আসানসোল, 29 জুলাই: কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় তুলকালাম কাণ্ড ! উপাচার্যকে গো ব্যাক স্লোগান দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়তে বাধ্য করলেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা ও সদস্যরা । উপাচার্য দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "আমাকে হেনস্থা করা হয়েছে । আমি কাজ করতে এসেছিলাম । মন্ত্রী ব্রাত্য বসুর দেওয়াও একটি কাজ করার ছিল । কিন্তু আমি কাজ করতে পারলাম না । তাই বাধ্য হয়ে চলে যাচ্ছি ।"
গত কুড়ি দিন ধরে আসানসোলে কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় আন্দোলন করছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ । তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি অভিনব মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এই আন্দোলন চলছে । আন্দোলনকারীদের দাবি, কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ অপচয় করে বিভিন্ন মামলা-মোকদ্দমা চালানো হচ্ছে । ছাত্র-ছাত্রীদের উন্নয়নের জন্য যে টাকা ব্যয় হওয়ার কথা ছিল তা কেন মামলা-মোকদ্দমায় খরচা হবে, এই প্রশ্ন তুলেই আন্দোলন শুরু করেছিল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ । তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি অভিনব মুখোপাধ্যায় স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, কত টাকা এখনও পর্যন্ত খরচ হয়েছে মামলা খাতে, তা উপাচার্যকে শ্বেতপত্র প্রকাশ করে জানাতে হবে । যতক্ষণ পর্যন্ত তা না জানানো হয়, এই আন্দোলন চলবে ।
আর এই আন্দোলন চলাকালীন কুড়ি দিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেখা মেলেনি । অন্যদিকে, উপাচার্য না আসায় রেজিস্ট্রারকেও বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে দেননি তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতৃত্ব । সোমবার সাত সকালে উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে উপস্থিত হন । ছাত্রছাত্রীরা আসার আগেই সকাল-সকাল তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ঢুকে যান ।
আর এই খবর পেয়েই তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দলে দলে সমর্থকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে জড়ো হয় । এরপর উপাচার্যের দফতরে ঢুকে তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে । শ্লোগানে উত্তেজনা ছড়ায় উপাচার্যের দফতরে । এমনকী উপাচার্যের চেয়ার টানা হিঁচড়ে পর্যন্ত করা হয় বলে অভিযোগ । শেষ পর্যন্ত অপমান সহ্য করতে না পেরে উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে নেমে আসেন । কিন্তু সেখানে ঘিরেও তাঁকে গো ব্যাক স্লোগান দেওয়া হয় । এমনকী তাঁর গাড়ির সামনেও শুয়ে পড়ে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সমর্থকরা । শেষ পর্যন্ত কোনওরকমে গাড়িতে চেপে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরিয়ে যান । যাওয়ার আগে তিনি জানান, পরিস্থিতি সঠিক হলে আবার ফিরে আসবেন বিশ্ববিদ্যালয়ে ।
অন্যদিকে বিষয়টি নিয়ে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি অভিনব মুখোপাধ্যায় বলেন, "উপাচার্য মিথ্যেবাদী এবং নাটক করতে ভালোবাসেন । আজকেও উনি যা করে গেলেন গোটাটাই একটা মিথ্যা নাটক । আমরা আমাদের দাবিতে অনড় থেকে আন্দোলন চালিয়ে যাব ।"