আমেদাবাদ, সিমলা ও হায়দরাবাদ, 7 ডিসেম্বর: 2022 সালের মেগা রাজনৈতিক ডুয়েল শেষ ৷ আর কয়েকঘণ্টা পরেই জানা যাবে, কে হাসবে শেষ হাসি ৷ যদিও বুথ ফেরত সমীক্ষার (Exit Poll) পূর্বাভাস বলছে, গুজরাতে (Gujarat) এখনও অটুট মোদি ম্যাজিক ৷ বিভিন্ন সংস্থার সমীক্ষাগুলির দাবি, গুজরাতে সপ্তমবারের জন্য ক্ষমতায় আসতে চলেছে বিজেপি ৷ অন্যদিকে, একই দল পর পর দু’বার হিমাচল প্রদেশে (Himachal Pradesh) সরকার তৈরি করতে পারে না ৷ গত 37 বছর ধরেই পাহাড়ি রাজ্যে এই রেকর্ডও ভাঙতে চলেছে গেরুয়া শিবির, বলছে বুথ ফেরত সমীক্ষা ৷
গত তিনদশক ধরে গুজরাতে দ্বিমুখী লড়াই দেখেছে দেশ । তাতেই এবার ঢুকে পড়েছে আম আদমি পার্টি । ফলে এবার আলাদা করে রাজনৈতিক মহলের নজর ছিল অরবিন্দ কেজরিওয়ালের (Arvind Kejriwal) দিকে ৷ কংগ্রেসকে (Congress) কি তারা পিছনে ফেলতে পারবে ? যদিও বেশিরভাগ বুথ ফেরত সমীক্ষা বলছে, গুজরাতে কোনও প্রভাবই ফেলতে পারবে না আপ (Gujarat Assembly election 2022 counting of votes December 8) ৷
গুজরাত বিধানসভা নির্বাচনে প্রাপ্ত ভোটগুলি বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশন কর্তৃক 33টি জেলা জুড়ে 37টি গণনা কেন্দ্রে গণনা করা হবে । বিজেপি প্রায় 27 বছর ধরে রাজ্যে ক্ষমতায় রয়েছে । অন্যদিকে, হিমাচলের 68টি আসনের বিধানসভার জন্য 59টি জায়গায় গণনা হবে ।
- গুজরাত (বিজেপি বনাম আপ বনাম কংগ্রেস):
মোদি-রাজ্যে টানা সপ্তমবার ক্ষমতা ধরে রাখতে প্রস্তুত বিজেপি । রাজনৈতিক মহল বলছে, গুজরাতই 2024 সালে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে টানা তৃতীয় মেয়াদে মোদির হাত শক্ত করবে । ভোটের আগে স্বয়ং মোদি বিজেপির নির্বাচনী প্রচারে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন । রাজ্যে প্রায় 30টি সমাবেশ এবং রোড শো'তে ভাষণ দিয়েছিলেন । অমিত শাহ প্রায় দু'মাস ধরে রাজ্যে ক্যাম্প, মাইক্রোম্যানেজিং করেছিলেন । যোগী আদিত্যনাথ, শিবরাজ সিং চৌহান, হেমন্ত বিশ্ব শর্মা এবং প্রমোদ সাওয়ান্ত সহ বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীরা প্রায় সমস্ত কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের সঙ্গে প্রচারে নেমেছিলেন ।
অন্যদিকে, গুজরাতে গেরুয়া শিবিরকে পাল্লা দেওয়ার জায়গায় না-পৌঁছলেও ভারত জোড়ো যাত্রার সুফল তুলতে মরিয়া কংগ্রেস । মোদি-রাজ্যে প্রচারে নিযুক্ত ছিলেন দলের শীর্ষ নেতারা । রাহুল গান্ধিও দু'টি সমাবেশে ভাষণ দেন । যদিও গুজরাতে কংগ্রেসের বিশেষ 'হাত'যশ দেখছেন না কেউই ।
আক্রমণাত্মক প্রচার চালিয়েছে আপ'ও । গুজরাত নির্বাচনের হাত ধরে সর্বভারতীয় পার্টি হিসাবে প্রতিষ্ঠিত এবং বিজেপির প্রধান চ্যালেঞ্জার হিসাবে আবির্ভূত হওয়ার জন্য মরিয়া অরবিন্দ কেজরিওয়াল । গত পাঁচ মাসে বেশ কয়েকটি সমাবেশে বক্তব্য দিয়েছেন এবং রোড শো করেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী । পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মানও প্রচারে যোগ দিয়েছেন । যদিও বুথ ফেরত সমীক্ষা বলছে, গুজরাতে কোনও প্রভাবই ফেলতে পারবে না আপ ৷ সম্ভবত ভোট কেটে তারা বিজেপিকে আরও আসন জয়ের পথ করে দিতে চলেছে ৷
আরও পড়ুন: গুজরাত-হিমাচলে মোদি ম্যাজিকেই ভরসা জনতার, ইঙ্গিত বুথ ফেরত সমীক্ষায়
গুজরাতে 1 এবং 5 ডিসেম্বরে দু'টি ধাপে ভোট হয়েছিল ৷ ভোটারের উপস্থিতি ছিল 66.31 শতাংশ, যা 2017 সালের বিধানসভা নির্বাচনে রেকর্ড করা 71.28 শতাংশের চেয়ে কম ৷ মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল, আম আদমি পার্টির (এএপি) মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী ইসুদান গাধভি, যুব নেতা হার্দিক প্যাটেল, জিগনেশ মেভানি এবং অল্পেশ ঠাকুরসহ মোট 1,621 জন প্রার্থীর ভাগ্য বৃহস্পতিবার নির্ধারণ হবে ।
2017 সালের বিধানসভা নির্বাচনে, বিজেপি 99টি এবং কংগ্রেস 77টি আসন জিতেছিল । দু'টি আসন বিটিপির কাছে, একটি এনসিপির কাছে এবং তিনটি নির্দলের কাছে গিয়েছিল । এই মাসের নির্বাচনের আগে, গত পাঁচ বছরে কংগ্রেসের আসনে জয়ী 20 জন বিধায়ক বিজেপিতে চলে যাওয়ার পরে বিধানসভায় বিজেপির বিধায়কের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে 110 এবং কংগ্রেস 60-এ ।
আরও পড়ুন: সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে হিমাচলে সরকার গড়তে বিকল্প পরিকল্পনাও তৈরি বিজেপির
- হিমাচল প্রদেশ
1985 সালের পর থেকে টানা দু'বার কেউ ক্ষমতায় আসেনি । এবার 68 আসনের হিমাচল প্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে (HP Assembly Polls 2022) জিততে প্রচারে চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখেনি বিজেপি ৷ বারবার ওই রাজ্যে প্রচারে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Narendra Modi) ৷ ভোট শেষে একাধিক বুথ ফেরত সমীক্ষাও (Exit Poll) বিজেপির উপরই বাজি ধরেছে ৷
প্রচারে বারবার মোদি বলেছেন, হিমাচল প্রদেশে ক্ষমতা-বিরোধী প্রবণতা বদলে যাবে । মহিলা ও যুবকদের উপরেই ফোকাস করেছিল বিজেপি । রাজ্যের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো মহিলাদের জন্য একটি স্বতন্ত্র ইশতেহারও তৈরি করেছিল । এগুলির সুফল গেরুয়া শিবিরের পালে কতটা হাওয়া দেয়, এখন তাই দেখার ।