাধ্যমকে বলেন তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় (TMC MP Sudip Banerjee) ৷
আজ, মঙ্গলবার ছিল সংসদের বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় দিন ৷ এদিন সংসদে 2022-23 অর্থবর্ষের জন্য বাজেট পেশ করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন (FM Nirmala Sitharaman tabled Budget 2022) ৷ তার পর সাংসদদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Prime Minister Narendra Modi) ৷ সেই সময়ই তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় মোদির কাছে রাজ্যপালের অপসারণের দাবি তোলেন ৷ অন্তত সৌগত রায়ের তেমনই দাবি ৷
তাঁর কথায়, ‘‘বাজেট বিবৃতির পর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা হয় আমার । তিনি ঘুরে ঘুরে সবার সঙ্গে দেখা করেছিলেন । আমার সঙ্গে প্রথম কুশল বিনিময় করলেন তিনি । আমি ওকে বললাম, আপনি পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালকে সরিয়ে নিন ।’’ কেন রাজ্যপালকে সরিয়ে দেওয়া উচিত সেই ব্যাখ্যাও নাকি প্রধানমন্ত্রীর কাছে করেছেন সৌগত ৷ দমদমের সাংসদের দাবি, ‘‘আমি বলেছিলাম, রাজ্যপালকে সরানো দরকার, তা না হলে রাজ্যে শাসন চালানো অসম্ভব হচ্ছে ।’’
প্রসঙ্গত, সোমবার ধনকড়কে সরানো সংক্রান্ত নালিশ শুনে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ কী প্রতিক্রিয়া দিয়েছিলেন, তা জানা যায়নি ৷ কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নাকি এর উত্তর দেন ৷ সৌগত রায় এদিন সংবাদমাধ্যমের কাছে সেটাই দাবি করেছেন ৷ তাঁর দাবি, ‘‘প্রধানমন্ত্রী বললেন, আপনি অবসর নিলে তারপর ওকে সরাব । উনি হেসে ব্যাপারটাও উড়িয়ে দিলেন ভাবটা এমন যেন আমি অবসর নিলে আমাকে রাজ্যপাল করা যেতে পারে ।’’
2019-এর মাঝামাঝি পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালের পদে আসেন জগদীপ ধনকড় ৷ তার পর সময় যত এগিয়েছে, ততই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের সঙ্গে রাজ্যপালের সংঘাত বেড়েছে ৷ বিভিন্ন ইস্যুতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনায় সরব হয়েছেন রাজ্যপাল ৷ তৃণমূলও পালটা সমালোচনা করেছে ৷
কিন্তু কয়েকদিন আগে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে আক্রমণের ধার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় ঘাসফুল শিবির ৷ সংসদে রাজ্যপালকে অপসারণের প্রস্তাব আনার ভাবনাচিন্তা শুরু হয় বাংলার শাসক শিবিরে ৷ পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভাতেও রাজ্যপালের বিরুদ্ধে আসতে পারে নিন্দা প্রস্তাব ৷ এরই মধ্যে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে মৌখিক নালিশ করল তৃণমূল ৷ একই সঙ্গে টুইটারে রাজ্যপালকে ব্লক করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ৷
এদিকে এই নিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, রাজ্যপালকে নিয়ে তৃণমূল যা করছে, তা গণতন্ত্রের জন্য শোভন নয় । প্রথমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যপালকে ব্লক করলেন ৷ এরপর একে একে অন্যেরা ব্লক করতে শুরু করলেন । প্রথমে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় রাষ্ট্রপতিকে নালিশ করলেন, এবার সৌগত রায় প্রধানমন্ত্রীকে নালিশ জানানোর চেষ্টা করলেন । প্রধানমন্ত্রী যখন কুশল বিনিময় করছেন, তখন এভাবে রাজ্যপাল নিয়ে তাঁকে নালিশ জানানো কতটা সৌজন্যের, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছে ।
আরও পড়ুন :TMC on Dhankhar : ধনকড়কে সরান, সেন্ট্রাল হলে রাষ্ট্রপতিকে আর্জি সুদীপের