ETV Bharat / state

উইকিপিডিয়ায় আরজি করের নির্যাতিতার নাম-ছবি! মুছে ফেলার নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের - Kolkata Rape and Murder Case

SC Orders to Wikipedia: সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী কোনও ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় নির্যাতিতার নাম, ছবি, পরিচয় প্রকাশ করা যাবে না ৷ এই নির্দেশ অমান্য করে আরজি করের নির্যাতিতার নাম, পরিচয়, ছবি ছড়িয়ে পড়েছে সোশাল মিডিয়ায় ৷

SC Direction to Wikipedia
আরজি করের নির্যাতিতার নাম-ছবি উইকিপিডিয়ায় (ইটিভি ভারত)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Sep 17, 2024, 3:37 PM IST

Updated : Sep 17, 2024, 8:04 PM IST

নয়াদিল্লি, 17 সেপ্টেম্বর: আরজি কর হাসপাতালে ধর্ষিত পড়ুয়া-চিকিৎসকের ছবি ও পরিচয় সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে ৷ এর আগে 9 সেপ্টেম্বর এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল সুপ্রিম কোর্ট ৷ মঙ্গলবার তৃতীয় শুনানির দিন শীর্ষ আদালত উইকিপিডিয়াকে নির্দেশ দিল, তারা যেন নির্যাতিতার নাম, পরিচয় মুছে ফেলে ৷

এদিন আরজি করের পড়ুয়া-চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের মামলায় সিবিআই পক্ষের আইনজীবী সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা এদিন আদালতে জানান, উইকিপিডিয়াতে নির্যাতিতার নাম, ছবি দেখানো হচ্ছে ৷ দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা, বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চ তখন নির্দেশ দেয়, আরজি করের নির্যাতিতার নাম, পরিচয় উইকিপিডিয়া থেকে মুছে ফেলতে হবে ৷

বেঞ্চ জানায়, "মৃতার সম্মান ও গোপনীয়তার স্বার্থে এটাই নীতি যে, ধর্ষণ ও খুনের মামলায় নির্যাতিতার পরিচয় প্রকাশ করা যাবে না ৷ এই সংক্রান্ত নির্দেশ উইকিপিডিয়ার মেনে চলা উচিত ৷" এদিন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় জানান, ভারতীয় আইনে এই কথা স্পষ্ট বলা আছে ৷

এদিন শুনানির প্রথমে রাজ্যের পক্ষে প্রবীণ আইনজীবী কপিল সিব্বল সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার শুনানির সরাসরি সম্প্রচার বন্ধ করার আবেদন জানান ৷ তা খারিজ করে দেন দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় ৷ আরজি করে পড়ুয়া-চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় তদন্ত করছে সিবিআই ৷ সিবিআই এই মামলায় স্টেটাস রিপোর্ট জমা দেয় শীর্ষ আদালতে ৷

এই রিপোর্ট দেখে তিন বিচারপতি জানান, তাঁরা বিচলিত বোধ করছেন ৷ তাঁরা সিবিআই-এর স্টেটাস রিপোর্ট নিয়ে প্রকাশ্য আদালতে কিছু বলতে চাননি ৷ তাতে তদন্ত প্রভাবিত হতে পারে, জানায় বেঞ্চ ৷ আরজি কর হাসপাতালে দুর্নীতির তদন্তও করছে এই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এবং ইডি ৷ সিবিআই-কে দুর্নীতির তদন্তের স্টেটাস রিপোর্টও আদালতে জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ৷ তৃতীয় শুনানিতে চিকিৎসকদের নিরাপত্তায় জোর দেয় শীর্ষ আদালত ৷

সুপ্রিম ঘটনাপ্রণালী

মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে জুনিয়র চিকিৎসকদের বৈঠক

সোমবার রাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের কালীঘাটের বাড়িতে জুনিয়র চিকিৎসকদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক হয় । হাসপাতালগুলিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো-সহ অধিকাংশ দাবিই মেনে নিয়েছে রাজ্য সরকার । সেই দাবিগুলি কার্যকর হলে জুনিয়র চিকিৎসরকরা কাজে যোগ দেবেন বলে গতকাল রাতেই জানিয়েছিলেন । সেই বিষয়টি আজ শীর্ষ আদালতে উল্লেখ করেন জুনিয়র চিকিৎসকদের পক্ষে প্রবীণ আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিংহ ।

স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে

আন্দোলনকারী ডাক্তাররা কাজে যোগ না-দেওয়ায় স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে বলে যে দাবি রাজ্য করেছে, তা ঠিক নয় বলেও জানান সিনিয়র চিকিৎসকদের তরফের প্রবীণ আইনজীবী করুণা নন্দী ।

সঞ্জয় রায়ও তো সিভিক ভলান্টিয়ার ছিলেন

উলটে রাজ্যের পক্ষে প্রবীণ আইনজীবী কপিল সিব্বল বেঞ্চের কাছে জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে না ফেরা নিয়ে অনুযোগ করলে পালটা প্রধান বিচারপতি নিরাপত্তার প্রশ্ন তোলেন । তিনি প্রশ্ন করেন, ‘শেষ বার অর্ডারে চিকিৎসকদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করতে বলা হয়েছিল। তার কী হল ?’

এখানে রাজ্য যে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে, তা পড়ে শোনান আইনজীবী কপিল সিব্বল। সেখানে রাত্তিরের সাথীতে সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগের কথা ওঠে । এতে আপত্তি জানিয়ে বেঞ্চ জানায়, আবার ডাক্তারদের নিরাপত্তায় চুক্তিভিত্তিক নিরাপত্তাকর্মী কেন ? সঞ্জয় রায়ও তো একজন সিভিক ভলান্টিয়ার ছিলেন । তাঁদের হাত থেকে মহিলা চিকিৎসকদের সুরক্ষা দেবে কে ?

প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় উল্লেখ করেন, ‘রাজ্যের ৪৫টি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যে মহিলা চিকিৎসকরা কাজ করেন, তাঁরা সদ্য দ্বাদশ শ্রেণি পাশ করেছেন । তাঁদের বয়স খুব কম। এই কথাটা আপনাকে মাথায় রাখতে হবে। পুলিশদেরই নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকতে হবে ।’ সিভিক ভলান্টিয়ারের তত্ত্ব খারিজ করে দেয় শীর্ষ আদালত। আরজি কর হাসপাতালে বর্তমানে 36-37টি সিসি ক্যামেরা আছে শুনে অবাক হয়ে যান দেশের প্রধান বিচারপতি । আইনজীবী কপিল সিব্বল জানান, সরকার হাসপাতালে আরও 415টি সিসি ক্যামেরা লাগানোর ছাড়পত্র দিয়েছে । 7-14 দিনের মধ্যে এই সিসি ক্যামেরা লাগানোর কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে আশ্বস্ত করেন রাজ্যের আইনজীবী ।

মহিলা চিকিৎসকদের রাতের শিফট

হাসপাতালে নিরাপত্তার ব্যবস্থার সমাধানে রাজ্য সরকার একটি নির্দেশিকায় জানায়, মহিলা চিকিৎসকরা রাতে কাজ করবেন না। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এতে প্রশ্ন করেন, কেন ? তাঁরা যে কোনও পরিস্থিতিতে কাজ করতে প্রস্তুত। 12 ঘণ্টার বেশি কাজ করবেন না, বা রাতে কাজ করা যাবে না, তাঁরা এমনটা চান না । মহিলারা সমানাধিকার চান ।

রাজ্য সরকারকে তার জন্য নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করতে হবে । সেনাবাহিনী এবং অন্য অনেক ক্ষেত্রেই মহিলারা সারারাত কাজ করেন । এখানে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা জানান, রাজ্য সরকার সুরক্ষা দিতে না-পারলে কেন্দ্রীয় সরকার তা করবে । তখন রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বল অবশ্য নতুন নির্দেশিকা জারির কথা জানান ।

সেমিনার হলে কারা ছিলেন ?

9 অগস্ট আরজি কর হাসপাতালের 4 তলার সেমিনার হলে তরুণী পড়ুয়া-চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয় । ছাত্রদের অভিযোগ, সেদিন ঘটনাস্থলে অনেকে হাজির ছিলেন, যাঁদের বেশির ভাগই ডাক্তার । এর কারণ নিয়েও প্রশ্ন ওঠে । এই বিষয়টি শীর্ষ আদালতে উত্থাপন করেন আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিংহ । তিনি জানান, 9 অগস্ট অপরাধস্থলে যাঁরা উপস্থিত ছিলেন, তাঁদের নাম একটি মুখবন্ধ খামে সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেবেন ।

আরজি করের নির্যাতিতার বাবার লেখা একটি চিঠির বিষয়ে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় জানান, ওই চিঠিতে পড়ুয়া-চিকিৎসকের বাবা তদন্ত সংক্রান্ত কতগুলি নির্দিষ্ট বিষয়ের উল্লেখ করেছেন। সিবিআই-এর সেগুলি খতিয়ে দেখা উচিত ।

সিসি ফুটেজ

ধোঁয়াশা তৈরি হয় কলকাতা পুলিশের সিবিআই-কে দেওয়া সিসি ফুটেজ নিয়েও । কলকাতা পুলিশ সব সিসি ফুটেজ সিবিআই-কে দেয়নি বলে অভিযোগ ওঠে আদালত কক্ষে । এই অবস্থায় দেশের প্রধান বিচারপতি সিবিআই-এর পক্ষে সলিসিটির জেনারেল তুষার মেহতাকে নির্দেশ দেন, তিনি যেন কলকাতা পুলিশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তলব করে এর সমাধান করে নেন ।

এদিন শুনানি চলাকালীন এক আইনজীবী হঠাৎ মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইস্তফার দাবি তোলেন। আদালত তাঁকে ভর্ৎসনা করে স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, এটা কোনও রাজনৈতিক মঞ্চ নয় । সব মিলিয়ে এদিন শীর্ষ আদালত এই তদন্তের জন্য সিবিআই-কে সময় দেওয়ার কথা জানিয়েছে । কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার পেশ করা স্টেটাস রিপোর্ট দেখে বেঞ্চ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ।

নয়াদিল্লি, 17 সেপ্টেম্বর: আরজি কর হাসপাতালে ধর্ষিত পড়ুয়া-চিকিৎসকের ছবি ও পরিচয় সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে ৷ এর আগে 9 সেপ্টেম্বর এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল সুপ্রিম কোর্ট ৷ মঙ্গলবার তৃতীয় শুনানির দিন শীর্ষ আদালত উইকিপিডিয়াকে নির্দেশ দিল, তারা যেন নির্যাতিতার নাম, পরিচয় মুছে ফেলে ৷

এদিন আরজি করের পড়ুয়া-চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের মামলায় সিবিআই পক্ষের আইনজীবী সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা এদিন আদালতে জানান, উইকিপিডিয়াতে নির্যাতিতার নাম, ছবি দেখানো হচ্ছে ৷ দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা, বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চ তখন নির্দেশ দেয়, আরজি করের নির্যাতিতার নাম, পরিচয় উইকিপিডিয়া থেকে মুছে ফেলতে হবে ৷

বেঞ্চ জানায়, "মৃতার সম্মান ও গোপনীয়তার স্বার্থে এটাই নীতি যে, ধর্ষণ ও খুনের মামলায় নির্যাতিতার পরিচয় প্রকাশ করা যাবে না ৷ এই সংক্রান্ত নির্দেশ উইকিপিডিয়ার মেনে চলা উচিত ৷" এদিন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় জানান, ভারতীয় আইনে এই কথা স্পষ্ট বলা আছে ৷

এদিন শুনানির প্রথমে রাজ্যের পক্ষে প্রবীণ আইনজীবী কপিল সিব্বল সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার শুনানির সরাসরি সম্প্রচার বন্ধ করার আবেদন জানান ৷ তা খারিজ করে দেন দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় ৷ আরজি করে পড়ুয়া-চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় তদন্ত করছে সিবিআই ৷ সিবিআই এই মামলায় স্টেটাস রিপোর্ট জমা দেয় শীর্ষ আদালতে ৷

এই রিপোর্ট দেখে তিন বিচারপতি জানান, তাঁরা বিচলিত বোধ করছেন ৷ তাঁরা সিবিআই-এর স্টেটাস রিপোর্ট নিয়ে প্রকাশ্য আদালতে কিছু বলতে চাননি ৷ তাতে তদন্ত প্রভাবিত হতে পারে, জানায় বেঞ্চ ৷ আরজি কর হাসপাতালে দুর্নীতির তদন্তও করছে এই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এবং ইডি ৷ সিবিআই-কে দুর্নীতির তদন্তের স্টেটাস রিপোর্টও আদালতে জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ৷ তৃতীয় শুনানিতে চিকিৎসকদের নিরাপত্তায় জোর দেয় শীর্ষ আদালত ৷

সুপ্রিম ঘটনাপ্রণালী

মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে জুনিয়র চিকিৎসকদের বৈঠক

সোমবার রাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের কালীঘাটের বাড়িতে জুনিয়র চিকিৎসকদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক হয় । হাসপাতালগুলিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো-সহ অধিকাংশ দাবিই মেনে নিয়েছে রাজ্য সরকার । সেই দাবিগুলি কার্যকর হলে জুনিয়র চিকিৎসরকরা কাজে যোগ দেবেন বলে গতকাল রাতেই জানিয়েছিলেন । সেই বিষয়টি আজ শীর্ষ আদালতে উল্লেখ করেন জুনিয়র চিকিৎসকদের পক্ষে প্রবীণ আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিংহ ।

স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে

আন্দোলনকারী ডাক্তাররা কাজে যোগ না-দেওয়ায় স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে বলে যে দাবি রাজ্য করেছে, তা ঠিক নয় বলেও জানান সিনিয়র চিকিৎসকদের তরফের প্রবীণ আইনজীবী করুণা নন্দী ।

সঞ্জয় রায়ও তো সিভিক ভলান্টিয়ার ছিলেন

উলটে রাজ্যের পক্ষে প্রবীণ আইনজীবী কপিল সিব্বল বেঞ্চের কাছে জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে না ফেরা নিয়ে অনুযোগ করলে পালটা প্রধান বিচারপতি নিরাপত্তার প্রশ্ন তোলেন । তিনি প্রশ্ন করেন, ‘শেষ বার অর্ডারে চিকিৎসকদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করতে বলা হয়েছিল। তার কী হল ?’

এখানে রাজ্য যে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে, তা পড়ে শোনান আইনজীবী কপিল সিব্বল। সেখানে রাত্তিরের সাথীতে সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগের কথা ওঠে । এতে আপত্তি জানিয়ে বেঞ্চ জানায়, আবার ডাক্তারদের নিরাপত্তায় চুক্তিভিত্তিক নিরাপত্তাকর্মী কেন ? সঞ্জয় রায়ও তো একজন সিভিক ভলান্টিয়ার ছিলেন । তাঁদের হাত থেকে মহিলা চিকিৎসকদের সুরক্ষা দেবে কে ?

প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় উল্লেখ করেন, ‘রাজ্যের ৪৫টি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যে মহিলা চিকিৎসকরা কাজ করেন, তাঁরা সদ্য দ্বাদশ শ্রেণি পাশ করেছেন । তাঁদের বয়স খুব কম। এই কথাটা আপনাকে মাথায় রাখতে হবে। পুলিশদেরই নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকতে হবে ।’ সিভিক ভলান্টিয়ারের তত্ত্ব খারিজ করে দেয় শীর্ষ আদালত। আরজি কর হাসপাতালে বর্তমানে 36-37টি সিসি ক্যামেরা আছে শুনে অবাক হয়ে যান দেশের প্রধান বিচারপতি । আইনজীবী কপিল সিব্বল জানান, সরকার হাসপাতালে আরও 415টি সিসি ক্যামেরা লাগানোর ছাড়পত্র দিয়েছে । 7-14 দিনের মধ্যে এই সিসি ক্যামেরা লাগানোর কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে আশ্বস্ত করেন রাজ্যের আইনজীবী ।

মহিলা চিকিৎসকদের রাতের শিফট

হাসপাতালে নিরাপত্তার ব্যবস্থার সমাধানে রাজ্য সরকার একটি নির্দেশিকায় জানায়, মহিলা চিকিৎসকরা রাতে কাজ করবেন না। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এতে প্রশ্ন করেন, কেন ? তাঁরা যে কোনও পরিস্থিতিতে কাজ করতে প্রস্তুত। 12 ঘণ্টার বেশি কাজ করবেন না, বা রাতে কাজ করা যাবে না, তাঁরা এমনটা চান না । মহিলারা সমানাধিকার চান ।

রাজ্য সরকারকে তার জন্য নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করতে হবে । সেনাবাহিনী এবং অন্য অনেক ক্ষেত্রেই মহিলারা সারারাত কাজ করেন । এখানে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা জানান, রাজ্য সরকার সুরক্ষা দিতে না-পারলে কেন্দ্রীয় সরকার তা করবে । তখন রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বল অবশ্য নতুন নির্দেশিকা জারির কথা জানান ।

সেমিনার হলে কারা ছিলেন ?

9 অগস্ট আরজি কর হাসপাতালের 4 তলার সেমিনার হলে তরুণী পড়ুয়া-চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয় । ছাত্রদের অভিযোগ, সেদিন ঘটনাস্থলে অনেকে হাজির ছিলেন, যাঁদের বেশির ভাগই ডাক্তার । এর কারণ নিয়েও প্রশ্ন ওঠে । এই বিষয়টি শীর্ষ আদালতে উত্থাপন করেন আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিংহ । তিনি জানান, 9 অগস্ট অপরাধস্থলে যাঁরা উপস্থিত ছিলেন, তাঁদের নাম একটি মুখবন্ধ খামে সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেবেন ।

আরজি করের নির্যাতিতার বাবার লেখা একটি চিঠির বিষয়ে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় জানান, ওই চিঠিতে পড়ুয়া-চিকিৎসকের বাবা তদন্ত সংক্রান্ত কতগুলি নির্দিষ্ট বিষয়ের উল্লেখ করেছেন। সিবিআই-এর সেগুলি খতিয়ে দেখা উচিত ।

সিসি ফুটেজ

ধোঁয়াশা তৈরি হয় কলকাতা পুলিশের সিবিআই-কে দেওয়া সিসি ফুটেজ নিয়েও । কলকাতা পুলিশ সব সিসি ফুটেজ সিবিআই-কে দেয়নি বলে অভিযোগ ওঠে আদালত কক্ষে । এই অবস্থায় দেশের প্রধান বিচারপতি সিবিআই-এর পক্ষে সলিসিটির জেনারেল তুষার মেহতাকে নির্দেশ দেন, তিনি যেন কলকাতা পুলিশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তলব করে এর সমাধান করে নেন ।

এদিন শুনানি চলাকালীন এক আইনজীবী হঠাৎ মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইস্তফার দাবি তোলেন। আদালত তাঁকে ভর্ৎসনা করে স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, এটা কোনও রাজনৈতিক মঞ্চ নয় । সব মিলিয়ে এদিন শীর্ষ আদালত এই তদন্তের জন্য সিবিআই-কে সময় দেওয়ার কথা জানিয়েছে । কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার পেশ করা স্টেটাস রিপোর্ট দেখে বেঞ্চ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ।

Last Updated : Sep 17, 2024, 8:04 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.