ETV Bharat / state

হুবহু আরজি করের ঘটনা কোচবিহার মেডিক্যালে ! থ্রেট কালচারের শেষ চাইছেন মৃত ছাত্রীর বাবা-মা - Mysterious Death of Junior Doctor

author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : 2 hours ago

Mysterious Death of Junior Doctor in Cooch Behar Medical College: গতবছর জুন মাসে কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক পড়ুয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যু হয় ৷ যে ঘটনায় মেডিক্যাল কলেজে 'থ্রেট কালচার', ব়্যাগিং এবং পরীক্ষায় প্রকাশ্যে টুকলির মতো ভয়াবহ অভিযোগ করলেন মৃত ছাত্রীর বাবা-মা ৷ সেই সঙ্গে মেয়ের মৃত্যুর সত্য উদঘাটনের দাবি তাঁদের ৷

Mysterious Death of Junior Doctor
'থ্রেট কালচার' বন্ধের দাবি কোচবিহার মেডিক্যালের মৃত ছাত্রীর বাবা-মা’র ৷ (ইটিভি ভারত)

বর্ধমান, 27 সেপ্টেম্বর: আরজি কর-কাণ্ডে বিচারের দাবিতে তোলপাড় রাজ্য তথা দেশ ৷ ঠিক তখনই আরেক মেডিক্যাল ছাত্রীর মৃত্যুরহস্য উদঘাটনের দাবি তুলেছেন তাঁর বাবা-মা ৷ একবছর আগে কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ওই জুনিয়র ডাক্তারের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয় ৷ সেই ঘটনাতেও কলেজ কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে একাধিক গাফিলতি ও অসহযোগিতার অভিযোগ করলেন ওই জুনিয়র ডাক্তারের বাবা-মা ৷

তবে, তাঁরা বিচার পাবেন কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত না-হলেও, রাজ্যের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজগুলিতে যে 'থ্রেট কালচার' এবং আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে, তা বন্ধ করার দাবি তুললেন তাঁরা ৷ 2023 সালের 12 জুন রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয় কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ওই পড়ুয়ার ৷ তাঁর বাবা অভিযোগ করেছেন, কলেজের অধ্যক্ষ ঘটনার খবর সকাল সাড়ে ছ’টায় পেয়েছিলেন ৷ কিন্তু, তাঁকে ফোন করা হয় সাড়ে 12টার পর ৷ এমনকি, তাঁরা কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজে পৌঁছানোর প্রায় দেড় ঘণ্টা পর মেয়ের দেহ দেখতে পেয়েছিলেন ৷

'থ্রেট কালচার' বন্ধের দাবি কোচবিহার মেডিক্যালের মৃত ছাত্রীর বাবা-মা’র ৷ (ইটিভি ভারত)

মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ কেন তাঁদের এত দেরিতে মেয়ের মৃত্যুর খবর দিল ? সেই প্রশ্ন তুলেছেন মৃত ওই পড়ুয়ার বাবা ৷ তবে, এই ঘটনায় তাঁরা পুলিশে কোনও লিখিত অভিযোগ সেই সময় দায়ের করেননি ৷ এ নিয়ে মৃত ছাত্রীর বাবার অভিযোগ, পুলিশ শুরু থেকে তাঁদের বিভ্রান্ত ও অসহযোগিতা করেছিল ৷ এমনকি মৃত পড়ুয়ার দেহের ময়নাতদন্ত করতেও গড়িমসি করছিল পুলিশ ৷ তারা মৃত পড়ুয়ার বাবার কাছে জানতে চেয়েছিল, দেহের ময়নাতদন্ত করার প্রয়োজন আছে কি না !

মৃতের বাবা অভিযোগ করেছেন, পুলিশের তরফে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার আগেই মৌখিকভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, তাঁদের মেয়ে 'আত্মহত্যা' করেছেন ৷ তাঁর দাবি, "পুলিশ ময়নাতদন্তের আগেই আমাদের বলে দিয়েছিল মেয়ে আত্মহত্যা করেছে ৷ বিশেষ কিছুই পাওয়া যায়নি ৷ আপনার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে ৷ আমরা 10-12 জনকে জিজ্ঞাসাবাদও করেছি ৷" পুলিশের সেদিনের দাবির প্রেক্ষিতে, মৃত ছাত্রীর বাবা প্রশ্ন তুলেছেন, "অভিযোগ কোথায় জানাব ? পুলিশই তো শুরু থেকে গা-ছাড়া মনোভাব দেখিয়েছে ৷ আমাদের সঙ্গে কোনওরকম সহযোগিতা করা হয়নি ৷ সেখানে কোন ভরসায় অভিযোগ করতাম ?"

মৃত ছাত্রীর বাবা কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধেও অভিযোগের আঙুল তুলেছেন ৷ তিনি জানান, কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি অনুযায়ী, যে ঘরে তাঁর মেয়ের দেহ উদ্ধার হয়, সেই জায়গাটি তাঁদের দেখতে দেওয়া হয়নি ৷ আর কলেজ কর্তৃপক্ষ দাবি করেছিল, ওই পড়ুয়া গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন ৷ সেখানে আসল ঘটনা কী, তাঁরা আজও জানেন না ৷

মৃত ছাত্রীর মা জানিয়েছেন, ঘটনাস্থলে তাঁর মেয়ের অন্য তিন বান্ধবীর বাবা-মায়েরাও ছিলেন ৷ অন্যসময় ফোনে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন ৷ কিন্তু, সেদিন তাঁদের সঙ্গে কোনও কথাই বলেননি ওই তিন ছাত্রীর বাবা-মা ৷ এমনকি, নিজেদের মেয়েদের সেখান থেকে নিয়ে চলে যান তাঁরা ৷ তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, মেয়ের মারা যাওয়ার খবর তাঁদের আগে অন্য অভিভাবকরা পেয়েছেন ৷ এমনকি তাঁদের আগে সেখানে পৌঁছেও গিয়েছিলেন ৷ এটা কীভাবে সম্ভব ? যার উত্তর আজও অজানা ওই মৃত মেডিক্যাল পড়ুয়ার বাবা-মায়ের ৷

উল্লেখ্য, আরজি কর আবহে যখন চারদিকে সুবিচার ও থ্রেট কালচার বন্ধের দাবি উঠেছে, তখন একবছর আগে নিজের মেয়ের সঙ্গে ঘটে যাওয়া অজানা সত্য উদঘাটনের দাবি তুললেন এক বাবা ৷ যদিও, বিষয়টি জানার পর রাজ্যের চিকিৎসকদের সংগঠনের তরফে ওই পরিবারের সঙ্গে দেখা করা হয়েছিল ৷ তাঁরা আশ্বাস দিয়েছিলেন, পরিবার চাইলে আইনি সাহায্য করা হবে ৷ তবে, বিচার চাইলেও চিকিৎসক সংগঠনকে এখনও তাঁরা সেভাবে কিছু জানাননি ৷

বর্ধমান, 27 সেপ্টেম্বর: আরজি কর-কাণ্ডে বিচারের দাবিতে তোলপাড় রাজ্য তথা দেশ ৷ ঠিক তখনই আরেক মেডিক্যাল ছাত্রীর মৃত্যুরহস্য উদঘাটনের দাবি তুলেছেন তাঁর বাবা-মা ৷ একবছর আগে কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ওই জুনিয়র ডাক্তারের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয় ৷ সেই ঘটনাতেও কলেজ কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে একাধিক গাফিলতি ও অসহযোগিতার অভিযোগ করলেন ওই জুনিয়র ডাক্তারের বাবা-মা ৷

তবে, তাঁরা বিচার পাবেন কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত না-হলেও, রাজ্যের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজগুলিতে যে 'থ্রেট কালচার' এবং আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে, তা বন্ধ করার দাবি তুললেন তাঁরা ৷ 2023 সালের 12 জুন রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয় কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ওই পড়ুয়ার ৷ তাঁর বাবা অভিযোগ করেছেন, কলেজের অধ্যক্ষ ঘটনার খবর সকাল সাড়ে ছ’টায় পেয়েছিলেন ৷ কিন্তু, তাঁকে ফোন করা হয় সাড়ে 12টার পর ৷ এমনকি, তাঁরা কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজে পৌঁছানোর প্রায় দেড় ঘণ্টা পর মেয়ের দেহ দেখতে পেয়েছিলেন ৷

'থ্রেট কালচার' বন্ধের দাবি কোচবিহার মেডিক্যালের মৃত ছাত্রীর বাবা-মা’র ৷ (ইটিভি ভারত)

মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ কেন তাঁদের এত দেরিতে মেয়ের মৃত্যুর খবর দিল ? সেই প্রশ্ন তুলেছেন মৃত ওই পড়ুয়ার বাবা ৷ তবে, এই ঘটনায় তাঁরা পুলিশে কোনও লিখিত অভিযোগ সেই সময় দায়ের করেননি ৷ এ নিয়ে মৃত ছাত্রীর বাবার অভিযোগ, পুলিশ শুরু থেকে তাঁদের বিভ্রান্ত ও অসহযোগিতা করেছিল ৷ এমনকি মৃত পড়ুয়ার দেহের ময়নাতদন্ত করতেও গড়িমসি করছিল পুলিশ ৷ তারা মৃত পড়ুয়ার বাবার কাছে জানতে চেয়েছিল, দেহের ময়নাতদন্ত করার প্রয়োজন আছে কি না !

মৃতের বাবা অভিযোগ করেছেন, পুলিশের তরফে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার আগেই মৌখিকভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, তাঁদের মেয়ে 'আত্মহত্যা' করেছেন ৷ তাঁর দাবি, "পুলিশ ময়নাতদন্তের আগেই আমাদের বলে দিয়েছিল মেয়ে আত্মহত্যা করেছে ৷ বিশেষ কিছুই পাওয়া যায়নি ৷ আপনার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে ৷ আমরা 10-12 জনকে জিজ্ঞাসাবাদও করেছি ৷" পুলিশের সেদিনের দাবির প্রেক্ষিতে, মৃত ছাত্রীর বাবা প্রশ্ন তুলেছেন, "অভিযোগ কোথায় জানাব ? পুলিশই তো শুরু থেকে গা-ছাড়া মনোভাব দেখিয়েছে ৷ আমাদের সঙ্গে কোনওরকম সহযোগিতা করা হয়নি ৷ সেখানে কোন ভরসায় অভিযোগ করতাম ?"

মৃত ছাত্রীর বাবা কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধেও অভিযোগের আঙুল তুলেছেন ৷ তিনি জানান, কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি অনুযায়ী, যে ঘরে তাঁর মেয়ের দেহ উদ্ধার হয়, সেই জায়গাটি তাঁদের দেখতে দেওয়া হয়নি ৷ আর কলেজ কর্তৃপক্ষ দাবি করেছিল, ওই পড়ুয়া গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন ৷ সেখানে আসল ঘটনা কী, তাঁরা আজও জানেন না ৷

মৃত ছাত্রীর মা জানিয়েছেন, ঘটনাস্থলে তাঁর মেয়ের অন্য তিন বান্ধবীর বাবা-মায়েরাও ছিলেন ৷ অন্যসময় ফোনে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন ৷ কিন্তু, সেদিন তাঁদের সঙ্গে কোনও কথাই বলেননি ওই তিন ছাত্রীর বাবা-মা ৷ এমনকি, নিজেদের মেয়েদের সেখান থেকে নিয়ে চলে যান তাঁরা ৷ তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, মেয়ের মারা যাওয়ার খবর তাঁদের আগে অন্য অভিভাবকরা পেয়েছেন ৷ এমনকি তাঁদের আগে সেখানে পৌঁছেও গিয়েছিলেন ৷ এটা কীভাবে সম্ভব ? যার উত্তর আজও অজানা ওই মৃত মেডিক্যাল পড়ুয়ার বাবা-মায়ের ৷

উল্লেখ্য, আরজি কর আবহে যখন চারদিকে সুবিচার ও থ্রেট কালচার বন্ধের দাবি উঠেছে, তখন একবছর আগে নিজের মেয়ের সঙ্গে ঘটে যাওয়া অজানা সত্য উদঘাটনের দাবি তুললেন এক বাবা ৷ যদিও, বিষয়টি জানার পর রাজ্যের চিকিৎসকদের সংগঠনের তরফে ওই পরিবারের সঙ্গে দেখা করা হয়েছিল ৷ তাঁরা আশ্বাস দিয়েছিলেন, পরিবার চাইলে আইনি সাহায্য করা হবে ৷ তবে, বিচার চাইলেও চিকিৎসক সংগঠনকে এখনও তাঁরা সেভাবে কিছু জানাননি ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.