আলিগড় (উত্তরপ্রদেশ), 21 নভেম্বর: ভিনরাজ্যে শ্রমিকের (Migrant Labourer) কাজ করতে এসে মৃত মহিলার শেষকৃত্যের (Funeral) অনুষ্ঠানে ভিডিয়ো কলের (Video Call) ব্যবস্থা করা হল ৷ যাতে বহু দূরে থাকা তাঁর গর্ভবতী মেয়ে এর সাক্ষী থাকতে পারেন ৷ মর্মস্পর্শী এই ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) আলিগড়ে (Aligarh) ৷ প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ওই মহিলা আদতে পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার (Cooch Behar) জেলার শীতলকুচির (Sitalkuchi) বাসিন্দা ৷
পুলিশের হাতে আসা তথ্য বলছে, মৃত মহিলার নাম বুলবুলি বর্মন ৷ অভাবের তাড়নায় উত্তরপ্রদেশে শ্রমিকের কাজ করতে আসেন তিনি ৷ নয়ডায় কাজের সুযোগ পান বুলবুলি ৷ কিন্তু, সম্প্রতি সেখানেই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি ৷ এরপর আলিগড়ের সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে ৷ গত 16 নভেম্বর সেখানেই মৃত্যু হয় বুলবুলির ৷ কিন্তু, আলিগড়ে তাঁর পরিচিত কেউ ছিলেন না ৷ ফলে বুলবুলি দেহ কীভাবে সৎকার করা হবে, তা নিয়ে জটিলতা তৈরি হয় ৷
আরও পড়ুন:একই পরিবারের ছ'জনের দেহ উদ্ধার, উদয়পুরের ঘটনায় বাড়ছে রহস্য়
এই অবস্থায় হাসপাতালের পক্ষ থেকে স্থানীয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় ৷ বুলবুলির কাছে একটি মোবাইল ফোন ছিল ৷ সেই ফোনেই ছিল তাঁর মেয়ের নম্বর ৷ সংশ্লিষ্ট স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের তরফে বুলবুলির মেয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় ৷ তিনি জানান, তাঁর পক্ষে মায়ের দেহ কোচবিহারে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া কিংবা আলিগড়ে এসে মায়ের শেষকৃত্য সম্পন্ন করা, কোনওটাই সম্ভব নয় ৷ কারণ, এর জন্য যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন, তা তাঁর কাছে নেই বলে দাবি করেন বুলবুলির মেয়ে ৷ কিন্তু, মাকে শেষবারের মতো দেখতে পাবেন না, এটাও মেনে নিতে পারছিলেন না তিনি ৷
এরপর সংশ্লিষ্ট স্বেচ্ছসেবী সংস্থার কর্ণধার নিজের উদ্যোগে বুলবুলির দেহ সৎকারের ব্যবস্থা করেন ৷ বুলবুলির মেয়ের সঙ্গে কথা বলে তিনি জানতে পারেন, ওই তরুণী বর্তমানে সন্তানসম্ভবা ৷ কিন্তু, হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার টাকাটুকুও তাঁর কাছে নেই ৷ সেই কারণেই তাঁর মা শ্রমিকের কাজ নিয়ে ভিনরাজ্যে আসেন ৷ বুলবুলির জামাইও শ্রমিকের কাজ করেন ৷ এই অবস্থায় বুলবুলির মেয়ের পক্ষে যে কিছুতেই উত্তরপ্রদেশে আসা সম্ভব নয়, তা বুঝতে পারেন সংশ্লিষ্ট স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মালিক ৷ এরপরই ভিডিয়ো কলের ব্যবস্থা করেন তিনি ৷ রবিবার যাবতীয় রীতি মেনে বুলবুলির দেহ দাহ করা হয় ৷ মোবাইলের ভিডিয়ো কলের মাধ্যমে তার সাক্ষী থাকেন তাঁর মেয়ে ৷ মায়ের চিতা জ্বলতে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি ৷