সন্দেশখালি, 7 ফেব্রুয়ারি: এবার সন্দেশখালিতেই উলটপুরাণ! এক মাস আগে যে সন্দেশখালিতে ইডি আধিকারিক এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের তাড়া করে গ্রাম ছাড়া করেছিলেন শেখ শাহজাহানের অনুগত তৃণমূল সমর্থকরা। এবার সেখানেই পালটা গ্রামবাসীদের তাড়া খেয়ে নৌকা করে কোনওরকমে প্রাণ বাঁচালেন শাহজাহানের অনুগামীরা। প্রাণরক্ষা করতে কোনও কোনও তৃণমূলের সমর্থককে আবার রায়মঙ্গল নদীতে ঝাঁপও দিতে দেখা গেল।
যদিও তৃণমূলের অভিযোগ, গ্রামবাসীরা নয়। বিজেপির বহিরাগত দুষ্কৃতীরাই লাঠিসোঁটা নিয়ে তৃণমূলদের কর্মী-সমর্থকদের হামলা চালিয়েছে। তাতে বেশ কয়েকজন জখমও হয়েছেন। পালটা গেরুয়া শিবির আবার বহিরাগত দুষ্কৃতীদের এনে হামলার অভিযোগ করেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ৷ সবমিলিয়ে অভিযোগ-পালটা অভিযোগে বুধবার সরগরম হয়ে ওঠে সন্দেশখালি 2 নম্বর ব্লকের ত্রিমোহনী এলাকা। ঘটনার সূত্রপাত, মিছিল-পালটা মিছিলকে কেন্দ্র করে। বুধবার বিকেলে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার বিরুদ্ধে ত্রিমোহনী এলাকায় এক প্রতিবাদ মিছিলের আয়োজন করে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব।
পালটা শেখ শাহজাহান ঘনিষ্ঠ শাসকদলের নেতাদের বিরুদ্ধে জোর করে গ্রামবাসীদের জমি দখল করার পর সেখানে মেছো ভেড়ি করার অভিযোগ তুলেছে গেরুয়া শিবির। এদিন সন্দেশখালির ত্রিমোহনীতে ক্ষুদ্ধ গ্রামবাসীদের নিয়ে মিছিলও সংগঠিত করে বিজেপি নেতৃত্ব। দু'টি মিছিলই চলে আসে একেবারে সামনাসামনি। তা ঘিরে সংঘর্ষের পরিস্থিতি তৈরি হয়। ফলত উত্তেজনা দেখা দেয় সেখানে। যদিও আগে থেকে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন থাকায় বড়সড় অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়ানো গিয়েছে। পুলিশ তখনকার মতো দু'পক্ষকে সরিয়ে দিলেও এরপরই গ্রামবাসীরা জড়ো হতে থাকে একে একে।
বাঁশ, লাঠিসোঁটা এবং হাতে ঝাঁটা নিয়ে কার্যত তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠেন। শাহজাহান ঘনিষ্ঠ সন্দেশখালির দুই তৃণমূল নেতা শিব প্রসাদ হাজরা এবং উত্তম সর্দারের দাদাগিরির বিরুদ্ধে সরব হন গ্রামবাসীরা। এদিকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে বহিরাগতদের এনে এলাকায় উত্তেজনা তৈরি করার অভিযোগে এদিন সন্ধ্যায় ত্রিমোহনী রাস্তার মোড়ে বসে পড়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে বিজেপি সমর্থিত গ্রামবাসীরা। তাঁদের একটাই দাবি, শিব প্রসাদ হাজরা এবং উত্তম সরদারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে; নইলে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন তাঁরা। অন্যদিকে পরিস্থিতি শান্ত রাখতে এলাকায় এখনও পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
আরও পড়ুন: