বারাসত ও কোন্নগর, 25 অগস্ট: আরজি কর কাণ্ডে উত্তাল দেশ ৷ নিজেদের মতো করে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন আমজনতা থেকে শুরু করে সেলিব্রিটিরাও ৷ উত্তরপাড়ায় তিনটি দুর্গাপুজো কমিটি আগেই অনুদান প্রত্যাখান করেছে । এবার তাতে যোগ দিল বারাসত ও কোন্নগরের দুই পুজো কমিটি ৷ আরজি কর-কাণ্ডে দুর্গাপুজোর সরকারি অনুদানে নিচ্ছে না বারসতের সরোজিনী পল্লী উন্নয়ন সমিতি। একই সিদ্ধান্ত কোন্নগর মাস্টারপাড়া সার্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির ৷
অনুদান প্রত্যাখ্যান বারাসতে সরোজিনী পল্লীর:
রবিবার পাড়ার লোকজনের সঙ্গে বৈঠক করেন ক্লাবের কর্মকর্তারা। সেখানেই ঐক্যবদ্ধভাবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শুধু পুজোর অনুদান না নেওয়াতেই সীমাবদ্ধ থাকেনি ক্লাবটি। সেই সঙ্গে এবছরের দুর্গাপুজোও অনাড়ম্বরভাবে করতে চলেছে তাঁরা। যেখানে কোনও জাঁকজমক থাকবে না ।থাকবে শুধু আরজি করের নির্যাতিতার প্রতি সহমর্মিতা । এছাড়া, নির্যাতিতা ছাত্রীর স্মরণে দুর্গাপুজোতে রক্তদান এবং বস্ত্র বিতরণের মতো সমাজসেবামূলক কর্মসূচিও নিয়েছে সরোজিনী পল্লী । যা নিঃসন্দেহে ব্যতিক্রমী ছবি ।
আরজি করের ঘটনায় এর আগে উত্তরপাড়ার তিনটি দুর্গাপুজো কমিটি সরকারি অনুদান নিতে অস্বীকার করেছিল । যা ঘিরে রীতিমতো হইচই পড়ে গিয়েছিল প্রশাসনিক মহলে। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না-কাটতে এবার একই পথ অনুসরণ করল সরোজিনী পল্লী। বারাসতের এই ক্লাব কমিটি বেশ ধুমধাম করেই প্রতিবছর দুর্গাপুজোর আয়োজন করে থাকে । পুজোর পাঁচদিন পাড়ার সমস্ত লোকজনকে নিয়ে চলে ভুড়িভোজও । কিন্তু, এবছর তাঁর কোনওটাই হচ্ছে না । তাঁদের স্পষ্ট মত, ‘এবছর যদি নির্যাতিতা বিচার না-পান, তাহলে আগামী বছরও সরকারি অনুদান নেবেন না তাঁরা । নির্যাতিতা ছাত্রীর সুবিচারের দাবিতে তাঁদের সংগ্রাম চলবে বলেও এদিন স্পষ্ট জানিয়েছেন ক্লাবের কর্মকর্তারা ।
সরোজিনী পল্লী উন্নয়ন সমিতির সম্পাদক কার্তিক কর্মকার বলেন, ‘‘আরজি করে যা হয়েছে, তা এককথায় নিন্দনীয় । এই ঘটনায় প্রশাসন এখনও বিচার দিতে পারেনি । সরকার সঠিক বিচার দিতে পারছে না বলেই আমরা এবছর পুজোর অনুদান বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি । এটা আমাদের পাড়ার সকলের ঐক্যবদ্ধ মতামত । ক্লাবের সিদ্ধান্তের কথা আমরা শীঘ্রই জেলাশাসককে জানিয়ে দেব ।’’
অনুদান প্রত্যাখ্যান কোন্নগরেও:
অনুদান বয়কট শুধু নয়, রাস্তায় নেমে মাইক হাতে প্রতিবাদ কোন্নগরের এক পুজো কমিটির । কোন্নগর মাস্টারপাড়া সার্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি পল্লীবাসীদের সভা ডেকে পুজো অনুদান বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই উদ্দেশ্যে টোটোয় মাইক বেঁধে, ফ্লেক্স ছাপিয়ে প্রচার করে অনুদান বয়কটের ঘোষণা করেন পুজো কমিটির সদস্যরা । তাঁদের একটাই দাবি, নির্যাতিতা সুবিচার পাক ।
পুজো কমিটির সদস্য সোমা চক্রবর্তী বলেন, ‘‘উৎসব পরে, আগে আমাদের সম্মান । আমরা প্রথমে দোষীর শাস্তি চাই । নয়তো এটা প্রমাণ হয় যে অপরাধ করেও কোনও শাস্তি হয় না। আমরা এই ঘটনাটা থেকে সরতে পারছি না । তাই আমরা বলছি, অনুদান না ৷ আগে আমাদের নিরাপত্তা ।
আরেক সদস্য কমল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমাদের পুজো কমিটির মিটিংয়ে একজনও অনুদান নেওয়ার পক্ষে ছিলেন না। সরকার যদি পরেরবার অনুদান না-দিতে চায় তাতও আমাদের কিছু যায় আসে না। আমরা অনুদানের উপর ভরসা করে পুজো করি না। প্রায় 350 পল্লীবাসী আছেন আমাদের সঙ্গে। আমাদের পুজো হয়ে যাবে ।’’