ব্যারাকপুর, 25 অগস্ট: আরজি কর-কাণ্ডে নির্যাতিতার দেহ তাড়িঘড়ি সৎকার করা নিয়ে এবার শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ উড়িয়ে পালটা জবাব দিলেন পানিহাটির তৃণমূল বিধায়ক নির্মল ঘোষ। রবিবার খড়দায় তিনি বলেন, "এলাকার মানুষের জন্য আমি প্রতিদিন আছি। যাঁরা একথা বলছে তাঁরা রাজনৈতিক চক্রান্ত করছে। আমি প্রথম দিন থেকেই নির্যাতিতার পরিবারের পাশে রয়েছি। আমিই প্রথম ফাঁসির দাবি জানিয়েছি। কারণ, ওই মেয়েটিকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমরা চাইছি সুবিচার। আর ওরা চাইছে গদি। এখানেই আমাদের সঙ্গে সিপিএম এবং বিজেপির পার্থক্য।"
আরজি করের পড়ুয়া চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার পর দেহ শ্মশানে নিয়ে গিয়ে দ্রুত সৎকার করা নিয়ে প্রথম থেকেই সরব নির্যাতিতার পরিবার। এনিয়ে বিরোধীরাও সোচ্চার হয়েছে। বিশেষ করে স্থানীয় বিধায়ক ও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সরাসরি মমতা বন্দোপাধ্যায়কে একহাত নেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
সংবাদ মাধ্যমের সামনে তিনি নির্মল ঘোষের শ্মশানে হাজির থাকার ছবি দেখিয়ে দাবি করেন, "পানিহাটির বিধায়ক নির্মল ঘোষ এবং কলকাতা পুলিশের ডিসি অভিষেক গুপ্তা, দু'জনে শ্মশানে উপস্থিত থেকে নির্যাতিতার দেহ তাড়াতাড়ি সৎকার করেছেন। এঁরা কেউই নির্যাতিতার আত্মীয় নন ৷ তা সত্ত্বেও মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এঁরা দু'জনে পানিহাটি শ্মশানে হাজির ছিলেন। এঁদের সিবিআই হেফাজতে নেওয়া প্রয়োজন।"
এবার সেই সমস্ত অভিযোগ নিয়েই মুখ খুললেন বিধানসভায় তৃণমূলের মুখ্য সচেতক ও পানিহাটির বিধায়ক। এই বিষয়ে তিনি বলেন, "দাহ করা নিয়ে যাঁরা বলছে, তাঁরা পাগল ছাড়া আর কিছুই না। আমি 55 বছর এখানে আছি। 30 বছর বিধায়ক। যখনই এখানে কোনও অঘটন ঘটেছে তখনই সবার প্রথমে আমি ছুটে গিয়েছি। একথা বলার মানে তাঁরা চাই ক্ষমতা।" নির্যাতিতার দেহ সৎকার করা নিয়ে কী কোনও চাপ ছিল ? নির্যাতিতার মৃতদেহের আগে আরও দুটি দেহ থাকা সত্ত্বেও কেন তাঁর দেহ আগে দাহ করা হল ? এর ব্যাখা দিতে গিয়ে নির্মল ঘোষ বলেন, "ময়নাতদন্তের পর বাইরে থেকে কোনও দেহ আসলে সেই দেহটি দাহ করা হয় প্রথমে। এটাই নিয়ম। সবাই সেটা জানে। নতুন কিছু নয়। তাছাড়া সেদিন দাহ করার সময় গমগম করছিল শ্মশান। তাই শ্মশান কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। নির্যাতিতার বাবা-মা যেটা চাইবে, সেটাই তো হবে !"
এর সঙ্গেই তিনি বলেন, "শুভেন্দুর বাবার সঙ্গে 10 বছর বিধানসভায় বসেছি আমি। এটা আমার এলাকা। আমি বাইরে থেকে আসিনি। আর মেয়েটিকে জন্মের সময় থেকে আমি দেখেছি। এখন তো সিবিআই তদন্ত করছে। সবাইকে অনুরোধ করব সিবিআইকে গিয়ে জিজ্ঞাসা করুন, সব দোষীরা কবে ধরা পড়বে ?" এরপরই শুভেন্দু'র দাবি খারিজ করে পানিহাটির বিধায়ক নির্মল ঘোষ বলেন, "এটা বিজেপির কল্পনা। গেলাম আর দেহ দাহ করে দিলাম- এরকম হয় নাকি ? সবটাই সরকারি নিয়মে হয়েছে। মৃতদেহ হাসপাতাল, পুলিশ ছেড়ে দেওয়ার পর মৃতার বাবা-মা যা বলবেন সেটাই তো আমরা করব। আমরা নিজে থেকে কেন করব ? করিনি। সত্যের অন্বেষণে বিভ্রান্ত হতেই এই কথাগুলো বলছে ওরা।"