মন্দিরবাজার, 26 ফেব্রুয়ারি: চার বছর আগে মৃত্যু হয়েছে মহিলার ৷ কিন্তু এখনও সচল রয়েছে তাঁর ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট । শুধু তাই নয়, প্রতিমাসে নিয়ম করেই মহিলার অ্যাকাউন্টে ঢুকছে বার্ধক্য ভাতার টাকাও । আবার রহস্যজনকভাবে সেই অ্যাকাউন্ট থেকে টাকাও তোলা হচ্ছে । যদিও মৃতের ছেলের দাবি তিনি এই টাকা তোলেলনি ৷ এমনকী টাকা সমন্ধে কিছু জানেন না ৷ তবে কী ভূতে তুলছে টাকা ? এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগে শোরগোল পড়ে গিয়েছে দক্ষিণ 24 পরগনা জেলার মন্দিরবাজারের কৃষ্ণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মাধবপুরে ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চার বছর আগে মৃত্যু হয় অনুমতি বলদিয়া নামে বছর সত্তরের বৃদ্ধার । কিন্তু এখনও পর্যন্ত সেই মৃত মহিলার নামে দুটো অ্যাকাউন্ট সচল ছিল ৷ তার মধ্যে একটি ভুয়ো এবং একটিতে প্রতিমাসে নিয়ম করে বার্ধক্য ভাতার টাকা ঢুকছে ৷ পরিবারের অজান্তে সেই টাকা তোলাও হচ্ছে বলে অভিযোগ । যদিও এই গোটা ঘটনার পেছনে শাসকদল তৃণমূলেরই মদত রয়েছে বলে অভিযোগ করছে অনুমতি বলদিয়ার পরিবার ।
অনুমতি বলদিয়ার ছেলে সঞ্জীবন বলেন, "আমার মায়ের দুটি রাষ্ট্রত্ত্ব ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট রয়েছে । মায়ের জীবনদশায় বার্ধক্য ভাতা একটি রাষ্ট্রত্ত্ব ব্যাংকে অ্যাকাউন্টে ঢুকতো । কিন্তু আমার মায়ের 2020 সালে মৃত্যু হয় । কিন্তু আমার মায়ের নামে অন্য একটি অ্যাকাউন্টে এখনও পর্যন্ত বার্ধক্য ভাতা ঢুকছে । সেই টাকা আবার অন্য কেউ তুলেও নিচ্ছে । এই বিষয়ের স্থানীয় প্রশাসনকে বারংবার জানানো হয়েছে । কিন্তু কোন সুরাহা মেলেনি ।"
যদিও এই বিষয়ে সরব হয়েছে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বরা । তাঁদের কথায়, রাজ্যজুড়ে যে লুটের রাজত্ব চলছে তা বারংবার প্রমাণ হচ্ছে । যেখানে নিজেদের হকের চাকরির দাবিতে রাস্তায় আন্দোলন করছে চাকরিপ্রার্থীরা । সেখানে আবাস যোজনার থেকে শুরু করে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা নয় ছয় করার অভিযোগ উঠছে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে । মন্দিরবাজারের ঘটনায় ভূতের নামে টাকা ঢুকছে অ্যাকাউন্টে ৷ আবার সেই টাকা ভূতেই তুলে নিচ্ছে ৷ এই ঘটনা বাংলায় কোন অস্বাভাবিক কিছু নয় ।
যদিও বিরোধীদের তরফে করা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে মন্দিরবাজার পঞ্চায়েত সমিতির জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ দফতরের কর্মাধ্যক্ষ মৃত্যুঞ্জয় পাইক বলেন, "এটি সম্পূর্ণ বেআইনি ৷ তবে আমাদের কাছে কোন অভিযোগ এখনও পর্যন্ত আসেনি । বর্তমানে কৃষ্ণপুর পঞ্চায়েত বিজেপি ও আইএসএফের জোট গঠন করে পঞ্চায়েত পরিচালনা করছে । এ বিষয়ে ওরাই বলতে পারবে । কিন্তু তৎকালীন সময়ে পঞ্চায়েত প্রধান ও অঞ্চল সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলাম আমি । তখন এমন কোন অভিযোগ আমার সামনে আসেনি । অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখা হবে ৷ অভিযুক্তকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে ।"
তবে এই বিষয় নিয়ে দক্ষিণ 24 পরগনার জেলাশাসক সুমিত গুপ্তা বলেন, "বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে ৷ দেলায় 2 লক্ষের বেশি মানুষ বার্ধক্য ভাতা পান ৷ অনেকসময় ভুয়ো অভিযোগ করা হয় ৷ আমরা পরে তদন্ত করে দেখেছি উপভোক্তা বেঁচে রয়েছেন এবং টাকাও তার দরকার ছিল ৷ এ ক্ষেত্রে আমরা তদন্ত করব ৷"
আরও পড়ুন: