কলকাতা,23 ফেব্রুয়ারি: শাহজাহান শেখের আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করল নগর দায়রা আদালতের বিশেষ সিবিআই আদালত। সন্দেশখালির এই পলাতক তৃণমূল নেতাকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন আছে বলে মনে করছে আদালত। শুনানির সময় শুক্রবার ইডির আইনজীবী আদালতে দাবি করেন, নিজের এলাকায় শাহজাহানের বিরাট প্রভাব রয়েছে। কয়েক মিনিটের মধ্যেই হাজার লোককে জড়ো করে ফেলার ক্ষমতা রাখে এই শাসক নেতা। তাই তাকে জামিন দিলে তদন্ত প্রভাবিত হতে পারে। পাশাপাশি বিচারক প্রশান্ত মুখার্জির এজলাসে ডেপুটি সলিসিটর জেনারেল ধীরজ ত্রিবেদী দাবি করেন, রাজ্য প্রশাসন সাহায্য করছে বলেই শাহজাহানকে গ্রেফতার করা যাচ্ছে না।
নিজের দাবির পক্ষে যুক্তি দিতে গিয়ে ইডির আইনজীবী 5 জানুয়ারি যে ঘটনার কথা উল্লেখ করেন। তাঁর দাবি, যেদিন ইডির অফিসাররা শাহজাহানের বাড়ি গিয়েছিলেন সেদিন ভিতরে ঢুকতে পারেনি কারণ সেখানে বহু লোক তাঁদের পথ আটকায়। শুধু তাই নয়, ইডির আধিকারিকদের আক্রমণ পর্যন্ত করা হয়। তাতে তিন আধিকারিক আহত হন। পাশাপাশি শাহজাহানের বাড়ির রক্ষক ইডি আধিকারিকদের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ তোলেন। এদের এত দাপট যে 15 মিনিটের মধ্যে বহু লোক জমা হয়ে যায়। ঘটনায় তিনটি এফআইআর দায়ের হয়েছে। একইসঙ্গে ইডির আইনজীবীর প্রশ্ন দোষ না করে থাকলে শাহজাহান কেন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন ?
এছাড়া ও ইডির তরফে বলা হয়, শাহজাহান রাজনৈতিক পদে রয়েছে। সে অনেকেরই 'ব্লু আয়েড বয়'। তাঁর নামে অপরাধের পুরোনো রেকর্ডও রয়েছে। খুনের ধারাতে মামলার পরেও গ্রেফতার হননি শাহজাহান। একইসঙ্গে সরকারি দফতরে হামলার ঘটনাতেও শাহজাহানের সরাসরি যুক্ত। এই মামলায় পুলিশের তরফে তাকে ফেরার ঘোষণা করেছে। এমতাবস্থায় তার জামিনের আবেদন মঞ্জুর করা যায় না।
অন্যদিকে শেখ শাহজাহানের আইনজীবীরা সব্যসাচী ব্যানার্জি বলেন, " তার বাড়ি টার্গেট করা হয়েছে। এটা দেখে সেখানে লোকাল লোকজন এসে বিষয়টা আটকাতে যায়। রড, ঝাঁটা নিয়ে বাড়ির মহিলারা ছুটে আসেন। কোনও বন্দুক বা বোম কিছু ছিল না ওঁদের সাথে। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে ইডি নিজের মতো করে গল্প বানাচ্ছে। আইনের কথা ভাবা হোক। সে সময় যারা এসেছিলো তারা খারাপ আর এখন যারা ভিড় করে শাহজাহানের সমালোচনা করছে তারা ভালো-এটা হতে পারে না।
এছাড়া আইনজীবীর আরও দাবি শাহজাহানকে আইনের ধারা অনুসারে পলাতক বলা যায় না। আাগাম জামিন পেলে তিনি তদন্তে সাহায্য করবেন। আরও বলা হয়, গ্রেফতার করা হবে না এই আশ্বাস দিলে শাহজাহান নিজেই এসে তার বিরুদ্ধে যা যা অভিযোগ আছে তার উত্তর দেবেন। দু'পক্ষের বক্তব্য শোনার পর শাহজাহানের জামিনের আবেদন খারিজ করে দেয় বিশেষ সিবিআই আদালত।
আরও পড়ুন: