ETV Bharat / state

টাকা না-পেলে সই নয়, স্কুল পরিচালন কমিটিতে সভাপতির 'তৃণমূলী' স্বামীর দাদাগিরি ! - Malda School Problem

author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : 3 hours ago

TMC Leader Being Highhanded in School: স্কুলের তহবিল থেকে কাটমানি দাবি করার অভিযোগ তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে ৷ সেই তৃণমূল নেতা আবার স্কুলের পরিচালন কমিটির সভাপতির স্বামী ৷ অভিযোগ, সভাপতিকে এড়িয়ে তিনিই স্কুলের সমস্ত বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছেন ৷

TMC Leader Highhanded in School
স্কুল পরিচালন কমিটির সভাপতির 'তৃণমূলী' স্বামীর বিরুদ্ধে দাদাগিরির অভিযোগ ৷ (নিজস্ব চিত্র)

মালদা, 25 সেপ্টেম্বর: ফেলো কড়ি, নাও সই ৷ এমনই নিয়মের কথা ঘোষণা করেছেন স্কুল পরিচালন কমিটির সভাপতির স্বামী ! অভিযোগ, স্ত্রী শুধুই কাগজে-কলমে সভাপতি ৷ তাঁকে শিখণ্ডী করে যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেন তৃণমূলের যুব নেতা তথা সভাপতির স্বামী ৷ তাঁর এই সিদ্ধান্তের জেরে স্কুলের কোনও রেজোলিউশনে সভাপতির সই থাকছে না ৷ অভিযোগ উঠেছে, স্কুলের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের চেকে সভাপতির সই না-থাকায়, আটকে গিয়েছে চতুর্থ শ্রেণির কর্মীদের বেতন ৷ এমনকি চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকরাও বেতন পাচ্ছেন না ৷ সবমিলিয়ে স্কুলে এক অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে মালদার হরিশচন্দ্রপুর 2 নম্বর ব্লকের বারদুয়ারি হাইস্কুলে ৷

পুরো বিষয়টি জানিয়ে সমস্যার সমাধানের জন্য এসআই থেকে শুরু করে ডিআই, এমনকি বিডিও ও রাজ্য শিক্ষা দফতরেও চিঠি দিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ ৷ আর অভিযোগ নিয়ে স্কুলের সভাপতি অপর্ণা সরকার ঘোষের স্বামী মনোতোষ ঘোষের সাফাই, স্কুলের শিক্ষকরা দুর্নীতিতে জড়িত ৷ তিনি সেসব ধরে ফেলেছেন ৷ তাই তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে ৷ বারদুয়ারি হাইস্কুলের পরিচালন কমিটি তৃণমূলের ৷ সেই কমিটির সভাপতি হিসাবে এলাকার যুব নেতা মনোতোষ ঘোষের স্ত্রী অপর্ণা সরকার ঘোষকে নিয়োগ করা হয়েছে ৷ অভিযোগ অপর্ণা নন, পরিচালন কমিটির সমস্ত কাজকর্ম নিয়ন্ত্রণ করেন মনোতোষ ৷

স্কুল পরিচালন কমিটির সভাপতির 'তৃণমূলী' স্বামীর বিরুদ্ধে দাদাগিরির অভিযোগ ৷ (ইটিভি ভারত)

স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক পরমানন্দ মণ্ডলের অভিযোগ, "বিকাশ ভবন, নিবেদিতা ভবন-সহ প্রশাসনের সব জায়গায় সমস্যার কথা জানিয়ে চিঠি দিয়েছি ৷ স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি অপর্ণা সরকার ঘোষ গত মার্চ-এপ্রিল থেকে স্কুলে আসেন না ৷ কোনও মিটিং ডাকা হলে, সেখানেও আসেন না ৷ বারবার তাঁর স্বামী আসেন ৷ আমরা বারবার বলেছি, সভাপতি ছাড়া আমরা কোনও মিটিং করতে পারব না ৷ তাঁকেই আসতে হবে ৷ গত 18 সেপ্টেম্বরের মিটিংয়ে তিনি অবশ্য এসেছিলেন ৷ কিন্তু, মিটিংয়ের রেজোলিউশন বইয়ে কাউকে সই করতে দিলেন না ৷ আর নিজেও সই করলেন না ৷

তিনি অভিযোগ করেছেন, "সভাপতি চেকে সই না-করায়, আমরা সাফাই কর্মী থেকে শুরু করে চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকদেরও বেতন দিতে পারছি না ৷ আমি নিজের পকেট থেকে সাফাই কর্মীদের দু’মাসের বেতন দিয়েছি ৷ তারপর থেকে তাঁরা আর কাজে আসেন না ৷ স্কুল নোংরা হয়ে থাকছে ৷ সভাপতির স্বামীর একটাই বক্তব্য, স্কুলের তহবিল থেকে তাঁকে আর্থিক সুবিধে দিতে হবে ৷ সবার সামনেই বলে গিয়েছেন, সেই সুবিধে না-পেলে তিনি কোনও চেকে সই করবেন না ৷ টাকার অভাবে বিল না-মেটানোয় এর আগে স্কুলের বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেওয়া হয়েছিল ৷ ছাত্ররা আন্দোলন শুরু করে ৷ বিডিও’র হস্তক্ষেপে সেবার কোনওরকমে সমস্যা মেটানো গিয়েছে ৷

ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক অভিযোগ করেছেন, "সভাপতির স্বামী আসলে কাটমানি চাইছেন ৷ সবার সামনেই তিনি বলে গিয়েছেন, 'আমরা তাঁকে দেখছি না ৷ তাই তিনিও আমাদের দেখবেন না ৷ এর আগেও এসআই-কে বিষয়টি জানিয়েছিলাম ৷ এসআই হিয়ারিং ডাকেন, তিনি আসেননি ৷ ফের তাঁকে বিষয়টি জানানো হয়েছে ৷"

এ-বিষয়ে জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র আশিস কুণ্ডু জানাচ্ছেন, "স্কুল পরিচালনার ক্ষেত্রে রাজ্য শিক্ষা দফতরের স্পষ্ট নির্দেশিকা রয়েছে ৷ রাজ্যের সমস্ত স্কুলের পরিচালন কমিটিকে সেই নির্দেশিকা মেনে চলতে হয় ৷ কোনও স্কুলের সভাপতি যদি মনে করেন, তিনি সেই নির্দেশিকাকে উপেক্ষা করবেন, তাহলে জেলাশাসক, ডিআই ও বিডিও-র নেতৃত্বে তদন্ত হবে ৷ তাতে তিনি দোষী সাব্যস্ত হলে, তাঁকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে ৷ সুতরাং, সমস্ত নিয়ম মেনেই স্কুল পরিচালনা করতে হবে ৷"

এই ঘটনায় অভিযুক্ত মনোতোষ রায়ের বক্তব্য, তিনি স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক পরমানন্দ মণ্ডল ও পরিচালন কমিটির শিক্ষক সদস্য মজিবুর রহমানের দুর্নীতি ধরে ফেলেছেন ৷ তাই তাঁর বিরুদ্ধে এসব মিথ্যে অভিযোগ করা হচ্ছে ৷ স্কুলে সবুজসাথী সাইকেল বিলি নিয়েও দুর্নীতি হয়েছে ৷ তাঁর কাছে প্রমাণ রয়েছে ৷ তিনি সমস্ত প্রমাণ ডিআই-এর হাতে তুলে দেবেন ৷ মনোতোষের দাবি, "রাজ্য শিক্ষা দফতর যদি আমাকে পদত্যাগ করার নির্দেশ দেয়, তবে চেয়ার ছেড়ে দেব ৷" কিন্তু, প্রশ্ন হল, স্কুলের সভাপতি তো তাঁর স্ত্রী ! তিনি কীভাবে পদত্যাগ করবেন ? এ নিয়ে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) বাণীব্রত দাস জানিয়েছেন, সমস্যার সমাধানে যাবতীয় পদক্ষেপ করা হবে ৷

মালদা, 25 সেপ্টেম্বর: ফেলো কড়ি, নাও সই ৷ এমনই নিয়মের কথা ঘোষণা করেছেন স্কুল পরিচালন কমিটির সভাপতির স্বামী ! অভিযোগ, স্ত্রী শুধুই কাগজে-কলমে সভাপতি ৷ তাঁকে শিখণ্ডী করে যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেন তৃণমূলের যুব নেতা তথা সভাপতির স্বামী ৷ তাঁর এই সিদ্ধান্তের জেরে স্কুলের কোনও রেজোলিউশনে সভাপতির সই থাকছে না ৷ অভিযোগ উঠেছে, স্কুলের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের চেকে সভাপতির সই না-থাকায়, আটকে গিয়েছে চতুর্থ শ্রেণির কর্মীদের বেতন ৷ এমনকি চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকরাও বেতন পাচ্ছেন না ৷ সবমিলিয়ে স্কুলে এক অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে মালদার হরিশচন্দ্রপুর 2 নম্বর ব্লকের বারদুয়ারি হাইস্কুলে ৷

পুরো বিষয়টি জানিয়ে সমস্যার সমাধানের জন্য এসআই থেকে শুরু করে ডিআই, এমনকি বিডিও ও রাজ্য শিক্ষা দফতরেও চিঠি দিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ ৷ আর অভিযোগ নিয়ে স্কুলের সভাপতি অপর্ণা সরকার ঘোষের স্বামী মনোতোষ ঘোষের সাফাই, স্কুলের শিক্ষকরা দুর্নীতিতে জড়িত ৷ তিনি সেসব ধরে ফেলেছেন ৷ তাই তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে ৷ বারদুয়ারি হাইস্কুলের পরিচালন কমিটি তৃণমূলের ৷ সেই কমিটির সভাপতি হিসাবে এলাকার যুব নেতা মনোতোষ ঘোষের স্ত্রী অপর্ণা সরকার ঘোষকে নিয়োগ করা হয়েছে ৷ অভিযোগ অপর্ণা নন, পরিচালন কমিটির সমস্ত কাজকর্ম নিয়ন্ত্রণ করেন মনোতোষ ৷

স্কুল পরিচালন কমিটির সভাপতির 'তৃণমূলী' স্বামীর বিরুদ্ধে দাদাগিরির অভিযোগ ৷ (ইটিভি ভারত)

স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক পরমানন্দ মণ্ডলের অভিযোগ, "বিকাশ ভবন, নিবেদিতা ভবন-সহ প্রশাসনের সব জায়গায় সমস্যার কথা জানিয়ে চিঠি দিয়েছি ৷ স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি অপর্ণা সরকার ঘোষ গত মার্চ-এপ্রিল থেকে স্কুলে আসেন না ৷ কোনও মিটিং ডাকা হলে, সেখানেও আসেন না ৷ বারবার তাঁর স্বামী আসেন ৷ আমরা বারবার বলেছি, সভাপতি ছাড়া আমরা কোনও মিটিং করতে পারব না ৷ তাঁকেই আসতে হবে ৷ গত 18 সেপ্টেম্বরের মিটিংয়ে তিনি অবশ্য এসেছিলেন ৷ কিন্তু, মিটিংয়ের রেজোলিউশন বইয়ে কাউকে সই করতে দিলেন না ৷ আর নিজেও সই করলেন না ৷

তিনি অভিযোগ করেছেন, "সভাপতি চেকে সই না-করায়, আমরা সাফাই কর্মী থেকে শুরু করে চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকদেরও বেতন দিতে পারছি না ৷ আমি নিজের পকেট থেকে সাফাই কর্মীদের দু’মাসের বেতন দিয়েছি ৷ তারপর থেকে তাঁরা আর কাজে আসেন না ৷ স্কুল নোংরা হয়ে থাকছে ৷ সভাপতির স্বামীর একটাই বক্তব্য, স্কুলের তহবিল থেকে তাঁকে আর্থিক সুবিধে দিতে হবে ৷ সবার সামনেই বলে গিয়েছেন, সেই সুবিধে না-পেলে তিনি কোনও চেকে সই করবেন না ৷ টাকার অভাবে বিল না-মেটানোয় এর আগে স্কুলের বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেওয়া হয়েছিল ৷ ছাত্ররা আন্দোলন শুরু করে ৷ বিডিও’র হস্তক্ষেপে সেবার কোনওরকমে সমস্যা মেটানো গিয়েছে ৷

ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক অভিযোগ করেছেন, "সভাপতির স্বামী আসলে কাটমানি চাইছেন ৷ সবার সামনেই তিনি বলে গিয়েছেন, 'আমরা তাঁকে দেখছি না ৷ তাই তিনিও আমাদের দেখবেন না ৷ এর আগেও এসআই-কে বিষয়টি জানিয়েছিলাম ৷ এসআই হিয়ারিং ডাকেন, তিনি আসেননি ৷ ফের তাঁকে বিষয়টি জানানো হয়েছে ৷"

এ-বিষয়ে জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র আশিস কুণ্ডু জানাচ্ছেন, "স্কুল পরিচালনার ক্ষেত্রে রাজ্য শিক্ষা দফতরের স্পষ্ট নির্দেশিকা রয়েছে ৷ রাজ্যের সমস্ত স্কুলের পরিচালন কমিটিকে সেই নির্দেশিকা মেনে চলতে হয় ৷ কোনও স্কুলের সভাপতি যদি মনে করেন, তিনি সেই নির্দেশিকাকে উপেক্ষা করবেন, তাহলে জেলাশাসক, ডিআই ও বিডিও-র নেতৃত্বে তদন্ত হবে ৷ তাতে তিনি দোষী সাব্যস্ত হলে, তাঁকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে ৷ সুতরাং, সমস্ত নিয়ম মেনেই স্কুল পরিচালনা করতে হবে ৷"

এই ঘটনায় অভিযুক্ত মনোতোষ রায়ের বক্তব্য, তিনি স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক পরমানন্দ মণ্ডল ও পরিচালন কমিটির শিক্ষক সদস্য মজিবুর রহমানের দুর্নীতি ধরে ফেলেছেন ৷ তাই তাঁর বিরুদ্ধে এসব মিথ্যে অভিযোগ করা হচ্ছে ৷ স্কুলে সবুজসাথী সাইকেল বিলি নিয়েও দুর্নীতি হয়েছে ৷ তাঁর কাছে প্রমাণ রয়েছে ৷ তিনি সমস্ত প্রমাণ ডিআই-এর হাতে তুলে দেবেন ৷ মনোতোষের দাবি, "রাজ্য শিক্ষা দফতর যদি আমাকে পদত্যাগ করার নির্দেশ দেয়, তবে চেয়ার ছেড়ে দেব ৷" কিন্তু, প্রশ্ন হল, স্কুলের সভাপতি তো তাঁর স্ত্রী ! তিনি কীভাবে পদত্যাগ করবেন ? এ নিয়ে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) বাণীব্রত দাস জানিয়েছেন, সমস্যার সমাধানে যাবতীয় পদক্ষেপ করা হবে ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.