কলকাতা, 28 জানুয়ারি: অবিলম্বে পুলিশি অত্যাচার বন্ধ করতে এবং অনলাইন মামলা প্রত্যাহার-সহ সাত দফা দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিল ফেডারেশন অফ ওয়েস্টবেঙ্গল ট্রাক অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন । আগামিকাল সোমবার রানি রাসমণি অ্যাভিনিউতে এক বিক্ষোভ সমাবেশ করবে তারা ৷
করোনা পরিস্থিতির আগে পণ্য পরিবহণের ব্যবসার যে অবস্থা ছিল এখন আর তা নেই । বারবার এই কথা বলেছেন ট্রাক মালিক এবং সংগঠনগুলি । তার সঙ্গে পুলিশি জুলুমবাজি ও জোরপূর্বক টাকা নেওয়া, ওভারলোড, উৎসবের জন্য শহরে ঢুকতে জাতীয় এবং রাজ্য সড়কে প্রবেশে বাধা, যানজটের লম্বা লাইন-সহ আরও একাধিক বিষয় নিয়ে অনেকদিন ধরেই বিব্রত হচ্ছে পণ্য পরিবহণ ব্যবসা । একাধিকবার এইসব অভিযোগের কথা জানিয়ে পরিবহণ দফতরের কাছে চিঠিও পাঠানো হয়েছে । কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি । তাই এবার একরকম বাধ্য হয়েই শান্তিপূর্ণ মিছিল এবং সমাবেশের ডাক দিল ট্রাক অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন ।
এই বিষয়ে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সজল ঘোষ বলেন,"একাধিক সমস্যায় আগেই জর্জরিত হয়ে রয়েছে ট্রাক মালিক ও চালকরা । সম্প্রতি এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ভারতীয় ন্যায় (দ্বিতীয়) সংহিতা, 2023 অ্যাক্ট । এই নিয়ম অনুসারে ট্রাকের ক্ষেত্রে কোথাও 'হিট অ্যান্ড রান' হলে তা যদি ট্রাক চালক থানায় গিয়ে না জানিয়ে পালিয়ে যায় তাহলে সেক্ষেত্রে ট্রাক চালককে 7 লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা দিতে হতে পারে । এর পাশাপাশি সর্বোচ্চ 10 বছরের জেলও হতে পারে চালকের ।"
যদিও এই আইনটি আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে । তবে শুধু বাংলার সংগঠনগুলোই নয়, দেশজুড়ে এই কালা আইনের বিরোধিতা করছে সবকটি সংগঠন । ট্রাক মালিক পক্ষের দাবি যে, আইনটি স্থগিত নয় একেবারে প্রত্যাহার করতে হবে । সম্প্রতি এই আইনের বিরোধিতা করে ধর্মঘটের ডাকও দেয় অল ইন্ডিয়া ট্রেন ফেডারেশন ।
সংগঠনের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয় যে, ফিরহাদ হাকিম পরিবহণমন্ত্রী থাকাকালীন বেশ কিছু সমস্যার সমাধান হয়েছিল । ওভার লোড এবং পুলিশি হয়রানি-সহ একাধিক সমস্যা অনেকটাই বন্ধ হয়েছিল । তবে সেইসব সমস্যা পুনরায় শুরু হয়েছে । পুলিশি অত্যাচারের কথা বর্তমান পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীকে জানানো হলে তিনি জানান যে, পুলিশি বিষয় যেহেতু পরিবহণের মধ্যে পরে না তাই ওই বিষয় দফতরের কিছু করার নেই । এমনটাই দাবি সংগঠনের ।
তাদের দাবিগুলি হল -
- অনলাইনে মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে ৷
- ওভারলোড সম্পূর্ণ বন্ধ করতে হবে ৷
- ট্রাক মালিকদের উপর এনজিআই এর অযথা হয়রানি বন্ধ করতে হবে ।
- বৈধ বালি খাদান চিহ্নিত করে অবৈধ বালি খাদানগুলি বন্ধ করতে হবে ।
- গাড়ি চালানোর সময়সীমা বাড়াতে হবে এবং ই-চালানে রয়্যালটি টাকা উল্লেখ করতে হবে ।
- বালির গাড়ির উপর অযথা বিএলআরও-র হয়রানি বন্ধ করতে হবে ।
- জাতীয় ও রাজ্য সড়কে প্রবেশ করার সময় যত্রতত্র নো এন্ট্রি করা যাবে না ।
- সুবিধা পোর্টালের রয়্যালটি এক্সপোর্টার ও ট্রান্সপোর্টার কেউ দিতে হবে ।
- গাড়ি ভাড়া থেকে রয়্যালটির টাকা কাটা চলবে না ।
- ট্রাক মালিকদের ন্যায্য ভাড়া দিতে হবে ।
বহিরাগত অসম-নাগাল্যান্ড ও ভূটানের নম্বর প্লেট লাগানো গাড়ির ক্ষেত্রে ভারতীয় আইন লাগু করা হচ্ছে না । অবিলম্বে এই গাড়িগুলির ক্ষেত্রে ভারতীয় আইন লাগু করতে হবে ।
আরও পড়ুন :