দার্জিলিং, 6 মে: গরমের ছুটি মানেই হল একটু পাহাড় ভ্রমণ। তীব্র গরমে যদি কনকনে ঠান্ডার আমেজ আর অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে হয় তাহলে যেতেই হবে এই পাহাড়ি গ্রামে। কাঠের ঘর, তার বারান্দায় দাঁড়িয়ে মেঘের খেলা দেখতে দেখতে গরম চায়ের পেয়ালায় ঠোঁট ছোঁয়ানোর আমেজটাই আলাদা। তাই আর দেরি না-করে চলে আসুন কালিম্পংয়ের রামধুরায়।
পাহাড়-জঙ্গল তো অনেকেই ঘুরেছেন। কিন্তু রামপুরিয়া ফরেস্ট কি গিয়েছেন কখনও? অথচ ঘরের কাছেই রয়েছে এই জায়গা। দার্জিলিংয়ের কাছেই এই রামপুরিয়া ফরেস্ট। মিরিক, গোপাদারা টি-গার্ডেন হয়ে সেখানে পৌঁছতে হয়। এই জঙ্গলের গায়েই রয়েছে ছোট ছোট পাহাড়ি গ্রাম। তারমধ্যেই একটি হল রামপুরিয়া। সিঞ্চল ফরেস্ট রিজিয়নের মধ্যে পড়ে এই রামপুরিয়া ফরেস্ট ভিলেজ। পাহাড়ের জঙ্গলে মোড়া এই গ্রাম এখনও অনেক পর্যটকদের কাছেই একেবারে অচেনা জায়গা। কাজেই একেবারে নির্ভেজাল ছুটি কাটানোর আদর্শ জায়গা এটি।
হোম-স্টে'র বারান্দায় বসে উপভোগ করুন মেঘ-কুয়াশার চাদরে মোড়া অসামান্য সবুজ-পাহাড়ের সৌন্দর্য। মানে একেবারে নিছক ফ্যামিলি টাইম কাটাতে চাইলে নাগালের মধ্যে এর থেকে ভালো জায়গা হয়তো আর নেই! এখান থেকে দার্জিলিংয়ের দূরত্বও খুব বেশি নয়। দার্জিলিংয়ের মতো জমজমাট ভিড় এড়িয়ে একটু নিরিবিলি জায়গায় থাকার মজাই আলাদা! বিশেষ করে এই অসহনীয় গরমে যখন জেরবার দশা হয়েছে দক্ষিণবঙ্গের বাসিন্দাদের, সেখানে এই জায়গা পর্যটকদের কাছে স্বপ্নময় শীতল ছুটির ঠিকানা। একেবারে নিরিবিলি পাহাড়ি গ্রামের পরিবেশ এখানে পাবেন।
- রামধুরা ফরেস্টে কীভাবে যাবেন? এনজেপি (নিউ জলপাইগুড়ি) রেল স্টেশন কিংবা বাগডোগরা বিমানবন্দর থেকে জোরবাংলো হয়ে এখানে আসা যায়। শেয়ারের ভাড়া গাড়িতে এসে সেখান থেকে ছয় মাইল হয়ে এই রামপুরিয়া চলে আসতে পারেন। আবার সরাসরি শিলিগুড়ি থেকে গাড়িতেও এই রামপুরিয়াতে আসা যায়। শিলিগুড়ি জংশন থেকে শেয়ারের গাড়ি পাওয়া যায়। শেয়ার গাড়িতে গেলে মাথাপিছু খরচ 700 টাকা করে। আর গাড়ি রিজার্ভ করলে খরচ পড়েবে 5 হাজার 800 টাকা থেকে 6 হাজার 500 টাকার মধ্যে ৷
- কোথায় থাকবেন? রামপুরিয়া ফরেস্ট ভিলেজ এলাকায় বেশ কিছু ছোট ছোট হোম-স্টে রয়েছে। হানিমুন কাপলদের জন্য আদর্শ জায়গা এটি। ডবল বেডের একটি রুমের ভাড়া 1200 টাকা। ডিলাক্স রুম নিলে ভাড় পড়বে 1500 টাকা।
- কী খাবেন? এখানে একেবারে ঘরোয়া পরিবেশে থাকা খাওয়ার আয়োজন থাকে। একেবারে অরগ্যানিক খাবারদাবার খেতে পারবেন এখানে। কাজেই একেবারে স্বাস্থ্যকর খাবার। পাহাড়ি রান্নার স্বাদ নিতে উপভোগ করতে পারবেন এখানে। পাহাড়ের বাহারি আচার, তিতোরা মিলবে এখানে। রাইশাক, মুলার চাটনি, পর্ক। সঙ্গে চিকেন, মটন, টার্কি তো আছেই। রয়েছে বারবিকিউয়ের ব্যবস্থা। তবে তার চার্জ আলাদা 600 টাকা করে।
- সাইট সিন-এখান থেকে মাত্র 40 মিনিটের মধ্যে টাইগার হিল পৌঁছে যাওয়া যায়। কাজেই টাইগার হিলে সূর্যোদয় দেখতে হলে যে দার্জিলিংয়েই থাকতে হবে, এমন কোনও কথা নেই। এখান থেকেও যেতে পারেন। যাঁরা ট্রেকিং করে যেতে চান, তাঁরাও এখানে থাকতে পারেন। সঙ্গে আছে সিলেরি গাঁও, কোলাখাম, রেশিখোলা, রাচেলা পিকের মতো জায়গায় সাইট সিন করতে পারবেন এখান থেকেই।
আরও পড়ুন: