পোর্ট ব্লেয়ার, 12 মে: বিশ্বজুড়ে তখন কোভিডের চোখরাঙানি ৷ সঙ্গে রয়েছে প্রকৃতির রোষ ৷ সময়টা 2021 সাল ৷ মারণ ভাইরাস যাতে বিপন্ন আদিম প্রজাতিকে ধুয়ে মুছে সাফ করে দিতে না পারে, সে জন্য তিরুর দ্বীপে যেতে হয়েছিল 49 বছর বয়সি নার্স শান্তি তেরেসা লাকড়াকে ৷ ঘূর্ণিঝড়ের জোয়ারে যখন সমুদ্র উত্তাল, তখন প্রাণ হাতে করে ছোট একটি ডিঙিতে চড়ে জারোয়া উপজাতিকে টিকা দিতে গিয়েছিলেন জিবি পান্ট হাসপাতালের নার্স ৷ আজ তিনি মর্যাদাপূর্ণ গ্লোবাল নার্সিং অ্যাওয়ার্ড 2023-এর দাবিদার ৷
দুই বছর আগে জারোয়াদের টিকাকরণ অভিযানে যে মেডিক্যাল টিম গিয়েছিল, তার নেতৃত্বে ছিলেন শান্তি তেরেসা লাকড়া ৷ ছিন্নভিন্ন সমুদ্রের মধ্যে দিয়ে সফর করার সময় তাঁদের ডিঙিটি আন্দামান সাগরে ঝড়ের কবলে পড়ে ৷ তখন শান্তি একবার ভেবেছিলেন যে আর হয়তো বাড়ি ফেরা হবে না । লন্ডন থেকে পিটিআই-কে শান্তি জানিয়েছেন, "সমুদ্র অস্বাভাবিক রুক্ষ ছিল এবং আমরা ভেবেছিলাম যে সবাই ডুবে যাবে…কিন্তু ঈশ্বরের ইচ্ছা ছিল অন্যরকম এবং আমরা সফলভাবে জারোয়াদের কাছে পৌঁছতে এবং টিকা দিতে সক্ষম হই । মহামারি চলাকালীন তাঁদের যে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে, তাও আমরা তাঁদের বোঝাতে সক্ষম হয়েছি ৷"
বাইরের জগতের সঙ্গে জারোয়াদের যোগাযোগ প্রায় নেই বললেই চলে ৷ ফলে কোভিডের জন্য তাঁরা বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়েছিল ৷ কারণ খুব কম চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছয় এই উপজাতির কাছে ৷ বছরের পর বছর ধরে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের আদিম উপজাতিদের প্রতি শান্তির নিবেদিত পরিষেবার এ বার প্রতিফলন ঘটেছে ৷ বিশ্বব্যাপী নার্সিং কর্মীদের সম্মানিত করা এস্টার গার্ডিয়ানস গ্লোবাল নার্সিং অ্যাওয়ার্ড 2023-এর সেরা দশ 10 ফাইনালিস্টের তালিকায় নির্বাচিত হয়েছেন শান্তি ৷ 2004 সালে প্রথম প্রচারের আলোয় আসেন তিনি ৷ বিধ্বংসী সুনামির ধ্বংসলীলার পর ওঙ্গে উপজাতির ত্রাণ ও সহায়তায় ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন তিনি ৷