কেশপুর, 27 জুলাই: তৃণমূলের স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যের নেতৃত্বে শসকদলের লোকেদেরই জমি দখলের অভিযোগ উঠল, যা নিয়ে শোরগোল কেশপুর ব্লকের জগন্নাথপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাগপাতা গ্রামে ৷ বাগপাতা গ্রামের স্থানীয় তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য মনোরঞ্জন খাঁয়ের নেতৃত্বেই প্রায় 15 থেকে 20 বিঘা জমিতে চাষ করতে দেওয়া হয়নি স্থানীয় কৃষকদের, এমনই অভিযোগ উঠেছে ৷
এই জমি দখলকে কেন্দ্র করে সেই গোষ্ঠী কোন্দলের ছবিটা ফের প্রকাশ্যে চলে এসেছে ৷ দুই বিঘার বেশি জমিতে জমির মালিককেই চাষ করতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ ৷ সেখানে চাষ করেছে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য মনোরঞ্জন খাঁয়ের নেতৃত্বে কিছু দুষ্কৃতী ৷
দু'দিন আগেই বাঁশ, লাঠি নিয়ে জমি দখল করে তৃণমূলের লোকজন ৷ স্থানীয় তৃণমূল সমর্থিত কৃষকদের অভিযোগ, এখানেও সন্দেশখালি মডেলকে সামনে আনতে চলেছে তৃণমূল নেতৃত্ব ৷ তৃণমূলের খোদ পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে পুলিশ-প্রশাসন, পঞ্চায়েত প্রধানের দরবারে গিয়েও কোনও লাভ হয়নি ৷ শেষ পর্যন্ত কোর্টের দ্বারস্থ হলেন শাসকদলের কৃষকরা ৷
ঘটনাক্রমে জানা যায়, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার অন্যতম বিধানসভা কেশপুরের বর্তমান তৃণমূলের ব্লক সহ-সভাপতি বিশ্বজিৎ বর দোলুইয়ের অনুগামী বলেই পরিচিত এই মনোরঞ্জন খাঁ। আর যাঁদের জমি দখল করা হয়েছে, তাঁরা শাসকদলের ব্লক সভাপতি প্রদ্যুৎ পাঁজার অনুগামী বলেই পরিচিত। কেশপুর ব্লকের জগন্নাথপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত বাগপাতা গ্রামে স্থানীয় তৃণমূল কৃষকদের অভিযোগ, চাষের জমি তাঁদের, কিন্তু চাষ করতে দিচ্ছে না তৃণমূলেরই ব্লক সহ-সভাপতির নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন দুষ্কৃতী ৷ খোদ পঞ্চায়েত সদস্য মনোরঞ্জন খাঁ, তার লেঠেল বাহিনী নিয়ে এসে জোর করে জমি দখল করে চাষ করছেন ৷
কৃষকদের অভিযোগ, প্রতিবাদ করতে গেলেই জুটছে মারধর, চলছে অত্যাচার ৷ এই ঘটনায় স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধানকে জানিয়ে কোনও সমাধান হয়নি ৷ তাই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন জমির মালিকরা ৷ চাষের মরশুমেও যদি তাঁরা চাষ করতে না পারেন, তবে সমস্যায় পড়তে হবে কৃষকদেরই ৷
এই বিষয়ে কৃষক গোবিন্দ দোলই বলেন, "এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য মনোরঞ্জন খাঁ শাসকদলে রয়েছেন ৷ আমরাও শাসকদলের কর্মী ৷ কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে আমাদের জমি কেড়ে নিয়েছে এই পঞ্চায়েত সদস্য ৷ শুধু আমাদের জমি নয়, এলাকার সাধারণ কৃষকদের জমিও তারা কেড়ে নিয়েছে ৷ কিছু বলতে গেলেই দুষ্কৃতী দিয়ে লাঠিসোঁটা নিয়ে মারধর করে আমাদের ৷ আমরা বিষয়টি নিয়ে পুলিশ প্রশাসনের পাশাপাশি কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছি ৷ আমরা আমাদের জমি ফেরত চাই ৷"
স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান উৎপল অধিকারীর অবশ্য বলেন, "যে বা যারা এ ধরনের কাজ করেছেন খুব অন্যায় করেছেন ৷ ইতিমধ্যে পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে পুরো বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করা হয়েছে ৷ কৃষকদের অভিযোগ সঠিক ৷"
অন্যদিকে, এবিষয়ে কেশপুরের তৃণমূল বিধায়ক শিউলি সাহা বলেন, "এরকম ঘটনা আমি শুনেছি ৷ তবে এই ঘটনা যদি সত্যি হয়ে থাকে, তা কোনওভাবেই বরদাস্ত করব না ৷ পুলিশকে বলব তারা আইন মাফিক ব্যবস্থা নিক, দোষীরা যেন উপযুক্ত শাস্তি পায় ৷" যদিও এই ঘটনায় পালটা কটাক্ষ করেছে বিজেপি ৷ বিজেপির বক্তব্য এই ধরনের বিষয় সারা রাজ্যে চলছে, কেশপুর তার ব্যতিক্রম নয় ৷