ETV Bharat / state

ঘোজাডাঙা সীমান্তে 1 কিমিতে নেই কাঁটাতার; বাংলাদেশি জঙ্গি অনুপ্রবেশের আতঙ্কে সিঁটিয়ে গ্রামবাসীরা - border with no barbed wire

author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Aug 7, 2024, 7:57 PM IST

Ghojadanga border with no barbed wire: ঘোজাডাঙা সীমান্তের প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা পুরোপুরি অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে ৷ নেই কোনও কাঁটাতার ।যে কোনও সময় বাংলাদেশি জঙ্গি অনুপ্রবেশের আতঙ্কের সিঁটিয়ে রয়েছেন সীমান্তবর্তী দক্ষিণপাড়া গ্রামের বাসিন্দারা ।

ETV BHARAT
বাংলাদেশি জঙ্গি অনুপ্রবেশের আতঙ্কে সিঁটিয়ে গ্রামবাসীরা (নিজস্ব চিত্র)

বসিরহাট, 7 অগস্ট: শেখ হাসিনার পদত্যাগের পরও হিংসা থামেনি বাংলাদেশে । গত কয়েকদিনের হিংসাত্মক পরিস্থিতির জেরে অগ্নিগর্ভ পদ্মাপাড়ের দেশ । একে একে হচ্ছে দুর্বৃত্তদের হামলা, লুটতরাজ, অগ্নিসংযোগ ৷ বাড়ছে মৃত্যুমিছিল ৷ ওপার বাংলার এই পরিস্থিতিতে বাড়তি সতর্কতা নিয়েছে নয়াদিল্লি । বেড়েছে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে নজরদারিও । কিন্তু, বাংলার সীমান্তবর্তী গ্রামগুলির বাসিন্দাদের মধ্যে জঙ্গি অনুপ্রবেশের আতঙ্ক কাজ করছে ৷ বিশেষত যেখানে নেই কাঁটাতার ৷

বনগাঁর মতো বসিরহাট মহকুমার সীমান্তবর্তী এলাকাতে বিএসএফের টহল বেড়েছে ঠিকই, কিন্তু এখনও বহু সীমান্ত রয়ে গিয়েছে উন্মুক্ত অবস্থায় ।কোথায়ও লোহার কাঠামোটুকু পড়ে থাকলেও নেই কোনও কাঁটাতারের বালাই । আবার কোথায়ও কাঁটাতার থাকলেও তার দশা যথেষ্ট বেহাল । এমনই একটি সীমান্তবর্তী গ্রাম ঘোজাডাঙার দক্ষিণপাড়া । বসিরহাটের ঘোজাডাঙা সীমান্তের দক্ষিণপাড়া গ্রামের প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে নেই কোনও কাঁটাতার । কার্যত অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে ঘোজাডাঙা সীমান্তের এই গ্রাম ।

যে কোনও সময় অনায়াসেই উন্মুক্ত এই সীমান্ত দিয়ে এপারে চলে আসতে পারে ওপারের অনুপ্রবেশকারী অথবা সন্ত্রাসবাদীরা । গ্রামের বাসিন্দারা বলছেন, "ঘোজাডাঙা সীমান্তের এপারে দক্ষিণপাড়া গ্রাম । আর ওপারেই রয়েছে সাতক্ষীরা জেলার লক্ষ্মীদাড়ি সীমান্ত । ওপার থেকে হেঁটে এপারে আসতে বড়জোর পাঁচ মিনিট সময় লাগবে ।" কাঁটাতার না থাকার ফলেই বাংলাদেশি অনুপ্রবেশের আশঙ্কা বেড়েছে ঘোজাডাঙা সীমান্তে ।

এই পরিস্থিতিতে নাওয়া-খাওয়া ভুলে এখন দক্ষিণপাড়া গ্রামের বাসিন্দাদের তীক্ষ্ণ নজর ওপারের দিকে । কেউ কেউ তো আবার আতঙ্কে বাড়িঘর ছেড়ে কাঁটাতারবিহীন ঘোজাডাঙা সীমান্তে এসে ফ‍্যালফ‍্যাল করে তাকিয়ে আছেন প্রতিবেশী দেশের সীমানার দিকে । এই বুঝি বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা উন্মুক্ত সীমান্ত দিয়ে ঢুকে পড়ল এদেশে । স্বভাবতই, এই আশঙ্কায় রাতের ঘুম উড়েছে গ্রামবাসীদের ।

স্থানীয় সূত্রে খবর, উত্তর 24 পরগনার বসিরহাটে প্রায় 192 কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিস্তৃত ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত । এর মধ্যে স্থল এবং জলপথও রয়েছে । অভিযোগ, সীমান্তের অনেক জায়গায় জমি জটের কারণে এখনও ঠিকমতো কাঁটাতারই দেওয়া সম্ভব হয়নি । আবার যেখানে কাঁটাতার দেওয়া সম্ভব হয়েছে, সেখানে আবার নাম কে ওয়াস্তে রয়েছে কাঁটাতারের সীমানা ।

তবে, ঘোজাডাঙা সীমান্তের দক্ষিণপাড়া গ্রামের এই অংশে একটা সময় শক্তপোক্ত অবস্থায় ছিল কাঁটাতারের স্ট্রাকচার । রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এখন শুধু রয়ে গিয়েছে স্ট্রাকচার । বাকি সব নষ্ট হয়ে গিয়েছে । এই অবস্থায় প্রতিবেশী দেশের উদ্ভূত পরিস্থিতির রেশ যাতে কোনওভাবেই ঘোজাডাঙা সীমান্তের গ্রামে এসে না পড়ে, সেই কারণে ভারত-বাংলাদেশের সীমানা কাঁটাতার দিয়ে ঘিরে দেওয়ার দাবি তুলেছেন দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দাদের একাংশ ।

এই বিষয়ে সুজিত দাস নামে এক বাসিন্দা বলেন, "এখানে কাঁটাতার না-থাকায় আমরা যথেষ্ট আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি । যখন-তখন ওপার থেকে এপারে যে কেউ ঢুকে যেতে পারে । এর আগেও এখানে অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটেছে । কাঁটাতার দিয়ে ভারতের সীমানা ঘিরে দেওয়া হলে সকলেরই ভালো । তা হলে আর অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটবে না । আমরাও পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতে বসবাস করতে পারব । তা না হলে ওপার বাংলার যা পরিস্থিতি তাতে উন্মুক্ত সীমান্ত দিয়ে যে কোনও সময় বাংলাদেশের দুষ্কৃতীরা ঢুকে হামলা চালাতে পারে গ্রামের লোকজনের ওপর ।"

একই সুর শোনা গিয়েছে প্রদীপ দাস নামে আরেক বাসিন্দার গলাতেও । তাঁর কথায়, "বহুদিন ধরে এই সীমান্তে ফেন্সিংয়ের কোনও ব্যবস্থা নেই । যার ফলে অনায়াসেই এখানে ঢুকে যেতে পারে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী কিংবা জঙ্গিরা । এই বিষয়টি ভেবে দেখা উচিত কেন্দ্রীয় সরকারের । বাংলাদেশে অস্থিরতার পর থেকেই তো আমরা আতঙ্কের প্রহর নিয়ে দিন কাটাচ্ছি ।"

এদিকে, বসিরহাটের সীমান্ত দিয়ে সারা বছর লেগেই থাকে কোনও না কোনও চোরাচালানের কারবার । বিএসএফের নজর এড়িয়ে ঘটে বেআইনি অনুপ্রবেশও । বাংলাদেশের অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতিতে সেই অনুপ্রবেশ বাড়তে পারে বলেই আশঙ্কা করছে গ্রামবাসীদের একাংশ ।

বসিরহাট, 7 অগস্ট: শেখ হাসিনার পদত্যাগের পরও হিংসা থামেনি বাংলাদেশে । গত কয়েকদিনের হিংসাত্মক পরিস্থিতির জেরে অগ্নিগর্ভ পদ্মাপাড়ের দেশ । একে একে হচ্ছে দুর্বৃত্তদের হামলা, লুটতরাজ, অগ্নিসংযোগ ৷ বাড়ছে মৃত্যুমিছিল ৷ ওপার বাংলার এই পরিস্থিতিতে বাড়তি সতর্কতা নিয়েছে নয়াদিল্লি । বেড়েছে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে নজরদারিও । কিন্তু, বাংলার সীমান্তবর্তী গ্রামগুলির বাসিন্দাদের মধ্যে জঙ্গি অনুপ্রবেশের আতঙ্ক কাজ করছে ৷ বিশেষত যেখানে নেই কাঁটাতার ৷

বনগাঁর মতো বসিরহাট মহকুমার সীমান্তবর্তী এলাকাতে বিএসএফের টহল বেড়েছে ঠিকই, কিন্তু এখনও বহু সীমান্ত রয়ে গিয়েছে উন্মুক্ত অবস্থায় ।কোথায়ও লোহার কাঠামোটুকু পড়ে থাকলেও নেই কোনও কাঁটাতারের বালাই । আবার কোথায়ও কাঁটাতার থাকলেও তার দশা যথেষ্ট বেহাল । এমনই একটি সীমান্তবর্তী গ্রাম ঘোজাডাঙার দক্ষিণপাড়া । বসিরহাটের ঘোজাডাঙা সীমান্তের দক্ষিণপাড়া গ্রামের প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে নেই কোনও কাঁটাতার । কার্যত অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে ঘোজাডাঙা সীমান্তের এই গ্রাম ।

যে কোনও সময় অনায়াসেই উন্মুক্ত এই সীমান্ত দিয়ে এপারে চলে আসতে পারে ওপারের অনুপ্রবেশকারী অথবা সন্ত্রাসবাদীরা । গ্রামের বাসিন্দারা বলছেন, "ঘোজাডাঙা সীমান্তের এপারে দক্ষিণপাড়া গ্রাম । আর ওপারেই রয়েছে সাতক্ষীরা জেলার লক্ষ্মীদাড়ি সীমান্ত । ওপার থেকে হেঁটে এপারে আসতে বড়জোর পাঁচ মিনিট সময় লাগবে ।" কাঁটাতার না থাকার ফলেই বাংলাদেশি অনুপ্রবেশের আশঙ্কা বেড়েছে ঘোজাডাঙা সীমান্তে ।

এই পরিস্থিতিতে নাওয়া-খাওয়া ভুলে এখন দক্ষিণপাড়া গ্রামের বাসিন্দাদের তীক্ষ্ণ নজর ওপারের দিকে । কেউ কেউ তো আবার আতঙ্কে বাড়িঘর ছেড়ে কাঁটাতারবিহীন ঘোজাডাঙা সীমান্তে এসে ফ‍্যালফ‍্যাল করে তাকিয়ে আছেন প্রতিবেশী দেশের সীমানার দিকে । এই বুঝি বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা উন্মুক্ত সীমান্ত দিয়ে ঢুকে পড়ল এদেশে । স্বভাবতই, এই আশঙ্কায় রাতের ঘুম উড়েছে গ্রামবাসীদের ।

স্থানীয় সূত্রে খবর, উত্তর 24 পরগনার বসিরহাটে প্রায় 192 কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিস্তৃত ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত । এর মধ্যে স্থল এবং জলপথও রয়েছে । অভিযোগ, সীমান্তের অনেক জায়গায় জমি জটের কারণে এখনও ঠিকমতো কাঁটাতারই দেওয়া সম্ভব হয়নি । আবার যেখানে কাঁটাতার দেওয়া সম্ভব হয়েছে, সেখানে আবার নাম কে ওয়াস্তে রয়েছে কাঁটাতারের সীমানা ।

তবে, ঘোজাডাঙা সীমান্তের দক্ষিণপাড়া গ্রামের এই অংশে একটা সময় শক্তপোক্ত অবস্থায় ছিল কাঁটাতারের স্ট্রাকচার । রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এখন শুধু রয়ে গিয়েছে স্ট্রাকচার । বাকি সব নষ্ট হয়ে গিয়েছে । এই অবস্থায় প্রতিবেশী দেশের উদ্ভূত পরিস্থিতির রেশ যাতে কোনওভাবেই ঘোজাডাঙা সীমান্তের গ্রামে এসে না পড়ে, সেই কারণে ভারত-বাংলাদেশের সীমানা কাঁটাতার দিয়ে ঘিরে দেওয়ার দাবি তুলেছেন দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দাদের একাংশ ।

এই বিষয়ে সুজিত দাস নামে এক বাসিন্দা বলেন, "এখানে কাঁটাতার না-থাকায় আমরা যথেষ্ট আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি । যখন-তখন ওপার থেকে এপারে যে কেউ ঢুকে যেতে পারে । এর আগেও এখানে অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটেছে । কাঁটাতার দিয়ে ভারতের সীমানা ঘিরে দেওয়া হলে সকলেরই ভালো । তা হলে আর অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটবে না । আমরাও পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতে বসবাস করতে পারব । তা না হলে ওপার বাংলার যা পরিস্থিতি তাতে উন্মুক্ত সীমান্ত দিয়ে যে কোনও সময় বাংলাদেশের দুষ্কৃতীরা ঢুকে হামলা চালাতে পারে গ্রামের লোকজনের ওপর ।"

একই সুর শোনা গিয়েছে প্রদীপ দাস নামে আরেক বাসিন্দার গলাতেও । তাঁর কথায়, "বহুদিন ধরে এই সীমান্তে ফেন্সিংয়ের কোনও ব্যবস্থা নেই । যার ফলে অনায়াসেই এখানে ঢুকে যেতে পারে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী কিংবা জঙ্গিরা । এই বিষয়টি ভেবে দেখা উচিত কেন্দ্রীয় সরকারের । বাংলাদেশে অস্থিরতার পর থেকেই তো আমরা আতঙ্কের প্রহর নিয়ে দিন কাটাচ্ছি ।"

এদিকে, বসিরহাটের সীমান্ত দিয়ে সারা বছর লেগেই থাকে কোনও না কোনও চোরাচালানের কারবার । বিএসএফের নজর এড়িয়ে ঘটে বেআইনি অনুপ্রবেশও । বাংলাদেশের অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতিতে সেই অনুপ্রবেশ বাড়তে পারে বলেই আশঙ্কা করছে গ্রামবাসীদের একাংশ ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.