পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / bharat

বার্ড ফ্লু : ভারতের সামনে এখন আরও একটা ভাইরাসের আতঙ্ক ? - বার্ড ফ্লুর ভাইরাসের আতঙ্ক

এইচ5এন1 স্ট্রেনটি হাই প্যাথোজেনিক । পোলট্রির শরীরে এই স্ট্রেনের মারাত্মক প্রভাব দেখা যায় ও মৃত্যুর হারও অনেক বেশি । বর্তমানে যে স্ট্রেনটি রয়েছে, সেটি এইচ5এন8 । এটি বাকিগুলির মতো মারাত্মক নয় এবং লো প্যাথোজেনিক ক্যাটেগরির । বার্ড ফ্লুয়ের নতুন স্ট্রেন নিয়ে আলোচনায় সুদেষ্ণা নাথ ।

বার্ড ফ্লু আতঙ্ক
বার্ড ফ্লু আতঙ্ক

By

Published : Jan 8, 2021, 12:35 PM IST

প্রথমে ছিল কোরোনা । দেশজুড়ে আতঙ্কের বাতাবরণ । তার সঙ্গে লকডাউন । লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে সংক্রমণ, বেড়েছে মৃতের সংখ্যাও । ধাক্কা কিছুটা সামলে উঠে আনলক হতে শুরু করল দেশ । পুরানো ছন্দে ফিরতে শুরু করল বেশিরভাগ পরিষেবা । তারপর এল কোরোনার নতুন স্ট্রেন । সংক্রমণ ক্ষমতা আগের তুলনায় অনেক বেশি । কিন্তু এখানেই শেষ নয় । এল নতুন অস্ত্র ।

দেশবাসীকে এখন নতুন আতঙ্ক গ্রাস করেছে । অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জ়া বা বার্ড ফ্লু । দেশের একের পর এক রাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছে বার্ড ফ্লু । আর এতে আরও চিন্তা বাড়ছে । যেন দেশের মেরুদণ্ড দিয়ে একটা শিহরণ খেলে যাওয়ার মতো ।

রাজস্থানে প্রায় কয়েকশো কাক মারা যাওয়ার পর ভোপালের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হাই সিকিউরিটি অ্যানিমাল ডিজ়িজ়েস দেশে অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জ়া উপস্থিতি নিশ্চিত করে । রাজ্যগুলিতে ইতিমধ্যেই বার্ড ফ্লু-র সতর্কতা জারি করেছে কেন্দ্র । এখনও পর্যন্ত মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, হিমাচল প্রদেশ ও কেরালায় বার্ড ফ্লুর খবর পাওয়া গেছে ।

অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জ়া কী ?

অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জ়া (যা সাধারণত বার্ড ফ্লু নামে পরিচিত) হল পাখির একটি সংক্রামক রোগ । টাইপ এ ইনফ্লুয়েঞ্জ়া ভাইরাস থেকে এই রোগ হয় । এই ভাইরাস সাধারণত পোলট্রি যেমন, মুরগি, টার্কি, হাঁস, কোয়েল এবং রাজহাঁস জাতীয় পাখির শরীরে সংক্রামিত হয় । বন্য জলজ পাখি - বিশেষত কিছু বুনো হাঁস, রাজহাঁস, সোয়ান, গাল, শোর বার্ডস এবং টর্নস - বেশিরভাগ ইনফ্লুয়েঞ্জ়া টাইপ এ ভাইরাসের বাহক ।

পাখিরা কীভাবে অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জ়ায় সংক্রমিত হয় ?

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আক্রান্ত পাখিদের লালা, নাকের থেকে ক্ষরণ এবং মলের মাধ্যমে অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জ়া-এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে। সংক্রমিত পাখিগুলির সংস্পর্শে অন্য পাখিরা এলে, সেগুলিও সংক্রমিত হয় । কোনও সংক্রমিত পাখি যেখানে বসছে, সেই জায়গা থেকেও অনেকসময় সংক্রমণ ছড়াতে পারে ।

বার্ড ফ্লু কীভাবে মানুষের শরীরে সংক্রমিত হয় ?

সমস্ত অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জ়া ভাইরাস মানুষের মধ্যে রোগ সৃষ্টি করে না । তবে কিছু কিছু ভাইরাস মানুষকে সংক্রমিত করতে পারে এবং মারাত্মক ব্যাধি সৃষ্টি করতে পারে । তবে, ভাইরোলজিস্টরা বলছেন যে এক ব্যক্তির থেকে অন্য ব্যক্তির শরীরে ভাইরাসের সংক্রমণ হওয়া কঠিন । আসল অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জ়া ভাইরাস এইচ5এন1 এবং এর প্রকারভেদ এইচ7এন9 মানবদেহে মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে । কখনও কখনও মারাত্মক প্রাণঘাতীও হতে পারে । বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, মানুষের শরীরে এই ধরনের সংক্রমণে মৃত্যুর হার 60 শতাংশ ।

কত ধরনের স্ট্রেন রয়েছে ?

1950 সালে প্রথমবার এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব হয়েছিল । তারপর প্রায় তিন দশক পর আবার সংক্রমণ । 1977 সালে । সেই থেকে বার বার বিবর্তন ও ভাইরাসের পুনর্গঠনের ফলে এখনও পর্যন্ত বিশ্বে মোট 77 টি দেশে 33 টি স্ট্রেনের হদিস মিলেছে । বর্তমানে অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জ়া ভাইরাসের যে স্ট্রেনগুলি বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ বাড়িয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে এইচ5এন1, এইচ5এন2, এইচ5এন8 এবং এইচ7এন8 ভাইরাস ।

এই বার্ড ফ্লু ভাইরাস কি সংক্রামক?

পোলট্রির উপর রোগের কতটা প্রভাব পড়ছে, তার উপর নির্ভর করে অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জ়া ভাইরাসগুলিকে সাধারণত দু'টি ভাগে ভাগ করা যায়। প্রথমটি হল, নিম্ন প্যাথোজেনিক অর্থাৎ, যেখানে স্ট্রেনগুলির পোলট্রিদের উপর খুব কম লক্ষণ দেখা যায় । দ্বিতীয়টি হল, হাই প্যাথোজেনিক অর্থাৎ, স্ট্রেনগুলির পোলট্রির মধ্যে মারাত্মক লক্ষণ দেখা যায় এবং মৃত্যুর হারও অনেক বেশি । আকারে ছোটো এবং কাঠামোর ক্ষেত্রে সহজ হলেও, ইনফ্লুয়েঞ্জ়া ভাইরাসগুলি অত্যন্ত মিউটেজেনিক জিনোমযুক্ত পরিশীলিত জীব । সহজ কথায়, এগুলি জিনের সঙ্গে প্রতিক্রিয়া করে এবং শরীরের উপর ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলতে পারে ।

আরও পড়ুন : বার্ড ফ্লু নিয়ে অযথা উদ্বিগ্ন না হওয়ার পরামর্শ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর

কোন স্ট্রেনটি ভারতে সবথেকে বেশি প্রভাব ফেলেছে ?

ভারতে এইচ5এন1 ভাইরাসের প্রথম প্রাদুর্ভাব দেখা গেছিল 2006 সালে । মহারাষ্ট্রের নন্দুরবার জেলার নাভাপুর থেকে প্রথম সংক্রমণের খবর পাওয়া গেছিল । সেই থেকে দেশে বারবার ফিরে এসেছে এই ভাইরাস । এর মধ্যে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, এইচ1এন1 ভাইরাসের স্ট্রেন পাওয়া গেছে ।

বর্তমানে কোন স্ট্রেনটির প্রাদুর্ভাব হয়েছে ?

ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হাই সিকিউরিটি অ্যানিমাল ডিজ়িজ় বর্তমানে দু'টি স্ট্রেনের হদিস নিশ্চিত করেছে । এগুলি হল, এইচ5এন1 এবং এইচ5এন8 ভাইরাস (এখনও পর্যন্ত পাঁচটি রাজ্য থেকে নমুনা পরীক্ষার ভিত্তিতে) । হিমাচল প্রদেশের পরিযায়ী পাখি, মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থানের কাক, হরিয়ানায় মুরগি ও কেরালায় হাঁসের মধ্যে বার্ড ফ্লুর ভাইরাস পাওয়া গেছে ।

বার্ড ফ্লু : যে বিষয়গুলি জেনে রাখা দরকার

আগের স্ট্রেনগুলির তুলনায় বর্তমান স্ট্রেন কতটা আলাদা ?

এইচ5এন1 স্ট্রেনটি হাই প্যাথোজেনিক । পোলট্রির শরীরে এই স্ট্রেনের মারাত্মক প্রভাব দেখা যায় ও মৃত্যুর হারও অনেক বেশি । বর্তমানে যে স্ট্রেনটি রয়েছে, সেটি এইচ5এন8 । এটি বাকিগুলির মতো মারাত্মক নয় এবং লো প্যাথোজেনিক ক্যাটেগরির ।

এখনও পর্যন্ত ভারতে ভাইরাসের প্রভাব

এখনও পর্যন্ত দেশে 4 টি রাজ্য মিলিয়ে মোট 12 টি উপকেন্দ্র পাওয়া গেছে ।

হিমাচল প্রদেশ

পং জলাধার থেকে অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জ়া ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের প্রথম ঘটনাটি সামনে এসেছিল । 2 হাজার 500 পরিযায়ী পাখি মারা গিয়েছিল সেখানে । সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ হয়েছিল বার হেড রাজহাঁসের মধ্যে । রাজ্য প্রশাসন সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে ফতেহপুর, দেহরা, জাওয়ালি ও ইন্দোড়া মহকুমায় হাঁস-মুরগি বিক্রি নিষিদ্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে ।

রাজস্থান

রাজস্থানের 33 টি জেলার মধ্যে 16 টিতে বার্ড ফ্লু প্রাদুর্ভাব দেখা গেছে । পার্ক ও অভয়ারণ্য বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলত । একইসঙ্গে পাখি পালিত হয় এমন সমস্ত স্থানে নজরদারি বাড়ানোর পরামর্শও জারি করেছেন ।

মধ্যপ্রদেশ

মধ্যপ্রদেশের পশুপালন দপ্তরের তরফে জানানো হয়েছে, এখনও পর্যন্ত 376 টি কাক মারা গেছে । এর মধ্যে ইন্দোরে 146 টি, আগর-মালওয়াতে 112 টি, মন্দসৌরে 100 টি, খারগনে 13 টি এবং সিহোরে 9 টি মৃত কাক পাওয়া গেছে । বার্ড ফ্লুর আতঙ্কে আগামী 10 দিনের জন্য কেরালা ও দক্ষিণের অন্য রাজ্যগুলি থেকে মুরগি আনা যাবে না বলে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান ।

কেরালা

কেরালায় আলাপুজ়া এবং কোট্টায়াম জেলায় বার্ড ফ্লু প্রাদুর্ভাবের খবর পাওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় 48 হাজার হাঁস সংগ্রহ করা হয়েছে । সেই নমুনাগুলি ভোপালের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হাই সিকিউরিটি অ্যানিমাল ডিজ়িজ়ে পাঠানোর পরে, অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জ়া সাব-টাইপ এইচ5এন8 -এর হদিস মিলেছে ।

সরকার কী ব্যবস্থা নিচ্ছে ?
মানব সংক্রমণের ঝুঁকি কমানোর জন্য হাঁস-মুরগির শরীরে অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জ়া বিস্তার নিয়ন্ত্রণে আনা প্রয়োজন । সেই অনুযায়ী, কেন্দ্র বার্ড ফ্লু প্রভাবিত রাজ্যগুলিকে ভাইরাসের বিস্তার রুখতে নজরদারি বাড়ানোর জন্য বলেছে । ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যগুলি ইতিমধ্যে কন্ট্রোল রুম তৈরি করেছে । সেখান থেকে প্রাদুর্ভাব রুখতে কী করা উচিত ও কী করা উচিত নয়, সেই সম্পর্কিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে । 2015 সালের জাতীয় অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জ়া পরিকল্পনা অনুসারে প্রাণহানির খবর জানাতে ও ভাইরাসের বিস্তার নিয়ন্ত্রণে আনতে ব়্যাপিড রেসপন্স টিম প্রস্তুত রাখা হচ্ছে ।

এইসময় মাংস খাওয়া কি নিরাপদ ?

এ (এইচ5), এ (এইচ7এন9) বা অন্যান্য অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জ়া ভাইরাস সাব টাইপগুলি সঠিকভাবে রান্না করা হাঁস-মুরগি বা ডিমের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হতে পারে এমন কোনও প্রমাণ নেই । তবে, একই সঙ্গে বাইরে এবং ভিতরে উভয় দিক থেকেই ডিমের মধ্যে ভাইরাস থাকার ঘটনাও রয়েছে । এই কারণে, পুষ্টিবিদরা উপদেশ দিচ্ছেন এইসময় কুসুম এড়িয়ে চলার । মাংস যদি 70 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের উপরে রান্না করা হয়, তবে তা নিরাপদ । বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও পরামর্শ দেয় হাস-মুরগি ও পোল্ট্রিজাত পণ্যগুলি স্বাস্থ্যকর উপায়ে রান্না করার জন্য । এখন পর্যন্ত, মুরগি খেলে সেরকম বড়সড় ঝুঁকির কিছু নেই ।

প্যানিক সেলিং কি হচ্ছে ?

“কয়েক মাস থেকে কোভিডের কারণে ডিমের বিক্রি বেড়েছে । কারণ আরও বেশি মানুষ ডিমের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে সচেতন হয়েছেন । বার্ড ফ্লুর প্রাদুর্ভাবের কারণে সেই ছকের উপর কোনও প্রভাব পড়েনি ।" এমনই জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক ডিম কমিশনের চেয়ারম্যান সুরেশ চিত্তুরি । তবে, এমন খবরও শোনা যাচ্ছে যে, তামিলনাড়ুতে পোলট্রিজাত খাবারের বিক্রি কমতে শুরু করেছে এবং ওই রাজ্যে হাঁস-মুরগি ও ডিমের দামও কিছুটা কমেছে ।

সাবধানতা

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, যে এলাকাগুলিতে ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব রয়েছে, সেখানে গ্রাহকদের হাঁস এবং অন্যান্য খাবারের মধ্যে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি আটকাতে খাবার ভালোভাবে রান্না করার বিষয়ে সচেতন হওয়া দরকার । হাঁস-মুরগির মাংস বা পোলট্রিজাত পণ্য অন্য কাঁচা খাবারগুলির সঙ্গে যাতে না মিশে যায়, সেদিকে অবশ্যই নজর দিতে হবে । হাঁস-মুরগির মাংস রান্নার আগে ও পরে হাত ভালভাবে ধুয়ে ফেলা উচিত । এক্ষেত্রে সাবান এবং গরম জল যথেষ্ট ।

যাঁরা পোলট্রি ফার্মে কাজ করেন তাঁদের জন্য

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যাঁদের শরীরে এইচ5এন1 এর সংক্রমণ হয়েছে, তাঁরা প্রায় সব ক্ষেত্রেই সংক্রমিত জীবিত বা মৃত পাখির সংস্পর্শে এসেছেন । ভাইরাসটি সহজেই মানুষের শরীরে সংক্রমিত হয় না এবং একজন ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তির শরীরেও সেভাবে ছড়িয়ে পড়ে না । তবে, হাঁস-মুরগি কাটা, পালক ছাড়ানো, সংক্রমিত হাঁস-মুরগির দেহ নাড়াচাড়া করা এবং পোলট্রি ফার্মে কাজ করা, খাওয়ার জন্য হাঁস-মুরগি প্রতিপালন করার ক্ষেত্রে ঝুঁকির কারণ হতে পারে । বিশেষ করে গৃহস্থলীর মধ্যে যখন এগুলি হয় তখন ঝুঁকি আরও বেশি ।

সুরেশ চিত্তুরি দাবি করেছেন, "ভারতে বার্ড ফ্লু নতুন নয় । তবে দুর্ভাগ্যক্রমে বেশিরভাগ খামার বায়ো নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে না ।" তিনি আরও বলেন, "খামারে কাজ করার সময় মাস্ক পরা এবং হাত ধোয়ার মতো সুরক্ষা ব্যবস্থা সাহায্য় করতে পারে । এছাড়াও চিন ও ভিয়েতনামের মতো দেশগুলির মতো, ভারতে পাখি এবং স্তন্যপায়ী প্রাণী পৃথকভাবে প্রতিপালন করা হয় না । এই কারণে, ফ্লু সহজেই ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থেকে যায় ।"

সংক্রমণ রুখবেন কীভাবে ?

সুরেশ চিত্তুরির কথায়, “পরিযায়ী পাখির মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বার্ড ফ্লু পর্যবেক্ষণ করা সহজ নয় । এটি অত্যন্ত ব্যয়বহুল হতে চলেছে । সুতরাং, আমার মতে, টিকা দেওয়ার সর্বোত্তম সমাধান এবং অবিলম্বে এটির অনুমতি দেওয়া উচিত ।" তিনি আরও বলেন," পোল্ট্রিদের টিকা দেওয়ার ফলে বাংলাদেশ, চিনের মতো প্রতিবেশী দেশগুলিতে ফল পাওয়া গেছে। "

মানবদেহে অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জ়ার উপসর্গ

সংক্রমণের উপসর্গগুলির মধ্যে রয়েছে ধুম জ্বর এবং অসুস্থতা, কাশি, গলা ব্যথা এবং পেশির ব্যথা। অন্যান্য প্রাথমিক উপসর্গগুলির মধ্যে রয়েছে পেটে ব্যথা, বুকের ব্যথা এবং ডায়রিয়া । সংক্রমণটি দ্রুত গুরুতর আকার ধারণ করতে পারে । এর মধ্যে রয়েছে শ্বাসযন্ত্রের অসুস্থতা (শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া, অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ডিস্ট্রেস সিনড্রোম) এবং নিউরোলজিক পরিবর্তন (পরিবর্তিত মানসিক অবস্থা বা খিঁচুনি)।

মানবদেহে কী প্রভাব ফেলে অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জ়া ?

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই, মানুষের মধ্যে অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জ়া একটি গুরুতর রোগে পরিণত হয় যা অবিলম্বে হাসপাতালে চিকিৎসা করা উচিত । বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ ওসেলটামিভির এই অসুস্থতার তীব্রতা হ্রাস করতে পারে এবং মৃত্যুকে রোধ করতে পারে । সব ক্ষেত্রেই এই ওষুধ ব্যবহার করা যায় ।

বার্ড ফ্লুর টিকা রয়েছে ?

মরশুম ভিত্তিক ইনফ্লুয়েঞ্জ়া টিকা এইচ5এন1 সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে না । এইচ5এন1 সংক্রমণ রোধের জন্য ভ্যাকসিন তৈরি করা হয়েছে । তবে এটি এখনও ব্যাপকভাবে ব্যবহারের জন্য তৈরি নয়।

অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জ়া এইচ5এন1 ভাইরাস নিয়ে এতটা চিন্তা কেন ?

ইনফ্লুয়েঞ্জ়া ভাইরাস ক্রমাগত জিনগত পরিবর্তন হয় । এই এইচ5এন1 ভাইরাস মানুষের মধ্যে আরও সহজেই সংক্রমণযোগ্য হয়ে উঠলে এটি উদ্বেগের কারণ হতে পারে । মানুষের মধ্যে এইচ5এন1 সংক্রমণ মারাত্মক রোগের কারণ হতে পারে এবং এর মৃত্যুর হারও বেশি থাকে । এর পাশাপাশি যদি এইচ5এন1 ভাইরাস এক ব্যক্তি থেকে অন্যের শরীরে সহজেই সংক্রমিত হয়, তবে জনস্বাস্থ্যের পরিণতি মারাত্মক হতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে ।

ABOUT THE AUTHOR

...view details