মালদা, 28 সেপ্টেম্বর: গোদের উপর বিষফোঁড়া। দেড় মাসের বন্যায় ইতিমধ্যে গঙ্গা কেড়েছে 10 স্থানীয় বাসিন্দার প্রাণ। এবার ভরা গঙ্গায় নৌকাডুবির ঘটনা। শনিবার বিকেলে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে ভূতনি চরের দক্ষিণ চণ্ডীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কাটা বাঁধ এলাকায়। নৌকাডুবিতে এখনও পর্যন্ত 2 জনের নিখোঁজ হওযার খবর স্বীকার করেছেন সেচ দফতরের প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন।
এদিন দুপুরে মানিকচকের বানভাসিদের সঙ্গে কথা বলতে যান রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। প্রথমে গোপালপুর, সেখান থেকে মথুরাপুর মডেল স্কুলের ত্রাণ শিবির হয়ে যান ভূতনি ব্রিজের শেষ প্রান্তে। সেখানে উপস্থিত বানভাসি মানুষের সঙ্গে কথা বলে মালদা ফিরে যান তিনি। এর খানিক বাদেই নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এদিন মথুরাপুরে সাপ্তাহিক হাট বসে। একটি ছোট নৌকায় হাট থেকে ঘরে ফিরছিলেন দক্ষিণ চণ্ডীপুরের পাঁচজন। কাটা বাঁধ এলাকায় এখন গঙ্গার ভয়ঙ্কর স্রোত। তাছাড়া কাছেই গঙ্গা আর ফুলহর, এই দুই নদীর স্রোত এসে মিলছে। ফলে সেখানে নদীতে ঘূর্ণিপাকও রয়েছে। কোনও কারণে যাত্রীবোঝাই ছোট নৌকাটি সেই পাকে পড়ে যায়। মাঝি আর নৌকার নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেননি। যাত্রী-সহ ডুবে যায় নৌকা। বাকিরা সাঁতরে পাড়ে উঠলেও এক মহিলা ও এক শিশুর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
মানিকচকের বিধায়ক সাবিত্রী মিত্র বলেন, "কয়েকদিন ধরেই কাটা বাঁধ এলাকায় নদীতে প্রচণ্ড স্রোত লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ঠিক সেখান দিয়েই একটি নৌকা কয়েকজন যাত্রী নিয়ে দক্ষিণ চণ্ডীপুরের দিকে আসছিল। আজ মথুরাপুর হাট। হাট থেকেই নৌকায় চেপে যাত্রীরা ফিরছিলেন। নৌকাটি স্রোতের মধ্যে পড়ে নৌকাটি উল্টে যায়। সরকারিভাবে আমাদের কাছে খবর, নৌকাটিতে পাঁচজন ছিল। তিনজন সাঁতরে পাড়ে উঠলেও দু'জন নিখোঁজ। যাই হোক, নিখোঁজদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। সিভিল ডিফেন্স ঘটনাস্থলে রয়েছে। আমি ঘটনাস্থলে যাচ্ছি।"
রাজ্যের সেচ দফতরের প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, "নৌকাডুবির খবর পেয়ে বিডিওর সঙ্গে কথা বললাম। জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তারা ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন। আমিও যাচ্ছি। শুনেছি, 2 জনকে পাওয়া যাচ্ছে না। আশা করছি, প্রাণহানির ঘটনা ঘটবে না। কারণ, সিভিল ডিফেন্স সেখানে চলে এসেছে। এখন গঙ্গার বেশ কিছু জায়গায় প্রবল স্রোত। ছোট নৌকা সেই স্রোতের মোকাবিলা করতে পারবে না। ব্লক ও জেলা প্রশাসনের তরফে এনিয়ে বারবার মানুষকে সচেতন করা হয়েছে। আমরা চাই, বন্যায় যাতে কোনও দুর্ঘটনা না-ঘটে। সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।"