হায়দ্রাবাদ এলপিজি: তরল পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) সিলিন্ডার প্রতি ঘরে ব্যবহৃত হয় ৷ প্রায়শই শোনা যায় অবসাবধানতার কারণে কত দুর্ঘটনা ঘটে ৷ প্রাণহানির ঘটনাও ঘটে থাকে ৷ রান্নার গ্যাস ব্যবহারের সময় অত্য়ন্ত সচেতন ও সজাগ থাকা প্রয়োজন ৷ দুর্ঘটনা থেকে রেহাই পেতে কী কী সাবধানতা অবলম্বন প্রয়োজন সেই সম্পর্কিত তথ্য বিস্তারিত রইল প্রতিবেদনে ৷
কৌতুহল হতে পারে এলপিজি বা তরল পেট্রোলিয়াম গ্যাস কীভাবে সৃষ্টি হয় ৷ এটিতে কী কী প্রাকৃতিক উপাদান থাকে ৷ এটার অন্যান্য উপদানগুলো কী ৷
1. কম্পোজিশন: এলপিজি হল প্রোপেন এবং বিউটেনের মিশ্রণ ৷ যা সামান্য পরিমাণে হাইড্রোকার্বন। সাধারণত, এলপিজি-তে 30-70% প্রোপেন এবং 30-70% বিউটেনের মিশ্রণ। এলপিজি বর্ণহীন, বিষাক্ত নয় এবং বাতাসের চেয়ে ভারী কিন্তু জলের চেয়ে হালকা গ্যাস।
2. তরলীকরণ: এলপিজি চাপে তরলীকৃত হয়, যা পরিবহণ এবং সংরক্ষণ করা সহজ হয় ৷
3. ঘনত্ব: এলপিজিতে উচ্চশক্তির ঘনত্ব রয়েছে, ফলে জ্বালানীতে সাহায্য করে ৷
4. ক্লিন-বার্নিং: এলপিজি-তে ধোঁয়া কম নির্গত হয় ৷ বলা যায় প্রচলিত জীবাশ্ম জ্বালানির চেয়ে কম দুষিত করে বায়ু ৷
5. বহুমুখীতা জ্বালানী: এলপিজি রান্না করা, গাড়ি চালানো-সহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা যায় ৷
6. বিশ্বব্যাপী উপলব্ধতা: এলপিজি সহজলভ্য। প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী 270 মিলিয়ন টনেরও বেশি এলপিজি উত্পাদিত হয়।
7. নিরাপত্তা: স্বয়ংক্রিয় শাট-অফ ভালভের মতো অন্তর্নির্মিত সুরক্ষা বৈশিষ্ট্য-সহ, সঠিকভাবে পরিচালনা করা হলে এলপিজি অত্যন্ত নিরাপদ জ্বালানী। অসাবধান হলে ঝুঁকি থেকেই যায়।
8. অর্থনৈতিক: এলপিজি লাভজনক ও বিকল্প জ্বালানী হিসেবে, বিশেষ করে রান্না-সহ অন্যান্য কাজে ব্যবহার করা যায়।
9. পরিবেশগত সুবিধা: এলপিজি প্রচলিত জীবাশ্ম জ্বালানির তুলনায় কম গ্রীনহাউস গ্যাস নির্গত করে। এটিকে পরিবেশের কোনও ক্ষতি করে না ৷
10. ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা: এই গ্যাস থেকে কম কার্বন নির্গমন হয় ৷ ফলে জীব জগতের ক্ষতিও কম হয় ৷
এটা না-হয় এলপিজির উৎপাদন কীভাবে হয় সেটা না হয় জানলেন, এবার রান্নার গ্যাল সিলিন্ডার ব্যবহারের সময় কী কী সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে তা উল্লেখ করা হল ৷ প্রশ্ন হল আপনি বাড়িতে সুরক্ষিত উপায়ে কীভাবে ব্যবহার করবেন এলপিজি সিলিন্ডার ?
- নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ অত্যন্ত জরুরি
পাইপে কোনও লিক আছে কিনা নির্দিষ্ট সময় অন্তর পরীক্ষা করা প্রয়োজন ৷
সিলিন্ডারের অংশগুলি ভালো অবস্থায় রয়েছে কি না সেটা দেখা প্রয়োজন ।
সিলিন্ডারে রেগুলেটর লাগনোর সময় তা ভালো করে দেখে নেওয়া দরকার ৷
এলপিজি ব্যবহারের জন্য কোম্পানির নির্দেশাবলী অনুসরণের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
- নিরাপদ রান্নার অভ্যাস
রান্নার সময়ে গ্যাস তৈরি হওয়া রোধ করতে ভালো বায়ু চলাচলের সুবিধা আছে কী দেখে নেওয়া দরকার।
রান্নার সময় যতটা সম্ভব রান্নাঘরে থাকার চেষ্টা করুন।
বার্নার ব্যবহার সময়েও সাবধান হওয়া দরকার ৷
কোনও কারণে সিলিন্ডার লিক হয়ে অগ্নিকাণ্ডের সম্ভাবনা তৈরি হলে দ্রুত সেটি বন্ধ করুন ৷ জানালা খুলে দিন এবং বেরিয়ে আসুন রান্নাঘর থেকে।
সম্ভব হলে ঘরে ব্যবহারের জন্য অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র রাখুন রান্নাঘরে ৷ এটি নিয়মিত পরীক্ষা করে দেখে নিন ঠিক আছে কি না।
সিলিন্ডারগুলিকে আগুনের কাছ থেকে দূরে রাখুন, যাতে ভালো বায়ুচলাচল হয় সেই দিকে লক্ষ্য রাখুন ৷
রান্না করার সময় জ্বালানি ফুরিয়ে যাওয়া এড়াতে আগে থেকে বোঝার চেষ্টা করুন সিলিন্ডার কতটা খালি হয়েছে ৷
এই সুরক্ষা ও ব্যবস্থাগুলি অনুসরণ করে, রান্নার সময় এলপিজি ব্য়বহারের বিপদ থেকে নিজেকে বাঁচাতে পারবেন ৷ আপনার প্রিয়জনকে রক্ষা করতে পারেন।