নয়াদিল্লি, 14 মে: নবজাতকের শিরদাঁড়ায় আঘাত ছিল ৷ সেই চোট-মুক্তি ঘটল বিরল অস্ত্রোপচারে ৷ সেই সময় শিশুটির বয়স ছিল মাত্র 6 মাস ৷ কার্যত অসম্ভবকে সম্ভব করেছে দিল্লির এইমস ৷ কোনও রকম ধাতব রড দিয়ে নয়, মায়ের শরীর থেকে বোন গ্রাফট সংগ্রহ করে তা ওই শিশুর শিরদাঁড়ায় প্রতিস্থাপন করেন চিকিৎসকেরা ৷ এশিয়ায় প্রথম এত কম বয়সি শিশুর শিরদাঁড়ায় এমন অস্ত্রোপচার হল ৷ বিশ্বে স্পাইন ফিক্সেশন সার্জারির নিরিখে এই শিশুটি দ্বিতীয় কনিষ্ঠ ৷
এইমস-এর চিকিৎসক ডাঃ দীপক গুপ্তা জানান, একটি হাসপাতালে শিশুটির স্বাভাবিক প্রসব হয় ৷ তখনই কোনও ভাবে তার শিরদাঁড়া এবং ব্রাকিয়াল প্লেক্সাসে চোট লাগে ৷ ব্রাকিয়াল প্লেক্সাসের স্নায়ুর নেটওয়ার্ক বলা যায় ৷ এর মাধ্যমে শিরদাঁড়া থেকে হাত, পায়ের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন হয় ৷ শিশুটির ওজন ছিল 4.5 কেজি ৷ সদ্যোজাতকে অক্সিজেন সাপোর্টে রাখা হয়েছিল ৷ সে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয় ৷
2022 সালের মে মাসে শিশুটিকে এইমসে আনা হয় ৷ তখন তার বয়স 5 মাস ৷ তার মধ্যে ছিল শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা ৷ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে হাত-পা নাড়াচাড়া করতে পারত না ৷ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানা গেল শিশুটির শিরদাঁড়ায় ক্ষতিগ্রস্ত ৷ আর সার্ভিক্যাল স্পাইন অর্থাৎ ঘাড়ের কাছে হাড়গুলিও সরে গিয়েছে ৷ একে সার্ভিক্যাল স্পনডিলোপটোসিস বলে ৷ তখনই জরুরি ভিত্তিতে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা ৷
এইমসে শিশুকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয় ৷ তার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিয়ে এক দল গঠিত হয় ৷ এই দলের অন্যতম সদস্য ডাঃ দীপক গুপ্তা ৷ তিনি জানান, কোনও ধাতব বস্তু দিয়ে এত কম বয়সি শিশুর শিরদাঁড়া ঠিক করাটা প্রায় অসম্ভব ছিল ৷ কারণ তাদের হাড়ের আকার খুব ছোট । পাশাপাশি সেগুলি খুবই নরম ৷ মায়ের সঙ্গে কথা বলা হয় ৷ তিনি সন্তানের জন্য তাঁর হাড়ের অংশ দিতে রাজি হন ৷ এদিকে মায়ের রক্ত বি পজিটিভ ৷ শিশু সন্তানের এ পজিটিভ ৷ কিন্তু তা কোনও বাধা হয়নি ৷