কলকাতা, 4 অগস্ট: কেন প্রতিটি নির্বাচনে খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে সিপিএমকে? কেন ভোট বাক্সে মানুষের সমর্থন দেখা যাচ্ছে না ? এই সব প্রশ্ন যখন পশ্চিমবঙ্গের বাম নেতাদের ভাবাচ্ছে ঠিত তখনই কিছু শুভানুধ্যায়ী এবং সমালোচকরা 'আয়না' দেখালেন বিমান বসু থেকে শুরু করে মহম্মদ সেলিমদের ৷ কীভাবে দলের ' আচ্ছে দিন' ফিরতে পারে তা সাধারণ মানুষের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল ৷ তারই উত্তরে সিপিএমের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে 'দলবাজি', 'এলিট সুলভ আচরণ' ও 'দম্ভ নিয়ে চলার' মতো অভিযোগ উঠেছে ৷ এই মর্মে রাজ্য দফতরে পাঁচ হাজারেরও বেশি ইমেল এসেছে ৷
নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরতে গিয়ে কটাক্ষ ও ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন অধিকাংশ পরামর্শদাতাই ৷ সেখানে লেখা হয়েছে, "শূন্যের গেরো কাটাতে পারছে না ৷ অথচ, দলবাজিও ছাড়ছে না ৷ এমনকী বহু নেতা-কর্মীদের মধ্যে এলিট সুলভ আচরণ রয়ে গিয়েছে ৷ যা সাধারণ মানুষের থেকে দূরত্ব বাড়িয়ে দিচ্ছে ৷"
উল্লেখ্য, 2021 সালের বিধানসভা নির্বাচন, 2023 সালের পঞ্চায়েত ও সদ্য সমাপ্ত 2024 লোকসভা নির্বাচন ৷ সব জায়গায় কার্যত খালি হাতে ফিরতে হয়েছে বঙ্গ সিপিএম-কে ৷ ধারাবাহিকভাবে ভোট-বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে পারছেন না বিমান বসু, মহম্মদ সেলিমেরা ৷ অথচ, এবারের লোকসভা নির্বাচনে একাধিক তরুণ মুখকে ভোটের ময়দানে নামিয়েছিল সিপিম ৷ ভারসাম্য বজায় রাখতে বাজি ধরা হয়েছিল প্রবীণদের নিয়েও ৷ রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম এবং দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীও প্রার্থী হয়েছিলেন বিগত লোকসভা নির্বাচনে ৷
কিন্তু, ভোটে জয় তো দূরের কথা; মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রে সেলিম এবং দমদম লোকসভায় সুজন চক্রবর্তী ছাড়া বাকিদের জামানাত বাজেয়াপ্ত হয়েছে ৷ স্বাভাবিকভাবেই দলের অন্দরে প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে সেলিম-সহ আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের শীর্ষ নেতাদের ৷ এরপরেই ভোট বিপর্যয়ের কারণ বিশ্লেষণ ও কীভাবে ঘুরে দাঁড়ানো যায়, সে দিকে জোর দেন সিপিএম নেতারা ৷ সেই মতোই সাধারণ মানুষ এবং শুভানুধ্যায়ীদের থেকে পরামর্শ চাওয়া হয় মুজাফফর আহমেদ ভবনের তরফে ৷
সূত্রের খবর, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে একাধিক বিষয়ে বহু মানুষ মতামত জানিয়েছে ৷ বর্তমান সিপিএমের 'ভুল রাজনীতি ও নির্বাচনী কৌশলকে' অনেকেই আক্রমণ করেছে ৷ করোনা কালে রেড ভলান্টিয়ারদের সাফল্য কেন ভোট ময়দানে কাজে লাগাতে পারল না নেতারা ? সেই প্রশ্ন তুলেছে অনেকে ৷ একাংশের মতে, রাজ্যের 40-45 শতাংশ ভোটার ভাসমান ৷ সেই বিপুল অংশের ভোটারকে কাছে টানতে উদ্যোগী হতে হবে ৷ আদিবাসী, জনজাতি, কুড়মি থেকে সংখ্যালঘু মানুষের মন বুঝে এলাকাভিত্তিক কর্মসূচি নেওয়ার পরামর্শও দিয়েছে অনেকে ৷ সামগ্রিকভাবে মানুষের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া সিপিএমকে আবারও জনসংযোগে জোর দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ৷ তবে, অবশ্যই তা 'এলিট সুলভ আচরণ' ও 'দম্ভ'-কে দূরে সরিয়ে রেখে ৷