জন্মের পর শিশুর এই পৃথিবীতে আসার পর স্তন্যদানই হল প্রকৃতির সেই বিস্ময়কর প্রক্রিয়া ৷ যার মাধ্যমে তার খাদ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয় । মা এবং শিশু, উভয়ের পক্ষে এই অভিজ্ঞতা তৃপ্তিদায়ক । তবে তা সত্ত্বেও বহু ক্ষেত্রেই এমন কিছু দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা সামনে আসে ৷ যার জন্য কিছু শিশু মাতৃদুগ্ধ থেকে বঞ্চিত থেকে যায় । সেই সব পরিস্থিতিতে পরিত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয় ‘হিউম্যান মিল্ক ব্যাঙ্ক’ । স্তন্যদান সপ্তাহ উপলক্ষ্যে মুম্বইয়ের CAMA এবং ALBLESS হাসপাতালের প্রাক্তন সুপারিন্টেন্ডেন্ট , ওবস্টেট্রিক্স এবং গাইনোকোলজির অধ্যাপক, বিশিষ্ট গাইনোকোলজিস্ট ও ওবস্টেট্রিকশিয়ান, MD OBGY, FICOG, FMAS ডাঃ রাজশ্রী কাটকের সঙ্গে কথা বলেছে ETV সুখীভব ।
হিউম্যান মিল্ক ব্যাঙ্কিং কী?
এটা এক ধরনের পদক্ষেপ, যেখানে মায়েরা স্তনদুগ্ধ দান করেন । শিশুদের বিকাশের জন্যই এই পরিকল্পনা এবং এতে শিশদের সুস্থভাবে বেড়ে ওঠা নিশ্চিত হয় । যে সব মহিলা স্তন্যদুগ্ধ দানে ইচ্ছুক, তাঁদের কাছ থেকে দুগ্ধ সংগ্রহ করা হয় হাত দিয়ে চাপ দিয়ে কিংবা ব্রেস্ট পাম্প ব্যবহার করে । তবে তার আগে বেশ কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয় ৷ তারপর দুধ সংগ্রহ করা হয় সেই সব বিপন্ন শিশুদের দুধের প্রয়োজন মেটাতে ৷ যাদের বিকাশের জন্য এটি অত্যন্ত জরুরি ।
কারা হিউম্যান মিল্ক দান করতে পারেন?
- ইচ্ছুক মায়েরা যাদের HIV, হেপাটাইটিস B এবং সেফিলিস রোগের পরীক্ষা হয়েছে, কিন্তু ফলাফল নেগেটিভ ।
- যে সব মায়েদের রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা 10 গ্রাম বা তার বেশি এবং যারা কোনও গুরুতর রোগে আক্রান্ত নন ।
মুম্বইয়ের CAMA এবং ALBLESS হাসপাতালের হিউম্যান মিল্ক ব্যাঙ্কিং কী ?
2008 সালে এটি শুরু হয়েছিল । তারপর থেকে এখনও পর্যন্ত এখান থেকে 15261 টি বিপন্ন শিশুকে দুধ সরবরাহ করা হয়েছে । এদের মধ্যে আবার 6000 টি শিশু নিওনেটাল ইনটেনসিভ কেয়ার (NICU) এ চিকিৎসাধীন ছিল ।
হিউম্যান মিল্ক ব্যাঙ্ক থেকে পাওয়া দুধের মাধ্যমে সদ্যোজাত শিশুদের মৃত্যু ও অসুস্থতা কমতে শুরু করেছে ৷ NICU - তে প্রিটার্ম ও কম ওজন নিয়ে জন্মানো শিশুদের বেঁচে থাকার মেয়াদ বেড়ে গেছে । NICU থেকে শিশুদের তখনই ছাড়া হচ্ছে যখন দেখা যাচ্ছে, তাদের ওজন 1.8 কেজির থেকে বেশি হচ্ছে । এটাই সদ্যোজাত শিশুদের বেঁচে থাকার সুনিশ্চিত হওয়ার মাপকাঠি ।