নিউ দিল্লি, 23 মে : করোনার চিকিৎসায় অক্সিজেনের অভাবে নয়, লক্ষ লক্ষ লোক মরছে অ্যালোপ্যাথি ওষুধের ক্ষতিকর প্রভাবে, বলেছেন উত্তরাখণ্ডে হরিদ্বারে পতঞ্জলির কর্মকর্তা খ্যাতনামা যোগগুরু রামদেব ৷
এর ফলে ফ্রন্টলাইনে থাকা অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসকেরা বেজায় চটেছেন ৷ ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ)-র চিকিৎসকেরা তাঁর এই মন্তব্যের জন্য রামদেবকে ক্ষমা চাইতে বলেছেন ৷ ভারতীয় চিকিৎসকদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সংগঠনটি আইনি নোটিস পাঠিয়েছে গেরুয়াধারী শিল্পপতিকে ৷ সেখানে তাঁকে ক্ষমা চেয়ে চিঠি পাঠিয়ে তাঁর এই বিতর্কিত মন্তব্য প্রত্যাহার করতে বলা হয়েছে ৷ তাঁরা জানিয়েছেন, প্যানডেমিকের শুরু থেকে নিজেদের জীবন বিপন্ন করে সারাক্ষণ রোগীদের বাঁচানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসকরা, তার বদলে এমন মন্তব্যের ফলে তাঁদের মর্যাদাহানি হয়েছে ৷ এখনও পর্যন্ত দেশে 420 জন চিকিৎসক মারা গিয়েছেন ৷
আরও পড়ুন : দিল্লিতে বাড়ল লকডাউনের সময়সীমা
চাপের মুখে অবশ্য পতঞ্জলি গ্রুপ থেকে দাবি করা হয়েছে, এই ভিডিয়োটি এডিট করা হয়েছে আর এতে অন্য প্রসঙ্গে ধরা হয়েছে৷ 55 বছর বয়সের যোগাগুরু আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান আর তার চিকিৎসকদের প্রতি কোনও অসৎ উদ্দেশ্যে এই মন্তব্য করেননি ৷ এমনকি রামদেব নিজে বিশ্বাস করেন যে অ্যালোপ্যাথি উন্নত বিজ্ঞান ৷ আর এই সংকটজনক পরিস্থিতিতে যে কোনও করোনা রোগীর জন্য অ্যালোপ্যাথি, আয়ুর্বেদ, যোগা, তিনটি খুবই উপকারী ৷ আইএমএ ছাড়াও সাড়ে তিন লক্ষ চিকিৎসকের সংগঠন ফেডারেশন অফ অল ইন্ডিয়া মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (এফএআইএমএ)-ও যোগাগুরুর বিরুদ্ধে আইনি নোটিস পাঠিয়েছে ৷
এর আগেও তাঁর ‘আশ্চর্য ওষুধ প্রকাশের সময়’ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সামনেই চিকিৎসকদের খুনি বলে সম্বোধন করেন রামদেব ৷ সেখানে উপস্থিত ছিলেন এক চিকিৎসক ৷ এ ধরনের অশিক্ষিত মন্তব্যের জন্য কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক এপিডেমিক ডিজিজ অ্যাক্টের আওতায় রামদেবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক, দাবি জানিয়েছিল আইএমএ ৷
ফেব্রুয়ারিতে গেরুয়া গুরু কোভিড-19 প্রতিরোধে দেশের প্রথম ‘প্রমাণিত ওষুধ’ করোনিল বাজারে আনেন ৷ সেই ওষুধ আত্মপ্রকাশের অনুষ্ঠানে তাঁর সঙ্গে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন আর নীতিন গড়কড়িও ৷
গেরুয়া গুরু বনাম চিকিৎসক, কোন পক্ষ নেবে বিজেপি ?