কলকাতা, 21 নভেম্বর: বিশ্ব শিশু দিবসে অভিনব উদ্যোগ নেয় ইউনিসেফ ৷ একদিনের জন্য সংস্থার প্রধানের দায়িত্ব সামলাল বিশেষভাবে সক্ষম নাবালিকা ছাত্রী ৷ পশ্চিমবঙ্গে ইউনিসেফের প্রধানের চেয়ারে বসেই ওই ছাত্রী দাবি জানাল, আন্তর্জাতিক সংস্থাটির সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়াতে শিশুদের মতামতও যেন নেওয়া হয় ৷
সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, দক্ষিণ 24 পরগনা জেলার বিষ্ণুপুর-2 ব্লকের বিদ্যানগর গ্রামের বাসিন্দা রিয়া সরদার ৷ সে বুধবার একদিনের জন্য ইউনিসেফ প্রধানের ভূমিকা পালন করে ৷ চেয়ারে বসে সে সিদ্ধান্ত নেয়, রাষ্ট্রসংঘের এই সংস্থার কর্মকর্তারা বছরে একবার শিশুদের সঙ্গে দেখা করবেন এবং শিশুদের উন্নয়ন কর্মসূচির পরিকল্পনা করার সময় তাদেরও মতামত অন্তর্ভুক্ত করা হবে ।
বিশ্ব শিশু দিবসে ইউনিসেফের 'কিডস টেকওভার' কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিদ্যানগর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির এই ছাত্রী পশ্চিমবঙ্গে ইউনিসেফের প্রধান মঞ্জুর হোসেনের চেয়ারে বসে ৷ রিয়ার হাঁটতে অসুবিধা হয় এবং ঘোরাঘুরি করার জন্য হুইলচেয়ার ব্যবহার করতে হয় তাকে । সেই বিশেষভাবে সক্ষম ছাত্রী ইউনিসেফের প্রধানের চেয়ারে বসে কম্পিউটার চালাল ৷ এমনকি শিশুদের মতামত নেওয়ার বিষয়টির কথা ইমেল করে কলকাতায় ইউনিসেফের সমস্ত কর্মকর্তাদের কাছে পাঠিয়েছে সে ৷
এ বিষয়ে রিয়া বলে, "আমার বাবা শিক্ষকদের অনুরোধ করার পরেই এখন আমাদের স্কুলের নিচুতলায় ক্লাস করা হচ্ছে । কারণ বিল্ডিংয়ের উপরের তলায় উঠতে আমার অসুবিধা হত ৷ আমি চাই আর কোনও বিশেষভাবে সক্ষম শিশু যেন স্কুলে বা অন্যান্য জায়গায় আমার মতো সমস্যার সম্মুখীন না হয় ৷"
পশ্চিমবঙ্গে ইউনিসেফের প্রধান মঞ্জুর হোসেন অন্যান্য আধিকারিকদের বলেন, "আমাদের কাজে শিশুদের মতামত অন্তর্ভুক্ত করতে হবে ৷ এই ধরনের উদ্যোগ আমাদের অন্তর্ভুক্তিমূলক সিদ্ধান্ত গ্রহণ নিশ্চিত করতে এবং তাদের অধিকারগুলি উপলব্ধি করতে, তাদের সমস্যা ও মন বুঝতে সাহায্য করবে ৷"
এর পাশাাপাশি বিশ্ব শিশু দিবস উপলক্ষে নীল রঙে সেজে ওঠে হাওড়া ব্রিজ (রবীন্দ্র সেতু), বিধানসভা ভবন (অ্যাসেম্বলি বিল্ডিং) এবং প্রেস ক্লাব কলকাতার মতো বিখ্যাত স্থানগুলি ৷ ইউনিসেফ জানিয়েছে, নীল এই আলোকসজ্জার উদ্দেশ্য হল, মানুষের মধ্যে শিশুদের অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা ৷