কলকাতা, 13 জানুয়ারি: সাতসকালে কলকাতার নামী স্কুলে দুর্ঘটনা ৷ আহত নবম শ্রেণির 2 ছাত্র ৷ আহতদের মধ্যের একজন ছাত্রের জখম গুরুতর ৷ তাকে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে ৷ ঘটনাটি ঘটেছে কলকাতার সাদার্ন অ্যাভেনিউয়ের নব নালন্দা স্কুলে ৷ স্কুল কর্তৃপক্ষের গাফিলতির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ অভিভাবকদের ৷ ঘটনায় চাঞ্চল্য ৷ ঘটনায় রিপোর্ট তলব করেছে শিক্ষা দফতর ৷
এই মুহূর্তে গুরুতর আহত ছাত্রের চিকিৎসা চলছে আরজি কর হাসপাতালে ট্রমা কেয়ারে। ওর মাথায় দু'টি এবং ঘাড়ের একটি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে ৷ তারপরে মাথায় 12টি এবং ঘাড়ে 9টি সেলাই পড়েছে ৷ পাশাপাশি এই ঘটনার পর থেকেই সচেতন হয়ে পড়েছে নব নালন্দা স্কুলের কর্তৃপক্ষ। তারা স্কুলের চারপাশের জাল দিয়ে দিচ্ছে যাদের ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আর না-ঘটে ৷
জানা গিয়েছে, সোমবার সকালের প্রার্থনা চলাকালীন ঘটনাটি ঘটে ৷ পাঁচ তলার জানলার একটি কাঁচ ভেঙে পড়ে ৷ সেই সময় নীচে ছিল ছাত্ররা ৷ বরাত জোরে প্রাণে বেঁচে যায় তারা ৷ তবে আহত হয় নবম শ্রেণির 2 ছাত্র ৷ একজনের কম আঘাত লাগায় তাকে স্কুলেই প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয় ৷ অন্যজনের ঘাড়ে ও মাথায় আঘাত লাগায় তাকে বেসরকারি একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ৷ ঘটনার জেরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন অভিভাবকরা ৷ রক্ষণাবেক্ষণে গাফিলতির অভিযোগ তুলে স্কুল কর্তৃপক্ষকে ঘিরে প্রতিবাদ দেখান তাঁরা ৷ চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয় ৷
এক অভিভাবক বলেন, "প্রায় 1 মাস স্কুল বন্ধ ছিল । তখন কেন এই জিনিসগুলোর তদারকী করা হয়নি ? এমনকী, অ্যাম্বুল্যান্সের জন্য টাকা নেওয়া হয় স্কুলের তরফে । অথচ, কেন আজকের ঘটনায় ওই ছাত্রকে অ্যাম্বুল্যান্সে করে নিয়ে যাওয়া হয়নি ?" ঘটনায় প্রিন্সিপালের ঘর ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান অভিভাবকরা ৷ ঘটনা প্রসঙ্গে প্রিন্সিপাল অরিজিৎ মিত্র বলেন, "গুরুতর আহত ছাত্রের বাড়ির লোক অন্য হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে ইচ্ছুক । ওনারা মেডিক্যালের সঙ্গে জড়িত । তবে অ্যাম্বুল্যান্স চালকের শরীর খারাপ হওয়ায় আজকে তিনি আসেননি । কিন্তু, এমনটা ভবিষ্যতে আর হবে না ।"
তিনি আরও বলেন, "কেন এমন হল, তাও জানি না । আমরা প্রতিনিয়ত স্কুল রক্ষণাবেক্ষণ করে থাকি । ঘটনার জন্য আমরা দুঃখিত । বিষয়টা দেখা হবে ।" খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছন রাসবিহারী কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক দেবাশিস কুমার ৷ তিনি বলেন, "এই ঘটনার জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষকে আরও সচেতন হতে হবে ।"
আহত এক ছাত্রের মা জানান, এদিনের ঘটনা সম্পর্কে তাঁকে স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে কিছু জানানোই হয়নি ৷ অন্য এক অভিভাবকের কাছে খবর পেয়ে তিনি স্কুলে ছুটে আসেন ৷ এসে দেখেন কোনও টিটেনাস না-দিয়েই কেবল হালকা ওষুধ লাগিয়ে তাঁর ছেলেকে ছেড়ে দেওয়া হয় ৷ ওই অবস্থায় আমি ছেলেকে দেখতে পেয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষকে বলার পর তখন ওরা টিটেনাস দেয় ৷ মাথায় টুপি পড়ে থাকার জন্য বড় কোনও ক্ষতি হয়নি তাঁর ছেলের ৷ তাঁর প্রশ্ন, হাওয়া কিংবা ঝড় না-হওয়া সত্ত্বেও কাঁচ ভেঙে পড়ল কী করে ?