আরামবাগ, 3 জুন: দ্রুত শেষের পথে তারকেশ্বর-বিষ্ণুপুর রেলপথ প্রকল্পের কাজ । যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আরও মসৃণ করার পাশাপাশি এই রেলপথ নির্মাণের অন্যতম লক্ষ্য হল মন্দিরনগরী বিষ্ণুপুর শহরের সঙ্গে হুগলির জনপ্রিয় শৈবক্ষেত্র তারকেশ্বরকে সংযুক্ত করা । ইতিমধ্যে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে কাজ । এই লাইনের কাজ আগামী 2025 সালে শেষ হবে বলে আশাবাদী পূর্ব-রেল কর্তৃপক্ষ ।
রাজ্যের যোগাযোগ ব্যবস্থায় আরও গতি আনতে এবং পর্যটন বাড়ানোর লক্ষ্যে তারকেশ্বর-বিষ্ণুপুর রেলপথ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার পথে নিরবচ্ছিন্নভাবে এগিয়ে চলেছে । পরিকল্পিত সার্কিট রুটের মধ্যবর্তী স্টপেজ হিসেবে থাকবে কামারপুকুর এবং জয়রামবাটি, যা শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেব এবং সারদা দেবীর স্মৃতিবিজড়িত, তথা তাঁদের জন্মস্থান ।
2001 সালে প্রাথমিকভাবে অনুমোদিত বিষ্ণুপুর - তারকেশ্বর নিউ লাইন প্রকল্পটি 87 কিলোমিটার বিস্তৃত এবং এটি কেবলমাত্র তীর্থযাত্রার সুবিধার্থেই নয়, পাশাপাশি দক্ষিণ-পূর্ব রেলওয়ে ও পূর্ব রেলওয়ের মধ্যে পণ্য পরিবহণের বিকল্প রুট হিসাবেও কাজ করবে । তবে, এত সম্ভাবনা সত্ত্বেও, প্রকল্পটি মূলত জমি জটের কারণে যথেষ্টই বিলম্বের মুখোমুখি হয় ।
কতটা এগিয়েছে এই প্রকল্পের কাজ ?
একনজরে দেখে নেওয়া যাক, কতদূর এগিয়েছে রেলের এই প্রকল্পের কাজ ৷
বড় গোপীনাথপুর থেকে জয়রামবাটি (7.1 কিমি): এই অংশে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে, মাটিখনন এবং সেতুনির্মাণের কাজ 70 শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে । বর্তমানে জয়রামবাটি স্টেশন নির্মাণের কাজ চলছে ।
জয়রামবাটি থেকে কামারপুকুর (5 কিমি): জমি অধিগ্রহণে বিলম্বের কারণে বিশেষত 2.5 কিলোমিটার অংশের কাজের অগ্রগতি বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে । তবে, সমস্যার সমাধান এবং অতিরিক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার পরে, প্রয়োজনীয় জমিটি চলতি বছরের আটই মার্চ রেল কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তরিত হয়েছে ।
কামারপুকুর থেকে গোঘাট (5.5 কিমি): 900 মিটার বিস্তৃত ভবাদিঘি অঞ্চল বাদে এই বিভাগের বেশিরভাগ বড় কাজ সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে । খুব শীঘ্রই ভাবাদিঘি সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান হবে বলেও আশা করছে রেল কর্তৃপক্ষ ।
এই বিষয়ে ইস্টার্ন রেলওয়ে সিপিআরও কৌশিক মিত্র বলেন, "কাজ চলছে তড়িঘড়ি । এলাকার মানুষজন যদি আমাদের আরও সহযোগিতা করেন তাহলে খুব ভালো হয় । 2025 সালের মধ্যেই কাজ শেষ হবে বলে আশা করা যায় ।"
এই প্রকল্পের কাজ শেষ হলে ওই অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ হবে । সারদাদেবী এবং শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের জন্মস্থানের সঙ্গে রেলপথের মাধ্যমে সহজেই যোগাযোগ সম্পন্ন করা যাবে । ফলে বিষ্ণুপুর-তারকেশ্বরের মধ্যে যোগাযোগ যেমন সহজ হবে, তেমনই তীর্যযাত্রীদের পক্ষেও কম খরচে ও কম সময়ে তারকেশ্বর, কামারপুকুর, জয়রামবাটি ও বিষ্ণুপুরের মদনমোহনকে দর্শন করা সম্ভব হবে । এই বিষয়ে 'কামারপুকুর রেল চাই' আন্দোলনকারীদের দাবি, কাজ শুরু হয়েছে । কিন্তু ভাবাদিঘির কাছে এখনও কোনও রকম কাজ শুরু হয়নি ।
2025 সালে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হলে, তারপরেই হয়ত চালু করা হবে লাইনটি । তবে এই বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়নি ভবাদিঘির মানুষদের । এখন দেখার বাস্তবে কবে এই লাইনে গড়ায় রেলের চাকা ।