সুপ্রিম কোর্ট তার আগের একটি রায়ে বলেছিল – গরিব, দুর্বল ও কোণঠাসা মানুষদের স্বার্থরক্ষার থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সরকারের কাছে আর কিছুই নেই। গ্রামোন্নয়ন বিষয়ক সংসদীয় কমিটির রিপোর্ট বলছে, এই কল্যাণমূলক ভাবনা কোথাও ক্ষয়প্রাপ্ত হয়েছে । সমাজকল্যাণ পেনশনের বৃদ্ধি না হওয়ার কড়া সমালোচনা করেছে কমিটি । বলা হয়েছে, সমাজের কোণঠাসা অংশের জন্য এই পেনশন আদতে নামমাত্র ।
দারিদ্রসীমার নিচে থাকা পরিবারগুলোতে প্রবীণদের জন্য যে ভাতা রয়েছে, তা মাসে মাত্র 200 থেকে 500 টাকা । চল্লিশ বছরের ওপরে গরিব বিধবাদের যে পেনশন রয়েছে, তা 300 থেকে 500 টাকা । 18 থেকে 79 বছরের মধ্যে যাঁরা শারীরিকভাবে অক্ষম, তাঁদের ভাতার অঙ্ক মাসে মাত্র 300 টাকা । এই সামান্য অঙ্কে কি আদৌ কোনও উপকার হয় ? টাকা বাড়ানোর সুপারিশে কোনও কর্ণপাতই করেনি গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক । আশা করা হচ্ছে এবার দফতরের তরফে পেনশন বাড়াতে সদিচ্ছামূলক পদক্ষেপ করা হবে । স্থায়ী কমিটির মতে, অসহায় মানুষদের দায়িত্ব যে তাদেরই, সেদিকে নজর দেওয়া উচিত সরকারের ।
শারীরিকভাবে অক্ষম, যাঁদের নিজের পায়ে দাঁড়াবার সামর্থ্য নেই, অসহায় বিধবা এবং খিদের জ্বালায় জ্বলতে থাকা বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের প্রতি উদাসীনতা একটা নিন্দনীয় বিষয় । সমাজের এই অংশের দিকে এই ঢিলেমির মনোভাব কল্যাণব্রতী রাষ্ট্রের ভাবনার পরিপন্থী ।
বার্ধক্যের অভিশাপ হল একাকীত্ব । যখন একজন দারিদ্রক্লিষ্ট প্রবীণ মানুষ অসুস্থ হন, তাঁর অবস্থা আরও শোচনীয় হয়ে ওঠে । জাতীয় পরিবার কল্যাণ দফতর এবং ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর পপুলেশন সায়েন্সেসের করা একটি যৌথ সমীক্ষা বহু তিক্ত সত্যকে সামনে এনেছে । এই সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, ষাট বছরের ওপরের 40 শতাংশ মানুষই জীবনধারণের জন্য এখনও কাজ করে চলেছেন । 2011 সালের জনগণনা অনুযায়ী, বয়স্কদের সংখ্যা এদেশে 10.3 কোটি । প্রত্যেক বছরই সংখ্যাটা 3 শতাংশ করে বৃদ্ধি পায় ।