বালুরঘাট, 12 মে: নারী তুমি অর্ধেক আকাশ...! হোক না বিশেষভাবে সক্ষম । মানসিক জোরের কাছে হার মানে সবকিছু ৷ 80 শতাংশ বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন বালুরঘাটের কামারপাড়ার বাসিন্দা পায়েল পাল ৷ জন্ম থেকেই শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন তিনি । পায়েল বড় হলেও দেখতে ছোট্ট শিশুর মতই । কোমরের নীচ থেকে কার্যত অসার তাঁর । হাঁটাচলা তো দূর অস্ত সরু ও রুগ্ন হাত দিয়েও ভারী কোনও কাজ করতে পারেন না পায়েল । স্নান করা, চলাফেরা থেকে খাবার সবকিছুর জন্য মায়ের উপর নির্ভরশীল । তবে শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে এবারের উচ্চমাধ্যমিকে অভাবনীয় ফল করেছেন এই পড়ুয়া ৷ পায়েলের প্রাপ্ত নম্বর 460 ।
পায়েলের বাবা দিগেন পাল পেশায় দর্জি । কোনও রকমে মাটির বাড়িতে তাঁর সংসার ৷ পাননি বাড়ি তৈরির সরকারি সাহায্য । সরকারি সাহায্য বলতে কেবল 80 শতাংশ বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মেয়ে পায়েল পালের জন্য পান ভাতা । বাবার এই আর্থিক অবস্থাতেও পায়েলের রয়েছে প্রচণ্ড মনের জোর । শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে দূরে সরিয়ে তাই পড়াশোনার মাধ্যমে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চান তিনি । মায়ের কোলে চেপেই স্কুল থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে গিয়েছিলেন পায়েল । উচ্চমাধ্যমিকের ফল প্রকাশের পর পায়েল তাক লাগিয়ে দেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাবাসীকে । এবারের উচ্চমাধ্যমিকে 92 শতাংশ নম্বর পেয়েছেন তিনি ৷
পায়েল পাল বলেন, "এই রেজাল্টে আমি খুশি । নিজের মনের জোরে এতদূর এগিয়েছি । ভবিষ্যতে ব্যাংক কর্মী হতে চাই । তবে বর্তমানে ভূগোল নিয়ে স্নাতকোত্তর পড়তে চাই । কলেজের পাশে থাকার ব্যবস্থা ও সরকারি সাহায্য পেলে উপকৃত হবে ৷" মেয়ের সাফল্যে আনন্দিত হলেও পায়েলের উচ্চশিক্ষার ব্যয়ভার কোথা থেকে আসবে এবং মেয়েকে কলেজে নিয়ে যাবেন কী করে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় তাঁর বাবা মা । কারণ মেয়ের চিকিৎসা করাতে গিয়েই ঋণে জর্জরিত হয়ে রয়েছে ওই পরিবার । এখন মেয়ের ভালো কলেজে পড়াশোনার খরচ চালাবেন কীভাবে, তা নিয়েই রাতের ঘুম ছুটেছে তাঁদের । এমন পরিস্থিতিতে সরকারি সহযোগিতার আবেদন জানিয়েছেন পায়েলের বাবা দিগেন পাল ।
আরও পড়ুন: