নয়াদিল্লি, 24 জুলাই:'ইন্ডিয়া' মণিপুরের পাশে রয়েছে ৷ নয়াদিল্লির সংসদ ভবন চত্বর থেকে এই বার্তাই দিল বিরোধী দলগুলির জোট ৷ মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে সংসদে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিবৃতির দাবিতে সরব হয়েছে কংগ্রেস, তৃণমূল-সহ বিভিন্ন দল ৷ সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, মণিপুরের থেকে নজর ঘোরাতেই বাংলা, রাজস্থানের মতো রাজ্যগুলির প্রসঙ্গ টেনে আনছে বিজেপির নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার ৷ তাঁর কটাক্ষ, ডাবল ইঞ্জিনের সরকার কতটা অযোগ্য তার জ্বলন্ত প্রমাণ মণিপুর ৷
সোমবার সংসদ ভবনের বাইরে দাঁড়িয়ে অভিষেক বলেন, "আজও বাংলায় প্রায় 20 লক্ষ লোকের টাকা আটকে রেখেছে ৷ আর 1500 কোটি টাকা খরচ করে আপনারা যে সদন বানিয়েছেন, সেখানে আপনারা কথাই বলতে চাইছেন না ৷ একতরফা কিছু হয় না ৷"
তাঁর আরও অভিযোগ, "মণিপুরের থেকে দৃষ্টি ঘুরিয়ে রাজস্থান, ছত্তিশগড় ও বাংলার দিকে করে দেওয়া হচ্ছে ৷ বাংলায় তিন মাস থেকে ইন্টারনেট চলছে ৷ যদি আপনারা মনে করেন যে বাংলার থেকে মণিপুরের অবস্থা ভালো, তাহলে মণিপুরে ইন্টারনেট চালিয়ে দিন ৷ সরকারকে কে মানা করছে ! ওরা ডাবল ইঞ্জিনের সরকার ৷ সিঙ্গল ইঞ্জিনের সরকারের রাজ্যে নেট চলছে ৷ আর ডাবল ইঞ্জিনের সরকারের রাজ্যে ইন্টারনেট তিন মাস ধরে বন্ধ রয়েছে ৷ এটা লজ্জার ৷ ডাবল ইঞ্জিনের বিজেপি কতটা অনুপযুক্ত ও অযোগ্য এটাই তার প্রমাণ ৷"
এ দিন সংসদের ভেতরে ও বাইরে মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে জোটবদ্ধ ভাবে গলা ফাটায় বিরোধী দলগুলির জোট ইন্ডিয়া ৷ সংসদে গান্ধি মূর্তির পাদদেশে হাতে প্ল্যাকার্ড-ব্যানার নিয়ে বিক্ষোভ দেখান বিরোধী দলের সাংসদরা ৷ তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে টুইট করে বার্তা দেওয়া হয় যে, ইন্ডিয়া মণিপুরের পাশে আছে ৷
অফিসিয়াল টুইটার হ্যান্ডেলে বিক্ষোভের ছবি পোস্ট করে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের দল লিখেছে, "হিংসায় জর্জরিত রাজ্যে সরকার ও আইনশৃঙ্খলার বিশৃঙ্খল অবস্থা মোকাবিলায় সম্পূর্ণ অক্ষমতা ও বিজেপির নিষ্ক্রিয়তার নিন্দা জানাই ৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নীরবতা মণিপুরকে ধ্বংস করছে । কিন্তু ন্যায়বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা আমাদের লড়াই চালিয়ে যাব ! সংসদে গান্ধি মূর্তির কাছে আমাদের নেতাদের বিক্ষোভ চলছে ৷"
তৃণমূল টুইটে আরও লিখেছে, "কীভাবে সেখানে শান্তি থাকবে, যখন এর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দায়ী ব্যক্তিরা তা ব্যাহত করার জন্য সক্রিয়ভাবে কাজ করছে ? মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং বেশ কয়েকটি কট্টরপন্থী দলের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে বলে অভিযোগ করে বিজেপি বিধায়ক পাওলেনলাল হাওকিপ এই জাতিগত সংঘাতে রাজ্য সরকারের ভূমিকার দিকে আঙুল তুলেছেন । দু দশক আগে যে বিভাজনকারী মডেলের উদ্ভাবন করেছিলেন মি. সিং, এ বারও তিনি একই মডেল অনুসরণ করছেন বলেই কি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নীরব ? অন্যথায়, 150 জনেরও বেশি মানুষ মারা গিয়েছে এবং কয়েক হাজার বাস্তুচ্যুত হয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ চাইতে এবং একটি কার্যকর শান্তি প্রক্রিয়া শুরু করতে কেন্দ্রকে কে বাধা দিচ্ছে ?"
এ দিন মণিপুর প্রসঙ্গে কেন্দ্রকে একহাত নিয়ে সমাজবাদী পার্টির সাংসদ জয়া বচ্চন বলেন, "আমি আর কী বলব, যে মণিপুর আন্তর্জাতিকভাবে আলোচিত হচ্ছে তা নিয়ে আমাদের দেশে আলোচনা হচ্ছে না... এটা লজ্জার বিষয় ।"