আরামবাগ, 9 অক্টোবর: দেবীর বোধনের আগের রাতে বচসার জেরে মর্মান্তিক পরিণতি হল এক যুবকের ৷ অভিযোগ, দেবাশিস আশ নামে ওই যুবককে বেধড়ক মারধর করা হয় ৷ তার জেরেই বছর পঁয়ত্রিশের ওই যুবক মারা যান ৷
মঙ্গলবার রাতে হুগলির আরামবাগ পুরসভার 4 নম্বর ওয়ার্ডের পুরাতন বাজার সংলগ্ন এলাকায় ঘটনাটি ঘটে ৷ নিহতের পরিবারের দাবি, স্থানীয় তৃণমূল নেতা হেমন্ত পালের নেতৃত্বে মারধরের ঘটনা ঘটেছে ৷ পুলিশ হেমন্ত পালকে গ্রেফতার করেছে ৷ এই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্বের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি ৷
দেবাশিস আশের বাড়ি স্থানীয় শ্রীনিকেতন পল্লিতে ৷ মঙ্গলবার রাতে পুরাতন বাজার সংলগ্ন এলাকায় হেমন্ত পাল, সায়ন চক্রবর্তী ও অচিন্ত্য নামের এক যুবক মদ্যপান করছিলেন বলে জানা গিয়েছে ৷ সায়ন দেবাশিস আশের ভাগনে ৷ তিনি সায়নকে ডাকতে যান ৷ সায়নের দাবি, ‘‘আমাকে নিয়ে খারাপ কথা বলায় মামা রেগে যায় ৷ মামা উত্তেজিত হয়ে যায় ৷ তখন হেমন্ত পাল ও অচিন্ত্যর সঙ্গে মামা বচসায় জড়িয়ে পড়ে ৷ তখন ওরা মামাকে বাঁশ-রড দিয়ে মারধর করে ৷’’
ঘটনার পর দেবাশিসকে উদ্ধার করে আরামবাগ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন ৷ পরিবারের তরফে এই নিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয় ৷ পুলিশ রাতেই হেমন্ত পালকে আটক করে ৷ বুধবার সকালে পুলিশের তরফ থেকে জানা গিয়েছে যে হেমন্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে ৷
এই ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন দেবাশিসের জামাইবাবু তথা সায়নের বাবা সুবীর চক্রবর্তী ৷ তিনি বলেন, ‘‘দেবাশিস রাজমিস্ত্রির কাজ করে ৷ খুব ভালো ছেলে ৷ এমনকী কী করল যে মেরে দিতে হল ?’’ তিনি সরাসরি হেমন্ত পালের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন ৷ তাঁর দাবি, হেমন্ত পালের নেতৃত্বেই হামলা হয়েছে ৷ তিনি সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পালটা পদক্ষেপ করার ৷
এই নিয়ে হেমন্ত পালের মা সুজাতা পাল জানান, তাঁর ছেলে তৃণমূলের ওয়ার্ড সভাপতি ৷ তবে ছেলেকে কী কারণে পুলিশ ধরে নিয়ে গিয়েছে, সেই বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না ৷ এই নিয়ে তৃণমূল নেতারাও মুখে কুলুপ এঁটেছেন ৷
(গণপিটুনি একটি সামাজিক ব্যাধি। আমরা জানি হিংসা কোনও সমস্যার সমাধান নয়। আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। কোনও গুজবে প্রভাবিত হবেন না। কোথাও কোনও সমস্যা হলে সরাসরি পুলিশ ও প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। সুরক্ষিত থাকুন। সমাজকে সুরক্ষিত রাখার ভার আপনারও।)