বীড (মহারাষ্ট্র), 13 সেপ্টেম্বর : ভাঙল চিরাচরিত প্রথা ৷ ছেলেরা নয় ৷ শাশুড়ির মরদেহ কাঁধে করে শ্মশানে নিয়ে গেলেন চার বউমা ৷ কার্যত এই দৃশ্যে হতবাক উপস্থিত সকলেই ৷ বউমাদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ সবাই ৷
বার্ধক্যজনিত কারণে বেশকয়েকদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন সুন্দরবাঈ দাগ্গু নাইওয়াদে (83) ৷ সোমবার মৃত্যু হয় তাঁর ৷ বাড়িতে রয়েছেন তাঁর দুই পুত্র, দুই সৎ পুত্র, চার পুত্রবধূ ও নাতি-নাতনিরা ৷ বাড়ির সবাই যখন সুন্দরবাঈয়ের শেষযাত্রার আয়োজন করতে ব্যস্ত তখন চার পুত্রবধূ ঠিক করেন, তাঁরাও কিছু করবেন ৷ তাঁরাই শাশুড়ির মরদেহ কাঁধে করে শ্মশানে নিয়ে যাবেন ৷ কারণ তাঁদের কাছে শাশুড়ি ছিলেন নিজের মায়ের মতোই ৷ তাই ছেলেরা নয়, শাশুড়ির মৃত্যুতে নিজেরাই কাঁধ দেবেন বলে সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা ৷ প্রথমে মৃদু আপত্তি দেখিয়েছিলেন আত্মীয়-স্বজন, পাড়াপড়শিরা ৷ কিন্তু পরে তাঁদের এই কর্তব্যপরায়ণতা ও জেদের কাছে হার মানেন সকলে ৷
চোখের জল মুছে, মনকে শক্ত করে এগিয়ে আসেন তাঁরা৷ তাঁদের নাম লতা নভনাথ নাইকওয়াদে, উষা রাধাকিষাণ নাইকওয়াদে, বৃদ্ধার দুই সৎ ছেলের স্ত্রী মনীষা জলিন্দার নাইকওয়াদে এবং মিনা মাচ্ছিন্দ্রা নাইকওয়াদে ৷ কাঁধে খাট নিয়ে তাঁরাই এগিয়ে যান শ্মাশানের দিকে ৷ এই দৃশ্য নজর কাড়ে পথচলতি মানুষেরও ৷
না, শুধু চোখের জল নয় ৷ আবেগকে সামলে কর্তব্যপরায়ণাতে অবিচল থাকলেন বউমারা ৷ শাশুড়ির প্রতি এই ভালোবাসা দেখে প্রশংসায় পঞ্চমুখ আত্মীয়-স্বজন থেকে পাড়া প্রতিবেশী ৷ প্রথা ভেঙে চার পুত্রবধূর এহেন এগিয়ে আসাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সকলেই ৷
মৃত্যুর আগে বৃদ্ধার শেষ ইচ্ছা ছিল চক্ষুদান করা ৷ তাঁর স্বামীও মৃত্যুর আগে মরণোত্তর চক্ষুদান করেছিলেন ৷ বৃদ্ধার ছেলে নভনাথ ডি নাইকওয়াদে বলেন, "মৃত্যুর আগে থেকে মা মরণোত্তর চক্ষুদানের ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিলেন ৷ আমরা মায়ের ইচ্ছা পূরণ করেছি ৷ আমাদের বাবার মৃত্যু হয় 2013 সালে৷ তিনিও মরণোত্তর চক্ষুদান করেছিলেন ৷"