লখনউ, 20 এপ্রিল : বর্তমান পরিস্থিতিতে উত্তরপ্রদেশ সরকারের সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ হল অক্সিজেন তৈরি করা ৷ যা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত মানুষকে বাঁচানোর জন্য সব থেকে জরুরি । সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালে যাতে অক্সিজেন সহজে পাওয়া যায়, সে ব্যবস্থা করতে হবে । অক্সিজেন সিলিন্ডারের জন্য সাধারণ মানুষে এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে ঘুরে বেরাচ্ছেন । এর সুযোগ নিচ্ছে অবৈধ ব্যবসায়ীরা । কালোবাজারে অক্সিজেন সিলিন্ডার বিক্রি করা হচ্ছে । সাধারণ মানুষ বাজার থেকে সরকার নির্ধারিত দামের থেকে অনেক বেশি দামে অক্সিজেন কিনতে বাধ্য হচ্ছেন । রাজ্যে করোনা সংক্রমণ দ্রুত হারে বাড়ছে ৷ গত 24 ঘণ্টায় রাজ্য জুড়ে 30 হাজারের বেশি পজিটিভ কেস পাওয়া গিয়েছে ।
বিপুল সংখ্যক করোনা আক্রান্ত হওয়ার ফলে রাজ্যের স্বাস্থ্যব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়ছে । প্রতিটি হাসপাতালে রোগীদের ক্রমবর্ধমান সংখ্যা চোখে পড়ছে । কিন্তু, নতুন রোগী ভর্তি করার জন্য হাসপাতালগুলিতে কোনও খালি বেড নেই । আবার যেখানে সামান্য কিছু বেড রয়েছে, সেখানে অক্সিজেন নেই । অক্সিজেনের অভাবে অনেকে মারাও যাচ্ছেন । এই অবস্থা কেবল রাজধানী লখনউতেই নয়, গোটা রাজ্যজুড়ে । কোভিড 19-এর সঙ্গে যুদ্ধে পরাজিতদের এবং আক্রান্তদের পরিবারের হাহাকার রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং সরকারের স্বাস্থ্য পরিষেবার করুণ ছবিটাকে সামনে আনছে । যদিও জনগণের অসচেতনতা ক্রমবর্ধমান করোনা সংক্রমণের জন্য দায়ী, কিন্তু তাও সরকারি ব্যবস্থার ক্রটিকে কোনওভাবেই অস্বীকার করা যায় না । গোটা মন্ত্রিসভা পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ু, কেরালা-সহ পাঁচ রাজ্যের ভোটের প্রচারে ব্যস্ত, আর সাধারণ মানুষ চিকিৎসার অভাবে প্রাণ হারাচ্ছেন ।
অক্সিজেন সঙ্কট
রাজধানী লখনউতে করোনা দিনদিন ভয়ঙ্কর আকার নিচ্ছে । আতঙ্ক ছড়াচ্ছে । কোভিড হাসপাতালগুলির বেশির ভাগেরই বেড ভর্তি । অক্সিজেনের অভাবের জন্য বাড়িতে থেকে চিকিৎসা করা রোগীদের অবস্থা খারাপ হচ্ছে । শহরের অক্সিজেন প্ল্যান্টটি প্রতিদিন 4500টি সিলিন্ডার ভর্তি করতে পারে । যেখানে প্রতিদিন চাহিদা বেড়ে দাঁড়িয়েছে সাড়ে পাঁচ হাজারে । গত 24 ঘণ্টায় শুধু মাত্র লখলউতে 5551টি পজিটিভ কেস সামনে এসেছে । এবং প্রাণ হারিয়েছেন 22 জন ।
৭০ শতাংশ অক্সিজেন পাচ্ছে বারাণসী
গত 24 ঘণ্টায় বারাণসীতে 1597টি পজিটিভ কেস সামনে এসেছে । একই সময় সোমবার সকাল 11টা থেকে 1148টি কেস নথিভুক্ত হয়েছে । এখানে সক্রিয় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে 16,143 । সোমবার সন্ধে 7টা পর্যন্ত 10 জনের মৃত্যুর খবর নথিভুক্ত হয়েছে । করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য 2011টি বেডের ব্যবস্থা করা হয়েছে । এর মধ্যে 1200টি বেডে অক্সিজেনের সুবিধা রয়েছে । তবে, যে পরিমাণ অক্সিজেনের প্রয়োজন তার মাত্র 70 শতাংশ সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে । জেলাশাসক বলছেন, বর্তমানে অক্সিজেন চাঁদৌলির প্ল্যান্ট থেকে আসছে । একটি প্ল্যান্ট চলছে মির্জাপুরে, অন্য একটি মধ্য প্রদেশের রেওয়াতে । এখান থেকে প্রতিদিন 200 থেকে 300টি সিলিন্ডার সরবরাহ করা হচ্ছে । তিনি আরও জানান, পাশের জেলাগুলিতে প্রতিদিন 3250 সিলিন্ডারের চাহিদা রয়েছে ।
মথুরার রোগীদের জন্য 600 সংরক্ষিত বেড
মথুরাতে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা প্রতিদিনই বেড়ে চলেছে । গত 24 ঘণ্টায় 454টি কেস নথিভুক্ত করা হয়েছে । মারা গিয়েছেন দুই জন । জেলায় করোনা সংক্রমণের কারণে এখনও পর্যন্ত 133 জন মারা গিয়েছেন । অন্য দিকে, জেলা প্রশাসন এবং স্বাস্থ্য বিভাগ 600টি বেড সংরক্ষিত করে রেখেছে । জেলায় প্রতিদিন 18 থেকে 20টি করে অক্সিজেন সিলিন্ডার পাঠানো হচ্ছে । যদিও চাহিদার থেকে সংখ্যাটা বেশ কম ।