ধানবাদ, 18 জুলাই : ঘুম ভাঙলেই বোমা-গুলির শব্দ । বাতাসে ভাসত বারুদের গন্ধ । আজ এখানে খুন তো কাল ওখানে । লাশের খবরই শোনা যেত সবসময় । মাওবাদীদের আখড়া ছিল ঝাড়খণ্ডের লাতেহার জেলা । বড় থেকে ছোটো সবারই প্রায় স্বপ্ন ছিল, মাওবাদী কার্যকলাপে অংশগ্রহণ করার । পড়াশোনা ছিল অনেক দূরে ।
পিছিয়েপড়া জেলাগুলির অন্যতম । একদিকে অর্থাভাব । দিন আনা দিন খাওয়ার সংসারে শিক্ষার চেয়ে এক মুঠো খাবারের চিন্তা এখানকার মানুষের কাছে অনেক বেশি ছিল । তার উপর এই মাওবাদী আখড়া । ভবিষ্যৎ অন্ধকার হচ্ছিল এক এক প্রজন্মের । সম্প্রতি তারা বুঝতে পারে, শিক্ষাই একমাত্র অস্ত্র । যা দিয়ে সমাজে উন্নতি আনা যায় । নিজেদেরও উন্নতি হয় । শুরু হয় বাচ্চাদের স্কুলে পাঠানো । এখন এখানকার বেশিরভাগ বাচ্চাই স্কুলে যায় ।
এভাবে সবকিছুই ঠিকঠাক চলছিল এতদিন । বাধ সাধে কোরোনা । সংক্রমণের জেরে মার্চ মাস থেকে বন্ধ হয়ে যায় স্কুলগুলি । কিছুদিন পর থেকে শুরু হয় অনলাইন ক্লাস । যাতে অনেকেই উপকৃত হয় । কিন্তু যাদের কাছে ফোনটাই নেই ? ফোনের ব্যবহারই যারা জানে না ? বা এই পরিস্থিতিতে ইন্টারনেট রিচার্জ করার ক্ষমতা নেই ? তাদের কী হবে ? যাদের দিন আন্তে পান্তা ফুরোয়, দু'বেলা দু'মুঠো খাবার ঠিকমতো জোটে না তাদের কাছে কোথা থেকে আসবে স্মার্ট ফোন ? ফলে, মোবাইলের অভাবে পিছিয়ে পড়ছে এইসব ছাত্র-ছাত্রীরা ।