দিল্লি, 29 সেপ্টেম্বর: উত্তর ভারতে শুরু হয়ে গিয়েছে ফসল তোলার মরশুম । এই সময় উত্তর ভারতের বহু জায়গায় বিঘার পর বিঘা জমি সাফ করতে পোড়ানো হয় খড় । এতেই মারাত্মকভাবে পরিবেশ দূষণ হয় । বিষয়টির বিরোধিতায় দীর্ঘদিন ধরেই প্রতিবাদ-বিক্ষোভ চলে আসছে । এই বিষয়ে আলোচনা করতে 1 অক্টোবর পরিবেশ এবং কেন্দ্রীয় দূষণ মন্ত্রকের (CPCB-Central Pollution Control Board) সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে করবেন পঞ্জাব, হরিয়ানা, দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ এবং রাজস্থানের পরিবেশ মন্ত্রীরা ।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভরেকর জানান, " 2016 সাল থেকে এই পাঁচটি রাজ্যে দূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য আমরা সবরকম পদক্ষেপ করছি ।" এই বছর 1 অক্টোবর কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রী বায়ু দূষণ ও খড় পোড়ানো সম্পর্কিত বৈঠকটি করবেন । বৈঠকে অংশ নেবেন পঞ্জাব, হরিয়ানা, দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ এবং রাজস্থানের উচ্চ পদস্থ সরকারি আধিকারিক-মন্ত্রী, CPCB ও অন্যান্য সংস্থার সদস্যরা। প্রকাশ জাভরেকর জানান, "2016 সাল থেকে বিষয়টির উপর আমরা কাজ শুরু করছি । আমরা বিভিন্ন এজেন্সিকে এই সম্বন্ধীয় ছোটো, মাঝারি ও বড় প্ল্যান তৈরি করতে বলা হয়েছিল । সেই প্ল্যান অনুসারে কাজ শুরুও হয়ে গিয়েছে । এবছর প্ল্যানগুলিকে পুনরায় পর্যালোচনা করা হবে ।"
শনিবার (26 সেপ্টেম্বর) দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল জাভরেকরকে লেখা একটি চিঠির মাধ্যমে খড় পোড়ানোর বিষয়টি ফের মনে করান । লেখেন কিছু দিনের মধ্যেই খড় পোড়ানোতে ফের মারাত্মকভাবে বায়ু দূষণ শুরু হবে । দূষণ মোকাবিলায় দ্রুত ভারতীয় কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (IARI) হস্তক্ষেপের প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন কেজরিওয়াল । সাংবাদিক বৈঠকে প্রকাশ জাভরেকর বলেন, “এই দূষণের প্রভাব শুধুমাত্র দিল্লিতে পড়বে তাই নয় । একই সমস্যা রয়েছে হরিয়ানা, পঞ্জাব, ইউ পি, রাজস্থানেও । এই রাজগুলিতেও খড় পোড়ানোয় বায়ু দূষিত হয় ।"
21 থেকে 25 সেপ্টেম্বরের মধ্যে পঞ্জাবে 297টি খড় পোড়ানোর ঘটনা সামনে এসেছে । এদিকে খড় পোড়ানোর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে । কিন্তু নিয়মের তোয়াক্কা না করেই অনেক চাষি খড় পোড়ান । তাঁদের যুক্তি, এই বিষয়ে প্রশাসনের তরফে কোনও সহযোগিতা পাওয়া যায় না । তাই খামার পরিষ্কার করতে ফসলের অবশিষ্টাংশ পুড়িয়ে দেওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় থাকে না ।
গত সপ্তাহে দূষণ সম্বন্ধীয় একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছিল CPCB । সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে , দেশজুড়ে টানা লকডাউন চলাকালীন যান চলাচল কমে যাওয়ায় নজিরবিহীনভাবে হ্রাস পেয়েছিল দূষণের পরিমাণ । এখন আবার আশঙ্কা করা হচ্ছে খড় পোড়ানোর ফলে বাতাসে ফের দূষণের মাত্রা বাড়তে পারে । কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানান, CPCB- র 50টি প্রতিনিধি দল বিভিন্ন জায়গা পরিদর্শন করেছে । 15 অক্টোবর থেকে পরিস্থিতি মূল্যায়ণ করবে । আগামী বৈঠকটিতে গত দুই বছরে তাদের কাজের পর্যালোচনা করা হবে ।"