কলকাতা, 27 অক্টোবর: বঙ্গে বিজেপির জন্য এক কোটি সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ৷ পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, "বাংলায় বিজেপির সদস্য সংখ্যা 1 কোটি পেরিয়ে গেলে, তৃণমূলের কী হবে ? মমতাদিদি আপনি এবার সেটা ভেবে দেখুন ৷"
এদিন তিনি সাফ বুঝিয়ে দিলেন, 2021 সালের বিধানসভা নির্বাচন এবং 2024 সালের লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় বিজেপি ভালো ফল না করলেও আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল, সিপিএম, কংগ্রেসের বিরুদ্ধে জোরদার প্রস্তুতি নিতে চলেছে ভারতীয় জনতা পার্টি ৷ তারই সূচনা হল এই 'সদস্যতা অভিযান' কর্মসূচির মধ্যে দিয়েই ৷
বাংলা থেকে এক কোটি সদস্য সংগ্রহ মাত্রা পূরণ করার দ্বায়িত্ব দিয়ে গেলেন অমিত শাহ। রবিবার সল্টলেকের ইজেডসিসিতে পশ্চিমবঙ্গে "সদস্যতা অভিযান" কর্মসূচির উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ৷ তিনি বলেন, "দলের কাজ দেখে দলের সদ্য হন ৷ দলের কাজ দেখে তারপর সিদ্ধান্ত নিন ৷"
এদিন রাজ্যের গরুপাচার, কয়লা পাচার, স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে দুর্নীতি-সহ একাধিক দুর্নীতির প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন বিজেপির অন্যতম শীর্ষ নেতা ৷ তিনি বলেন, "কমিউনিস্ট ও মমতার আতঙ্ক থেকে বাংলাকে রক্ষা করতে হবে ৷ তার একমাত্র রাস্তা 2026 সালে বিজেপির সরকার গঠন ৷ রাষ্ট্রীয় সঙ্গীতের জায়গায় বাংলা থেকে বোমার আওয়াজ শোনা যায় ৷ কয়লা চোর, চাকরিতে দুর্নীতি, স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতি, কাটমানি, সিন্ডিকেটের দুর্নীতি- এই সবকিছু থেকে বাংলাকে রেহাই দিতে হলে বিজেপির এক কোটি সদস্য করতে হবে ৷"
আরজি কর-সন্দেশখালি নিয়ে সরব
কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর মুখে সন্দেশখালির ও আরজি করের ঘটনার উল্লেখও শোনা যায় ৷ তিনি পশ্চিমবঙ্গে নারী নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি ৷ বিজেপি সরকার গঠিত হলেই রাজ্যে মহিলাদের সুরক্ষা নিশ্চিত হবে বলেও আশ্বস্ত করেন তিনি ৷ এর সঙ্গে আসে পশ্চিমবঙ্গে অনুপ্রবেশের প্রসঙ্গও ৷ শাহ বলেন, "বিজেপি সরকার ক্ষমতা এলে পশ্চিমবঙ্গে অনুপ্রবেশ বন্ধ হবে ৷"
মমতা-রাহুলকে তোপ
2021 সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির ফলাফলের প্রসঙ্গ উত্থাপন করে অমিত শাহ বলেন, "মমতাজি, বিজেপি কয়েকটা সিট কম পেয়েছে বলে আপনি খুব উৎসাহিত ৷ কিন্তু আমরাই 370 ধারা অবলুপ্ত করেছি ৷" এদিন বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধিকেও কটাক্ষ করে তিনি বলেন, "রাহুল বাবা অ্যান্ড কোম্পানিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আছেন ৷ 2024 সালে লোকসভা নির্বাচনের পর লোকসভায় রাহুল বাবা বলেন, আমরা বিজেপি হারিয়ে দিয়েছি ৷ অথচ কেউ তাঁকে বোঝায়ও না যে হারে সে বিরোধী আসনে বসে। যে জয়ী হয়, সে সরকার গড়ে ৷ আমরা সেটাই করেছিলাম"
100 দিনের কাজের টাকা..
বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে বঞ্চনার অভিযোগ তুলেছিলেন, তা অস্বীকার করেন অমিত শাহ ৷ ইউপিএ সরকারের আমলের থেকে এনডিএ সরকারের আমলে কেন্দ্র বাংলার সরকারকে বেশি টাকা দিয়েছে ৷ সেই খতিয়ান তুলে ধরেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ৷ তিনি আশ্বাস, বঙ্গে বিজেপি সরকার গড়লে 100 দিনের কাজের টাকা শ্রমিকদের নিজস্ব অ্যাকাউন্টেই ঢুকবে ৷ চাকরির জন্য তরুণ-তরুণীদের 1 লক্ষ টাকা ঘুষ দিতে হবে না ৷ সর্বোপরি বাংলা দুর্নীতি মুক্ত একটি রাজ্য হবে ৷