পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / bharat

SC over Bilkis Bano বিলকিস বানোর 11 ধর্ষকের মুক্তি, গুজরাত ও কেন্দ্র সরকারের মত জানতে চাইল সুপ্রিম কোর্ট

বিলকিস বানোকে নিয়ে তোলপাড় দেশের রাজনীতি (New Development on Bilkis Bano Rape Case) ৷ 2002-এ গুজরাত দাঙ্গার সময়ে তাঁকে গণধর্ষণ করা হয় ৷ সেই ঘটনার দোষীরা সম্প্রতি জেল থেকে ছাড়া পেয়েছে ৷ এ সংক্রান্ত মামলায় আজ বড় পদক্ষেপ করল সুপ্রিম কোর্ট ৷

Bilkis Bano Case
বিলকিস বানো

By

Published : Aug 25, 2022, 12:34 PM IST

Updated : Aug 25, 2022, 2:20 PM IST

নয়াদিল্লি, 25 অগস্ট: দোষীদের মুক্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলল খোদ সুপ্রিম কোর্ট ৷ বিলকিস বানোর গণধর্ষণে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত 11 জন দোষীকে 15 অগস্ট মুক্তি দিয়েছে গুজরাত সরকার ৷ সরকারের এই নীতি এবং দোষীদের মুক্তিকে চ্যালেঞ্জ নিয়ে সম্প্রতি সর্বোচ্চ আদালতে মামলা দায়ের করা হয় ৷ বৃহস্পতিবার সেই মামলার শুনানিতে দেশের প্রধান বিচারপতি এন ভি রামানার নেতৃত্বে গঠিত বেঞ্চ জানায়, গুজরাতের নীতি অনুযায়ী দোষীরা মুক্তি পেতে পারে কি ? ধর্ষক-খুনিদের মুক্তি দেওয়া নিয়ে কী ভাবনাচিন্তা করেছে গুজরাত সরকার, তা জানতে চায় দেশের প্রধান বিচারপতি, বিচারপতি অজয় রাস্তোগি, বিচারপতি বিক্রম নাথের বেঞ্চ ৷ এই মামলায় 11 জন দোষীকেও অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত ৷ এই মর্মে কেন্দ্রীয় সরকার এবং গুজরাত সরকারের মতামত জানতে চেয়ে একটি নোটিস পাঠানো হয়েছে ৷ দু' সপ্তাহ পর এই মামলার শুনানি হওয়ার কথা (Supreme Court issues notice to the Gujarat government seeking response over 11 convicts remission) ৷

মঙ্গলবার, 23 অগস্ট দেশের প্রধান বিচারপতি এন ভি রামানা (Chief Justice of India, N V Ramana), বিচারপতি হিমা কোহলি এবং বিচারপতি সি টি রবি কুমার একাধিক জনস্বার্থ মামলার শুনানিতে রাজি হন ৷ প্রবীণ বাম নেত্রী সুভাষিণী আলি, শিক্ষাবিদ রুপ রেখা বর্মা, সাংবাদিক রেবতী লৌল গুজরাত সরকারের 11 জন ধর্ষক ও খুনিকে (11 rapists and murderers) ছেড়ে দেওয়াকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন ৷ অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের লোকসভা সাংসদ মহুয়া মৈত্র (Trinamul Congress MP Mahua Moitra) বিলকিস বানোর এই মামলায় গুজরাত সরকারের নীতিকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা করেন এবং মুক্তির নির্দেশ বাতিলের আবেদন জানান ৷

আরও পড়ুন: অন্তঃসত্ত্বা বিলকিস বানোর গণধর্ষণ ও 7 খুন, সাজাপ্রাপ্ত 11 জন দোষীর মুক্তি

বিলকিস বানো

2002-এর ফেব্রুয়ারি ৷ গুজরাতে গোধরায় অযোধ্য়া থেকে ফেরা একটি ট্রেনে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটে ৷ এতে মারা যান 58 জন পুণ্যার্থী এবং করসেবক ৷ এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে জ্বলে ওঠে গোটা রাজ্য (Gujarat Riot 2002) ৷ 3 মার্চ, দাহোদ জেলায় লিমখেড়া তালুকায় রাধিকাপুর গ্রামে একদল দুষ্কৃতী বিলকিস বানোর পরিবারের উপর হামলা চালায় ৷ সেই সময় বানো 5 মাসের গর্ভবতী ছিলেন ৷ তখন তাঁর বয়স মাত্র 21 বছর ৷ তাঁকে গণধর্ষণ (Bilkis Bano Gangrape) করে তাঁর পরিবারের 7 জন সদস্যকে হত্যা করে দুষ্কৃতীরা ৷ এর মধ্যে তাঁর 3 বছরের মেয়েও ছিল ৷ পরিবারের অন্য 6 জন সদস্য পালিয়ে যেতে পেরেছিলেন ৷ আদালতে এটাই জানানো হয়েছিল ৷ এই ঘটনায় 2004 সালে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয় ৷

বিচার এবং মুক্তিপর্ব

প্রথমে আমেদাবাদে এর বিচারপর্ব শুরু হয় ৷ নির্যাতিতা বিলকিস বানো আশঙ্কা প্রকাশ করে জানান যে, সিবিআই-এর কাছে থাকা তথ্যপ্রমাণ নষ্ট করে দেওয়ার চেষ্টা হতে পারে ৷ 2004-এর অগস্ট, সুপ্রিম কোর্ট মামলাটি মুম্বইয়ে স্থানান্তরিত করে দেয় ৷ বিশেষ সিবিআই আদালত বিলকিস বানোকে গণধর্ষণ এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের গণহত্যার অভিযোগে 2008-এর 21 জানুয়ারি 11 জন অভিযুক্তকে যাবজ্জীবন কারাবাসের আদেশ ঘোষণা করে ৷ বোম্বে হাইকোর্টও এই নির্দেশ বহাল রাখে এবং 7 জন দোষীকে ছেড়ে দেওয়ার আবেদন খারিজ করে দেয় ৷

11 জন দোষীর মধ্যে রাধেশ্যাম শাহ 15 বছর 4 মাস জেলে কাটিয়ে গুজরাত হাইকোর্টে তার কারাবাসের সময় কমানোর আবেদন জানায় ৷ আদালত পর্যবেক্ষণ করে বিষয়টি মহারাষ্ট্রের কাছে পাঠায় ৷ এ বছরের 1 এপ্রিল শাহ সুপ্রিম কোর্টে মুক্তির জন্য আবেদন করে ৷ 13 মে সর্বোচ্চ আদালত জানায়, এই অপরাধ গুজরাতে ঘটেছিল ৷ তাই গুজরাত সরকারকেই শাহের আবেদন নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে ৷

আরও পড়ুন: গুলবার্গ হত্যাকাণ্ডে ফের ক্লিনচিট মোদিকে, জাকিয়া জাফরির আবেদন খারিজ সুপ্রিম কোর্টে

সেই অনুযায়ী সুুপ্রিম কোর্ট গুজরাত সরকারকে 19 জুলাই, 1992-এর নীতি অনুযায়ী সময়ের আগে শাহের মুক্তির আবেদনটি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেয় এবং দু'মাসের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানাতে বলে ৷ রাজ্য সরকার পঞ্চমহলের কালেক্টর সুজল মায়াত্রার (Panchmahals collector Sujal Mayatra) নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করে ৷ তিনি বলেন, "কয়েক মাস আগে 11 জন দোষীর সাজা কমানো নিয়ে একটি কমিটি গঠিত হয় ৷ সেখানে সর্বসম্মতিক্রমে কারাবাসের সময় হ্রাসের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় ৷ এই প্রস্তাব রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হয় এবং তাদের ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয় সরকার ৷"

সোমবার, স্বাধীনতা দিবসে রাধেশ্যাম শাহ ছাড়াও গোধরা সাব-জেল থেকে মুক্তি পায় যশওয়ান্তভাই নাই, গোবিন্দভাই নাই, শৈলেশ ভাট, বিপিন চন্দ্র যোশী, কেশরভাই ভোহানিয়া, প্রদীপ মোরধিয়া, বাকাভাই ভোহানিয়া, রাজুভাই সোনি, মিতেশ ভাট এবং রমেশ চন্দনা ৷

আরও পড়ুন: বিলকিস বানোর ধর্ষকদের মুক্তিতে কেন্দ্রকে তোপ ওয়েইসির

Last Updated : Aug 25, 2022, 2:20 PM IST

ABOUT THE AUTHOR

...view details