পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ডোভাল-ওয়াং ই আলোচনা; ভারত-চিন সীমান্তে বিশেষ প্রতিনিধিদের কথা শুরু

By

Published : Jul 7, 2020, 7:43 PM IST

রবিবারের আলোচনা গুরুত্ব পায় কারণ সীমান্ত সংঘাত নিয়ে ডোভাল ও ওয়াং ই-কে সিনিয়র রিপ্রেজেন্টেটিভ নিযুক্ত করা হয়েছিল ৷

ডোভাল-ওয়াং ই আলোচনা; ভারত-চিন সীমান্তে বিশেষ প্রতিনিধিদের কথা শুরু
ডোভাল-ওয়াং ই আলোচনা; ভারত-চিন সীমান্তে বিশেষ প্রতিনিধিদের কথা শুরু

ভারত জানিয়েছে LAC-কে যথাযথ সম্মান দিতে হবে, চিন বলেছে তারা তাদের আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষা করবে ৷

প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার পর কেটে গেছে আট সপ্তাহ ৷ গালওয়ান উপত্যকায় চিনা PLA-র সঙ্গে লড়াইয়ের জেরে প্রাণ হারিয়েছেন 20 জন ভারতীয় জওয়ান ৷ তার পরও এক সপ্তাহ কেটে গেছে ৷ অবশেষে 15 জুন রাতে কিছু সংখ্যক সেনা সরানোর কাজ শুরু হয়েছে ৷ সীমান্ত আলোচনার জন্য নিযুক্ত দুই পক্ষের বিশেষ প্রতিনিধিদের মধ্যে কথা হওয়ার একদিন পর সেনা কমানো শুরু হয়েছে ৷ নিশ্চিত করা হয়েছে বিদেশ মন্ত্রকের তরফে ৷ সূত্রের খবর, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল এবং স্টেট কাউন্সিলর ও চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই 5 জুলাইয়ের রাতে প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে নিজেদের মধ্যে টেলিফোনে কথা বলেন ৷ লাদাখের পশ্চিম সেক্টর নিয়ে তাঁদের মধ্যে ‘খোলামেলা ও গভীর আলোচনা’ হয় ৷ গালওয়ানের সংঘর্ষ হওয়ার পর গত মাসে বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর ও ওয়াং ই-র মধ্যে ফোনে কথা হয় ৷ দুজন পরে Covid-19 সংক্রান্ত সহযোগিতা নিয়ে গঠিত RIC (রাশিয়া-ভারত-চিন) ফ্রেমওয়ার্কের একটি ভার্চুয়াল বৈঠকেও হাজির ছিলেন ৷ যদিও LAC নিয়ে দ্বিপাক্ষিক সংঘাত RIC-র বিষয়বস্তুর অংশ নয় ৷

রবিবারের আলোচনা গুরুত্ব পায় কারণ সীমান্ত সংঘাত নিয়ে ডোভাল ও ওয়াং ই-কে সিনিয়র রিপ্রেজেন্টেটিভ নিযুক্ত করা হয়েছিল ৷ বেজিংয়ের বর্তমান সরকারের শ্রেণিবিন্যাস অনুযায়ী, স্টেট কাউন্সিলরের পদমর্যাদা বিদেশমন্ত্রীর থেকেও উপরে ৷ ডোভালের আগে ইয়াং জেইচি আলোচনা চালাতেন ৷ যিনি চিনা স্টেট কাউন্সিলর ছিলেন এবং 2017 সাল পর্যন্ত সিনিয়র রিপ্রেজেন্টেটিভ ছিলেন ৷ ওয়াং ই তখন শুধুই বিদেশমন্ত্রী ছিলেন ৷ ভারত এখন ইঙ্গিত দিয়েছে যে শীর্ষস্তরের কূটনৈতিক আলোচনা করার জন্য বিশেষ প্রতিনিধির চ্যানেলটি নতুন করে খুলতে চায় ৷ আধিকারিকদের থেকে জানা গেছে, মতভেদ কখনও সংঘাতে পরিণত হওয়া উচিত নয় ৷ এই নিয়ে দুই পক্ষই সহমত হয়েছে ৷ ভারত-চিন সীমান্তে শান্তি ও স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে দুই দেশের শীর্ষ রাজনৈতিক নেতাদের ঐক্যমতের বিষয়টিও জোর দেওয়া হয়েছে ৷ ভারত সরকারের একটি আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "LAC থেকে যত দ্রুত সম্ভব বাহিনী সরানো এবং ভারত-চিন সীমান্তে শান্তি ও স্থিতাবস্থা ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে তাঁরা সহমত হয়েছেন ৷ এই জন্যই দুই পক্ষ সহমত হয়েছেন যে LAC থেকে সেনা সরানোর এই প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করা হবে ৷" ভারতের আধিকারিকদের থেকে জানা গিয়েছে যে দুজন সিনিয়র রিপ্রেজেন্টেটিভ ভারত-চিন সীমান্ত থেকে "পর্যায়ক্রমে এবং ধাপে ধাপে সেনা সরানোর" প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ৷ এর আগে সেনা পর্যায়ের একাধিক বৈঠকে এই বিষয়ে সহমত পোষণ করা হয়েছিল ৷

কর্পস কমান্ডার পর্যায়ের আলোচনায় পূর্ব লাদাখ থেকে ধাপে ধাপে সেনা সরানোর বিষয়ে সহমত হওয়া গিয়েছিল বলে খবর পাওয়া যায় ৷ তার পাঁচদিন পর আনুষ্ঠানিকভাবে দেওয়া সরকারি বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, "দুই পক্ষই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখাকে মেনে চলবে এবং যথাযথ সম্মান দেবে ৷ স্থিতাবস্থা বিঘ্নিত করার জন্য এক তরফাভাবে কোনও সিদ্ধান্ত নেবে না ৷ সীমান্ত এলাকার শান্তি ও স্থিতাবস্থা বিঘ্নিত হতে পারে এমন কোনও ঘটনা ভবিষ্যতে এড়িয়ে যাওয়া হবে এবং এক সঙ্গে কাজ করা হবে ৷"

চিনের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে যে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়েছে, তাতে সীমান্ত অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতাবস্থা বজায় রাখার বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছে এবং এশিয়ার দুই প্রতিবেশীর একই চাহিদার উপর ভিত্তি করে দীর্ঘমেয়াদী কৌশলগত সম্পর্ক বজায় রাখার কথা বলা হয়েছে ৷ কিন্তু LAC "যথাযথ সম্মান দেওয়ার" কথা উল্লেখ করা হয়নি ৷ এর বদলে চিনের বিবৃতি কার্যত ঘুরিয়ে গালওয়ান উপত্যকার সংঘর্ষের জন্য ভারতীয় সেনা জওয়ানদেরই দায়ী করা হয়েছে ৷ বেজিংয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "সীমান্তের পশ্চিম অংশে গালওয়ান উপত্যকায় ভারত ও চিনের মধ্যে যা হয়েছে, তা খুবই স্পষ্ট ৷ চিন তাদের আঞ্চলিক সার্বভৌমত্ব, সীমান্ত এলাকা এবং শান্তি রক্ষা করে চলবে ৷"

ভারত ও চিনের তরফে কূটনৈতিক এবং সেনাস্তরের আলোচনায় সহমত প্রকাশ করা হয়েছে ৷ এর মধ্যে ওয়ার্কিং মেকানিজম ফর কনসালট্যান্ট অ্যান্ড কোর্ডিনেশন অন ইন্ডিয়া-চায়না বর্ডার অ্যাফেরার্স (WMCC) মোতাবেক তৈরি হওয়া ফ্রেমওয়ার্কও রয়েছে ৷ ভারতের এক আধিকারিক বলেন যে দুজন SR নিজেদের আলোচনায় এই বিষয়ে সহমত হন যে "উপরের ফলাফলে সঠিক সময়ে পৌঁছতে এই বোঝাপড়াকে কার্যকর করা হবে" ৷ MEA-র বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, "দ্বিপাক্ষিক চুক্তি ও প্রোটোকল অনুযায়ী ভারত-চিন সীমান্তে শান্তি ও স্থিতাবস্থা পুরোপুরি আগের পরিস্থিতিতে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে দুই বিশেষ প্রতিনিধি তাঁদের আলোচনা চালিয়ে যাবেন বলে এই বিষয়েও সহমত হওয়া গিয়েছে ৷"

ABOUT THE AUTHOR

...view details