বসিরহাট, 23 এপ্রিল: ইডি হেফাজতে থাকা শেখ শাহজাহানকে মঙ্গলবার এক অন্য রূপে দেখল বসিরহাটের মানুষ। বসিরহাট আদালতের বাইরে প্রিজন ভ্যানে বসে মেয়ের 'আব্বু' ডাক শুনে এবং স্ত্রীর কান্না শুনে চোখের জল ধরে রাখতে পারল না একদা 'সন্দেশখালির বাঘ'! মুখ ঘুরিয়ে নিজের কান্না মুছল আঙুল দিয়ে। তারপর হাত দিয়ে মুখ ঢাকল। প্রিজন ভ্যানের জানালা দিয়ে স্ত্রী'র আঙুল ছুঁয়ে শাহজাহান কেঁদেই ফেলল। বলল,"আল্লার কাছে দোয়া করো।"
সন্দেশখালিকাণ্ডে ধৃত শাহজাহান,আলমগির,শিবু,মাফুজার মোল্লা,জিয়াউদ্দিন,দিদার-সহ মোট 12 জনকে এদিন দুপুরে বসিরহাট মহকুমা আদালতে পেশ করা হয় ইডির তরফে। কিন্তু,আদালতের এক করণিকের মৃত্যুতে শুনানি প্রক্রিয়া হয়নি। আবার 7 মে শাহজাহানদের আদালতে আনা হবে। সাসপেন্ড হওয়া তৃণমূল নেতাকে যখন আবার প্রিজ়ন ভ্যানে তোলা হচ্ছে তখন কয়েক মিটার দূর থেকে ‘আব্বু’ ডাক শুনে মুখ ফেরায় সে। মেয়ের দিকে তাকিয়ে মাথা নেড়ে ‘হ্যাঁ’ বা ‘ঠিক আছি’ বুঝিয়ে মুখ ফিরিয়ে নেয়।
ততক্ষণে ভ্যানের একেবারে পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছেন শাহজাহানের স্ত্রী তসলিমা বিবি। তদন্তকারীদের তলবে যিনি ইতিমধ্যে একাধিক বার হাজিরা দিয়েছেন। স্ত্রীকে দেখে জানলার দিকে আবারও ফিরল শাহজাহান । আকাশি রঙের জামা ও ট্রাউজ়ার্স পরা থমথমে মুখে স্ত্রীকে ধীরে ধীরে বলল, "নিজের খেয়াল রাখবে।’’ প্রিজ়ন ভ্যানের জানলার কাছে তখন শাহজাহানের স্ত্রী-কন্যা সহ পরিবারের অন্যরাও এসে দাঁড়িয়েছেন। কেউ শাহজাহানকে বলছেন, শরীরের যত্ন নিতে। আবার কেউ বলছেন, সময় মতো ওষুধ খেতে । এরই মধ্যে স্ত্রীর আঙুল ছুঁল সে ভ্যানের জানলার রেলিংয়ের ফাঁক দিয়ে। ঠিক তখনই স্ত্রীর কান্না দেখে আর নিজেকে ধরে রাখতে পারল না শাহজাহান। 'আল্লার কাছে দোয়া কোরো’ বলে মুখ ঘুরিয়ে নিল। লুকিয়ে চোখ মুছল।
আরও পড়ুন: