দার্জিলিং, 17 জুলাই: পুলিশি হেফাজতে থাকা বিচারাধীন বন্দির লকআপে আত্মহত্যার চেষ্টা ! পরে হাসপাতালে মৃত্যু ওই বন্দির । ঘটনায় একদিকে যেমন হইচই পড়ে গিয়েছে শিলিগুড়ি সংলগ্ন ফাঁসিদেওয়া ব্লকের শান্তিনগরে, অন্যদিকে পুলিশের বিরুদ্ধে বড়সড় গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে । কিভাবে ওই মহিলা বিচারাধীন বন্দি কর্তব্যে থাকা পুলিশকর্মীদের চোখের আড়ালে আত্মহত্যার চেষ্টা করল, তাতে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ওই মহিলা বিচারাধীন বন্দির নাম চিরতা দেবনাথ ওরফে সুপ্রিয়া । উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে এইচডিইউ ওয়ার্ডে রবিবার থেকে চিকিৎসাধীন ছিলেন মহিলা বিচারাধীন বন্দি । ওই দিনই ফাঁসিদেওয়া থানার লকআপ থেকে শৌচালয়ে যাওয়ার নাম করে শৌচালয়ের ভেন্টিলেটরের সঙ্গে শাড়ি দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন । খুবই আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয় । কিন্তু মঙ্গলবার রাতে তাঁর মৃত্যু হয় ।
মূলত, ফাঁসিদেওয়া থানায় কর্মরত সিভিক ভলান্টিয়ার মাম্পি দেবনাথকে মারধর করে গায়ে আগুন লাগিয়ে খুনের চেষ্টার ঘটনায় অভিযুক্ত ছিলেন চিরতা দেবনাথ । চিরতা দেবনাথ সম্পর্কে মাম্পি দেবনাথের বউদি । পুলিশ অভিযোগ পেয়ে চিরতা দেবনাথকে গ্রেফতার করে । ধৃতকে আদালত সাতদিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেয় । মারধর ও খুনের চেষ্টার পাশাপাশি ওই সিভিক ভলান্টিয়ারের বাড়ি থেকে সোনার গয়না এবং নগদ টাকা চুরি করার অভিযোগও ওঠে চিরতা দেবনাথের বিরুদ্ধে ।
ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে শনিবার তাঁর বাড়ি থেকেই চুরি যাওয়া প্রায় 7 লক্ষ টাকার সোনার গয়না উদ্ধার করে ফাঁসিদেওয়া থানার পুলিশ । রবিবার চিরতা দেবনাথ থানার শৌচালয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন । পাশাপাশি এ দিন রাজ্য পুলিশের তিন সদস্যের এক ফরেন্সিক দল ঘটনার তদন্তে যায় ফাঁসিদেওয়ার শক্তিনগরে । তাঁরা মাম্পি দেবনাথ (মিত্র)-র শ্বশুরবাড়িতে যান । যে বাড়িতে ঘটনা ঘটেছিল, সেখান থেকে নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে গিয়েছেন ফরেনসিক আধিকারিকরা । তাঁদের সঙ্গে ছিলেন এই মামলার তদন্তকারী অফিসার এবং ফাঁসিদেওয়া থানার পুলিশ কর্মীরা ৷
এই বিষয়ে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সুপার সঞ্জয় মল্লিক বলেন, "ওই মহিলাকে খুব আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি করা হয়েছিল । চিকিৎসকরা অনেক চেষ্টা করেছিল । কিন্তু তাঁকে বাঁচানো যায়নি । বুধবার তাঁর দেহ ময়নাতদন্তের পর পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হবে ।" এই বিষয়ে দার্জিলিংয়ের পুলিশ সুপার প্রবীণ প্রকাশ বলেন, "ঘটনার তদন্ত করে দেখা হচ্ছে ।"