নয়াদিল্লি, 7 নভেম্বর : চিনের হাতে ভারতের বিস্তীর্ণ এলাকা জবরদখল হয়ে গিয়েছে বলে ঢের আগেই অভিযোগ করেছিলেন তিনি । কিন্তু ধারালো আক্রমণে সেই সময় কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধিকে চুপ করিয়ে দেওয়ার পালা শুরু হয় বিজেপি-র তরফে । কিন্তু চিনা আগ্রাসনে ভারতের মাটি বেদখল হয়ে গিয়েছে বলে এ বার জানাল আমেরিকা । তাদের প্রতিরক্ষা বিভাগ পেন্টাগনের রিপোর্টে বলা হয়েছে, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (এলএসি) পেরিয়ে ভারতের অরুণাচল প্রদেশে আস্ত গ্রাম গড়ে ফেলেছে ড্রাগন । তাতেই এ বার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং তাঁর সরকারের ব্যর্থতা নিয়ে নতুন করে সরব হল কংগ্রেস । সত্য লুকিয়ে, জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে আপস করে, গোটা দেশকে অন্ধকারে রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমা চাওয়া উচিত বলে দাবি তাদের ।
পেন্টাগনের রিপোর্ট উদ্ধৃত করে শনিবার দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠক করেন কংগ্রেস মুখপাত্র পবন খেরা । তিনি বলেন, ‘‘আমেরিকার কংগ্রেসে পেন্টাগন যে বার্ষিক রিপোর্ট জমা দিয়েছে, তাতে ভারতের মাটি বেদখল হয়ে যাওয়ার দাবিতে সিলমোহর পড়েছে ৷ ওই রিপোর্টে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে যে, অরুণাচল প্রদেশে সাড়ে 4 কিলোমিটার ভিতরে আমাদের এলাকায় ঢুকে এসেছে চিন ৷ সেখানে রীতিমতো গ্রাম গড়ে তুলেছে তারা, যার দ্বৈত ব্যবহার হচ্ছে ৷ সাধারণ মানুষ যেমন সেখানে বাস করছেন, তেমনই নবনির্মিত বাড়িগুলিকে সেনা ছাউনি হিসেবেও ব্যবহার করা হচ্ছে ৷’’
গত বছর লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় চিনা বাহিনীর সঙ্গে ভারতীয় সেনার সংঘর্ষের পর থেকেই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন এলাকায় চিনা আগ্রাসন নিয়ে উদ্বেগ ক্রমশ বাড়ছিল ৷ প্যাংগং হ্রদ, দেপসাং, উষ্ণপ্রবণ-সহ বেশ কিছু এলাকায় চিনা বাহিনী ঢুকে এসেছে বলে সেই সময় দাবি করে কংগ্রেস ৷ রাহুল গান্ধি খোদ এ নিয়ে নরেন্দ্র মোদিকে তীব্র ভর্ৎসনা করেন ৷ রাহুলের বক্তব্য ছিল, ‘প্রধানমন্ত্রী আসলে কাপুরুষ, যাঁর চিনা বাহিনীর সামনে মাথা তুলে দাঁড়ানোর ক্ষমতা নেই ৷ সেনাবাহিনীর বলিদানের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করছেন, যা করার অধিকার নেই ভারতের কারও ৷ দেশের ভূখণ্ড রক্ষা করা প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব ৷ সেটা কী ভাবে করবেন, সেটা তাঁর ব্যাপার ৷ তা না করে কেন সেনা প্রত্যাহার করতে বলা হল ? বিনিময়ে কী পেল ভারত ?’
আরও পড়ুন:Independence Special : বালগঙ্গাধরের কলম ধার বাড়িয়েছিল স্বাধীনতার যুদ্ধের
কিন্তু সেই সময় ধারালো আক্রমণে রাহুলকে চুপ করাতে দেখা যায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং বিজেপি-র শীর্ষস্তরীয় নেতৃত্ব ৷ দেশের একচুলও হাতছাড়া হয়নি বলে দাবি করে কেন্দ্র ৷ দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সভাপত জেপি নাড্ডা রাহুলের প্রতি আক্রমণ শানিয়ে বলেন, ‘কংগ্রেসের সার্কাসের নতুন অধ্যায় , নেপথ্যে রাহল গান্ধি ৷ সেনা প্রত্যাহারকে ভারতের পরাজয় হিসেবে তুলে ধরছেন ৷ চিনের সঙ্গে কি কংগ্রেসের আলাদা কোনও মউ স্বাক্ষরিত হয়েছে ? প্রতিরক্ষা কৌশল নিয়ে প্রশ্ন তুলে আসলে কি আমাদের বীর জওয়ানদের অপমান করছেন না রাহুল ?’
দেশভাগের জন্য কংগ্রেসকে দায়ী করেও রাহুলকে একহাত নেন নাড্ডা ৷ তিনি বলেন, ‘কংগ্রেস চিরকালই সেনাকে অপমান করে এসেছে ৷ চিনের সঙ্গে সংঘাতে সরকার দেশের একচুল অংশও ছেড়ে দেয়নি ৷ হাজার হাজার স্কোয়্যার কিলোমিটার ছেড়ে দেওয়ার পাপ যদি কেউ করে থাকে, তা একটি কাপুরুষ পরিবার, যারা ক্ষমতায় থাকতে দেশকে টুকরো টুকরো করেছে ৷’