মালদা, 29 অগস্ট: এখনও বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে গঙ্গা ৷ এখনও প্লাবিত ভূতনি চর ৷ চরের তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার লাখখানেক মানুষ জলবন্দি ৷ যোগাযোগ ব্যবস্থাও বিপর্যস্ত ৷ নৌকা ছাড়া অনেক গ্রামেই এখন পৌঁছোনো যাচ্ছে না ৷ এই পরিস্থিতিতে নদীতে তলিয়ে গিয়েছেন এক যুবক ৷ বুধবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে মানিকচক ঘাটে ৷ রাত থেকেই তাঁকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে ৷ কিন্তু এখনও পর্যন্ত তাঁকে উদ্ধার করা যায়নি ৷
তলিয়ে যাওয়া ওই যুবকের নাম অজিত মণ্ডল ৷ বয়স 30 বছর ৷ বাড়ি মানিকচকের নওয়াদিয়াটোলায় ৷ পেশায় ভ্যানচালক তিনি ৷ সারাদিন কাজের শেষে রাতে গঙ্গায় স্নান করতে গিয়েছিলেন তিনি ৷ এখন নদীতে প্রচুর জল৷ রয়েছে চোরা স্রোতও ৷ স্থানীয়দের ধারণা, সম্ভবত তেমনই কোনও চোরা স্রোতের মধ্যে পড়ে যান অজিত ৷ তাই সাঁতার জানলেও তিনি নদী থেকে উঠে আসতে পারেননি ৷ চোরা স্রোত তাঁকে জলের আরও নীচে নিয়ে যায় ৷
এই খবর পেয়েই রাতে মানিকচক ঘাটে যান তৃণমূল যুব কংগ্রসের জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ মণ্ডল ৷ তিনিই বিপর্যয় মোকাবিলা টিমকে খবর দেন ৷ খবর দেন বিডিও-সহ জেলাশাসককেও ৷ রাত 11টা নাগাদ রাজ্য সরকারের বিপর্যয় মোকাবিলা টিমের সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন ৷ অজিতের খোঁজে রাতেই তাঁরা গঙ্গায় তল্লাশি শুরু করেন ৷ কিন্তু অজিতের সন্ধান পাওয়া যায়নি ৷ বৃহস্পতিবার সকাল থেকেও অজিতের খোঁজে নদীতে তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছেন ওই টিমের সদস্যরা ৷
বিশ্বজিৎ মণ্ডল বলেন, “ঘটনাটি মর্মান্তিক ৷ তলিয়ে যাওয়া যুবক পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ৷ তিনি ভ্যান চালাতেন ৷ গতকাল রাতে স্নান করতে ভরা গঙ্গায় নেমে তলিয়ে দিয়েছিলেন ৷ খবর পেয়ে রাতেই আমি ওই এলাকায় চলে যাই ৷ বিপর্যয় মোকাবিলা টিম গভীর রাত পর্যন্ত নদীতে তল্লাশি চালিয়েও অজিতের দেহ উদ্ধার করতে পারেনি ৷ আজ সকাল থেকে ফের তল্লাশি শুরু হয়েছে ৷’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘ভরা নদীতে অজিতের দেহ যাতে ভেসে অন্য কোনও জায়গায় না যেতে পারে, তার জন্য যুব তৃণমূলের তরফে কালিয়াচক 2 নম্বর ব্লকের পঞ্চানন্দপুর, মানিকচক ব্লকের গোপালপুর, রতুয়া 2 নম্বর ব্লকের মহারাজনগর-সহ কালিয়াচক 3 নম্বর ব্লক এলাকায় নদীতে নজর রাখছে চারটি মেশিন চালিত নৌকা ৷ আমরা আশা করছি, খুব তাড়াতাড়ি তাঁর দেহ উদ্ধার করা যাবে ৷”
মানিকচক থানার ভারপ্রাপ্ত আইসি সুবীর কর্মকার বলেন, “গতকাল গঙ্গায় এক যুবক তলিয়ে গিয়েছেন ৷ এখনও পর্যন্ত তাঁর দেহ উদ্ধার করা যায়নি ৷ দেহ উদ্ধারের জন্য নদীতে বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীরা তল্লাশি চালাচ্ছেন ৷”