বসিরহাট, 10 সেপ্টেম্বর: অমানবিক ! অসুস্থ অবস্থায় রাস্তার ধারে পড়ে থাকলেও ভবঘুরে যুবকের দিকে ফিরেও তাকাল কেউই । শেষমেশ চিকিৎসা না পেয়ে অজ্ঞাত পরিচয় ওই ভবঘুরের মৃত্যুর অভিযোগ । মঙ্গলবার এমনই মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী থাকল উত্তর 24 পরগনার বসিরহাট ।
আরজি কর-কাণ্ডে তোলপাড়ের মধ্যেই এই অমানবিক ঘটনা প্রশ্ন তুলে দিয়েছে সাধারণ মানুষের মানবিকতা নিয়ে ! জনবহুল এলাকায় রোগে ছটফট করতে করতে একজন বিনা চিকিৎসায় মারা গেল,অথচ এগিয়ে এসে কেন তাঁকে উদ্ধার করলেন না কেউই? কেনই বা অসুস্থ ভবঘুরেকে সঠিক সময়ে হাসপাতালে ভর্তি করানো গেল না? তা নিয়ে যেমন শুরু হয়েছে জোর চর্চা । তেমনই স্থানীয় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও উঠেছে বড়সড় প্রশ্ন ! যদিও, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অসুস্থ ওই ভবঘুরে যুবককে উদ্ধার করা স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বলে দাবি বসিরহাট থানার পুলিশের ।
এই বিষয়ে বসিরহাট পুরসভার পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের কো-অর্ডিনেটর রানা দাস বলেন, "শুনেছি সকাল বেলায় ওই ভদ্রলোক বেঁচে ছিলেন । নড়াচাড়াও করছিলেন । কিন্তু এগারোটার পর থেকে ওঁকে আর নড়াচড়া করতে দেখা যায়নি । এরপর পুলিশ যখন আসে তখন উনি মারা গিয়েছেন । উনি এখানকার বাসিন্দা নন । ওঁকে কেউ চেনেন না । সম্ভবত উনি মানসিক ভারসাম্যহীন । রোগে ভুগছিলেন । সেকারণেই হয়তো এই ঘটনা ।" এ দিকে বসিরহাট থানার পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ভবঘুরে যুবকের বয়স 35-র কাছাকাছি । তাঁর পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে । পরিবারের সঙ্গেও যোগাযোগ করার চেষ্টা হচ্ছে ।
আরজি কর-কাণ্ডে সুবিচারের দাবিতে লড়াই আন্দোলন থেমে নেই নাগরিক সমাজের । প্রায় প্রতিদিনই পথে নেমে প্রতিবাদে গর্জে উঠছেন সমাজের সর্বস্তরের মানুষ । এ নিয়ে বসিরহাটের মানুষও ক্রমাগত আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন । তারই মধ্যে এই অমানবিক ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছে সকলকে । জানা গিয়েছে, বসিরহাটের ইটিন্ডা রোডের পাশে যেখানে ওই ভবঘুরে যুবক অসুস্থ অবস্থায় পড়ে ছিলেন । তার আশেপাশে রয়েছে সরকারি অফিস এবং দোকান-বাজার । এলাকাটি বসিরহাট পুরসভার পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত । যথেষ্ট জনবহুল এলাকা । প্রতিনিয়ত মানুষজন চলাচল করছে ইটিন্ডা রোডের আশপাশ দিয়ে ।
স্বাভাবিকভাবেই কারোর না কারোর চোখে পড়ার কথা তাঁকে । অথচ তারপরও দীর্ঘক্ষণ তিনি অসুস্থ অবস্থায় পড়ে রইলেন রাস্তার পাশে একটি প্যাথলজি ল্যাবের সামনে । ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে সেখানে পথচলতি মানুষের বসার ব্যবস্থাও করা রয়েছে । ফলে এরকম একটি জনবহুল জায়গায় কীভাবে ওই ভবঘুরে দীর্ঘক্ষণ পড়ে থাকতে পারলেন? পথচলতি মানুষজনই বা কী করছিলেন? তাহলে কী মানুষের মানবিকতা ক্রমশ হারিয়ে যেতে বসেছে? উঠছে প্রশ্ন ৷